সেপ্টেম্বর মাসে এই উদ্যোগটি চালু হওয়ার পর, হিসেব করে দেখা গিয়েছে প্রতি মাসে গ্রাহকেরা প্রায় ১৫০০০ বোতল ভাঙেন
বেজিং: প্রচণ্ড রাগ হলে বাড়ির জিনিস ভাঙেন? বোতল ছুঁড়ে ফেলেন, অথবা বালতি? বাদ যায় না নিরীহ পেন বা মোবাইলও? আপনার জন্য তাহলে মন ভালো করা খবর হল, জিনিস বা আসবাব ভেঙে রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে আস্ত একটি সংস্থাই রয়েছে বেজিং শহরে। ইস্কুলে মারামারি? প্রেমিক বা প্রেমিকার উপর রাগ? বসের উপর তীব্র বিরক্তি? সব রাগের মুক্তি ঘটাতে এখানে প্রাণ খুলে যা খুশি ভাঙচুর করতে পারেন আপনি। টিভি, অডিও স্পিকার, প্রেসার কুকার, বোতল এবং এমনকি ম্যানিকুইনও ভাঙতে পারেন।
বেজিংয়ের ‘অ্যাঙ্গার রুমে' এ বেশ কিছু টাকা খসালেই নিশ্চিন্তে যা খুশি ভেঙে রাগে ঝেড়ে ফেলতে পারার অনুমতি রয়েছে। আপনাকে কেবল জিনিস ভাঙার সময় প্রতিরক্ষামূলক পোশাক ও হেলমেট পরে নিতে হবে, তারপর হাতুড়ি দিয়ে, ব্যাট দিয়ে যা খুশি দুমাদ্দুম ভেঙে ফেলুন। আপনার রাগ বা হতাশা প্রকাশের সময় এই অ্যাঙ্গার রুমের মালিকরা বেশ পছন্দসই মিউজিকও চালিয়ে দেবেন।
১৬ বছর বয়সী হাইস্কুল ছাত্রী কিউ যেমন স্কুল নিয়ে নানা রাগ বের করতেই এই 'স্ম্যাশ' সংস্থায় এসেছিলেন।
স্ম্যাশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বলেন, আমাদের লক্ষ্য বেজিংয়ের মতো বড় শহরে বসবাসের মানসিক চাপ মোকাবিলায় মানুষকে সাহায্য করা
কিউ বেশ মিষ্টি হেসে বলেন, “যখন আমি বোতলগুলো ভাঙি, ওগুলো টুকরো হতে দেখি, ফেটে যেতে দেখি আমার ভীষণ আরাম বোধ হয়, খুব ভালো লাগে।"
সেপ্টেম্বর মাসে এই উদ্যোগটি চালু হওয়ার পর, হিসেব করে দেখা গিয়েছে প্রতি মাসে গ্রাহকেরা প্রায় ১৫০০০ বোতল ভাঙেন। ২৫ বছর বয়সী জিন মেং তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে মিলে ‘স্ম্যাশ' প্রতিষ্ঠা করেন। জিন জানান, হিংসা প্রচারের উদ্দেশ্যে নয় আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বেজিংয়ের মতো বড় শহরগুলিতে বসবাসের মানসিক চাপ মোকাবিলায় মানুষকে সাহায্য করা।
আরেকজন গ্রাহক, বছর ৩২-এর লিউ চাও রাগ প্রকাশের এই সেশনের পর বেশ দিলখুশ এবং নিশ্চিন্ত বোধ করছিলেন। লিউ বলেন, "যদি আপনার টাকা থাকে তবে আপনি সব কিছু ধ্বংস করতে পারেন - টিভি, কম্পিউটার, ওয়াইন বোতল, আসবাবপত্র, ম্যানিকুইন ভাঙতে পারেন, কিন্তু একমাত্র কোনও মানুষকেই আপনি এখানে আহত করতে পারবেন না।” অনুরূপ উদ্যোগ ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য দেশেও বিদ্যমান।
মোনালিসা কি আপনার দিকেই তাকিয়ে? জার্মান গবেষকরা জানালেন ছবির আসল সত্য
জিন জানান, প্রতি মাসে প্রায় ৬০০ জন মানুষ এখানে আসেন তাঁদের রাগ বের করতে। জিন বলেন, “এক মহিলা একবার এখানে এসেছিলেন তাঁর বিয়ের সব ছবি নিয়ে। সব ছবি এখানে এনে তিনি ছিঁড়ে নষ্ট করে দেন। কেউ যদি নিজে বাড়ি থেকে কোনও জিনিস এনে রাগ বের করতে চান আমাদের তাতে কোনও আপত্তি নেই।”
বেজিংয়ের ‘অ্যাঙ্গার রুমে' যারা আসেন তাঁদের অধিকাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। জিনের কথায়, “প্রত্যেকবার যখন মানুষ এখানে আসেন, জিনিস ভাঙেন তাঁরা আমাদের এই বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করে তোলেন যে, আমরা নেতিবাচক শক্তির বহিঃপ্রকাশের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা তাঁদের সরবরাহ করি এবং আমরা এর জন্য সত্যিই খুব খুশি।"
পিরিয়ড নিয়ে সংস্কার কাটাতে স্যানিটারি প্যাডের দীর্ঘ লাইন গড়ে গিনেস রেকর্ড
জিন আরও জানান, তাঁর পরবর্তী পরিকল্পনা হল একটি শপিং মলে এরকম একটি নতুন ‘অ্যাঙ্গার রুম' খোলার। যেখানে লোকজন তাঁদের কেনাকাটা থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে একটি বা দুটি বোতল ভাঙতে পারে।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)