সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের সময় ‘দিদি'র ঘনিষ্ঠই ছিলেন মুকুল রায়। সময়ের পালাবদলে আজ তিনিই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির নেতা। শনিবার সিঙ্গুরের সাড়া জাগানো কৃষক আন্দোলনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভুল সিদ্ধান্ত' বলে মন্তব্য করলেন তিনি। বিজেপি নেতা মুকুলের কথায় তৃণমূল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ওই আন্দোলন তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনলেও রাজ্যে না তো তা শিল্পের সহায়ক হয়, না তো কৃষির।
উত্তর ২৪ পরগনায় বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে মৃত ৩
বিজেপির কৃষক শাখা বা কিষাণ মোর্চা শীঘ্রই সিঙ্গুরে একটি গণ সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করেছে। প্রসঙ্গত ২০০৬ ও ২০০৭ সালে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলন রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে টালমাটাল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। তৎকালীন শাসকদল বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক বিক্ষোভ জাগাতে সক্ষম হয়েছিল সেই সময়ের প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল। এই আন্দোলনের জেরেই টাটা তাঁদের ন্যানো তৈরির কারখানা রাজ্যের বাইরে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হয়।
বিজেপির নেতা মুকুল রায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুর আন্দোলন মস্ত বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল এবং সম্পূর্ণরূপেই তা ভ্রান্ত ছিল। এর ফলে ওখানে না তো শিল্প হল, না তো কৃষি! কৃষকরা এখন ওখানে ভুক্তভোগী। ওই জমি আর কৃষির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমি তখন তৃণমূলেরই অংশ ছিলাম। কিন্তু আমি মনে করি আন্দোলনটা ভুল ছিল!”
১৭ কাউন্সিলরের দলবদল, দার্জিলিং পৌরসভার দখল নিল বিজেপি
মুকুল রায়ের এহেন দাবির প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য তাঁকে নিপাট ‘সুবিধাবাদী' হিসেবেই মনে করছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখন, তিনি (মুকুল রায়) মনে করছেন আন্দোলন করাটা ভুল ছিল। পুরোটাই আসলে তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। তিনি একজন সুবিধাবাদী, কৃষকদের ঐতিহাসিক ভূমি অধিগ্রহণ আন্দোলনকে তিনি অপমান করার চেষ্টা করছেন।”
হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে সিঙ্গুরের এই আন্দোলন রাজ্য রাজনীতির ভোল বদলে দিয়েছিল। ৩৪ বছর ধরে চলে রাজ্যের বাম শাসন মুখ থুবড়ে পড়ে এই আন্দোলনের জেরে! রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী লকেট চ্যাটার্জী হুগলির কেন্দ্র থেকে জিতেছেন।