কয়েক জন মহিলা ওই ব্যক্তির আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে পালাতে পেরেছেন (প্রতীকী চিত্র)
হাইলাইটস
- বর্ধমান জেলা থেকে এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
- বাড়িতে একা থাকা মধ্যবয়স্কা মহিলাদের বেছে বেছে খুন করত সে।
- পাঁচ মহিলাকে হত্যা করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।।
কালনা (পশ্চিমবঙ্গ): বাড়িতে একা থাকা মধ্যবয়স্কা মহিলাদের বেছে বেছে খুন করত সে। অবশেষে মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গে পূর্ব বর্ধমান (Burdwan) জেলা থেকে সেই সিরিয়াল কিলারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার নাম কামারুজ্জামান সরকার। বাতিল জিনিসের ছোটখাটো ব্যবসা করত সে। পাঁচজন মহিলাকে হত্যা এবং কয়েকজনকে আহত করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। পুলিশে জানিয়েছে, কেবল পূর্ব বর্ধমান নয়, হুগলিতেও হামলা চালিয়েছে সে। ৪২ বছরের ওই অভিযুক্ত কেতাদুরস্ত পোশাক পরে দুপুরের দিকে মিটার দেখার অজুহাতে বাড়িতে ঢুকে পড়ত। তারপরই সেই বাড়িতে একা থাকা মহিলার উপরে লোহার রড, সাইকেলের চেন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপারিটেন্ডেন্ট ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গত ২১ মে গোয়ারা গ্রামের পুতুল মাঝিকে হত্যার অভিযোগে সোমবার জেলা আদালত অভিযুক্তকে ১২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
সাবধান! এই ব্রিজ শুধুই সাহসীদের....
তিনি বলেন, পুলিশ অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়েছে। বাকি চারটি খুনের ব্যাপারেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই খুনের পদ্ধতি বলেও জানান তিনি।
কয়েক জন মহিলা ওই ব্যক্তির আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে পালাতে পেরেছেন। তাঁদের উপরেও চেন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে আঘাতে উদ্যত হয়েছিল অভিযুক্ত। মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করতে চেয়েছিল।
জোড়া টর্নেডোয় বেসামাল শহর! দেখুন ঝড়ের তাণ্ডব
শ্রী মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছে, ‘‘কখনও কখনও খুন করে পালানোর সময় বাড়ি থেকে জিনিস নিয়ে পালালেও চুরি করাটা কিন্তু মোটিভ ছিল না। ওর আসল লক্ষ্যই ছিল মহিলাদের হত্যা করা।''
পুলিশ জানিয়েছে, কোনও কোনও আক্রান্তের গোপনাঙ্গে ধারালো ধাতব বস্তু ঢুকিয়ে দিয়েছিল অভিযুক্ত।
শ্রী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা জেরা করতে বের করার চেষ্টা করছি কেন মধ্যবয়স্ক মহিলাদেরও ও আক্রমণ করত।''
অভিযুক্ত কামারুজ্জামান বিবাহিত। তার তিনটি সন্তানও রয়েছে। হয়তো মহিলাদের প্রতি কোনও ব্যক্তিগত কারণে প্রতিহিংসার কারণে নির্দিষ্ট বয়সের মহিলাদের আক্রমণ করত সে। সেটা খুঁজে বের করতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান এক পুলিশ আধিকারিক।
রবিবার কালনা থেকে লাল মোটর বাইক ও লাল হেলমেট সহ কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে সন্দেহবশত তার পথ আটকায় সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার।
পুতুল মাঝির হত্যার তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানতে পারে সম্ভাব্য অপরাধী লাল হেলমেট পরে লাল মোটরবাইক চড়ে ঘুরছে। সেই সিসিটিভি ফুটেজ সমস্ত পুলিশ স্টেশনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, কামারুজ্জামানের উপরে ২৭ জানুয়ারি পুষ্পা দাসকে খুন করারও অভিযোগ রয়েছে। এরপর ৪ এপ্রিল রীতা রায় ও মমতা কিস্কু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খুন হয়। মেমারি পুলিশ স্টেশন এলাকাতেই ওই দু'টি ঘটনা ঘটে। এছাড়াও মেমারিরই সোনি যাদহ নামের একজনকে একই ভাবে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
রংপাড়ার স্বরূপা বিবি সেই ভাগ্যবানদের একজন, যিনি অভিযুক্তর হাতে খুন হতে হতেও বেঁচে যান। তাঁর বক্তব্য, তাঁকে পিছন থেকে সাইকেল চেন হাতে আক্রমণ করে অভিযুক্ত। সকিন্তু তিনি তাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে অ্যালার্ম বাজিয়ে দেন।