Solar Eclipse 2019: ভারতে সূর্যগ্রহণের সর্বোচ্চ সময়কাল ৩ মিনিটের বেশি স্থায়ী হবে না
হাইলাইটস
- বৃবস্পতিবার চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ছে সূর্য
- দশকের শেষ সূর্যগ্রহণ এটি, দেখা যাবে ভারত থেকেও
- তবে সূর্য গ্রহণ দেখতে হলে নিতে হবে প্রাথমিক সতর্কতাও
নয়া দিল্লি: "রিং অফ ফায়ার" বা "আগুনের আংটি" দেখেছেন কখনো ? যদি না দেখে থাকেন তাহলে আপনার জন্যে আজ (বৃহস্পতিবার) রয়েছে দুর্দান্ত সুযোগ। সকাল ৭.৫৯ মিনিট থেকে আকাশের দিক থেকে চোখ সরাবেন না, যে কোনও মুহূর্তে আপনিও প্রত্যক্ষ করতে পারেন জ্বলজ্বলে ওই "আগুনের আংটি" । আসলে আজই (বৃহস্পতিবার) দশকের শেষ সূর্যগ্রহণের সাক্ষী থাকতে চলেছে গোটা বিশ্ব, এই সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse) আংশিকভাবে প্রত্যক্ষ করা যাবে ভারত থেকেও। আসলে চাঁদের আড়াল থেকে সূর্য বলয়ের যে সামান্য জ্যোতি ঠিকরে বেরিয়ে আসবে তা দেখে আমার-আপনার-আমাদের সবারই মনে হতে পারে যে, আকাশে যেন একটা আগুনের আংটি দেখা যাচ্ছে, সে এক দুর্লভ দৃশ্য। বৃহস্পতিবারের সূর্যগ্রহণ প্রথম দেখা যাবে সৌদি আরবের রিয়াদে। আমাদের দেশের মানুষও সাক্ষী (Solar Eclipse in India) থাকতে পারবেন ওই আগুনের আংটির। ভারতে আংশিক সূর্যগ্রহণটি (Solar Eclipse 2019) দেখা যাবে কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, কেরালা, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লির বেশ কিছু অংশ থেকে।
বার্ষিক সূর্যগ্রহণটি সকাল ৯:০৪ (IST) থেকে দৃশ্যমান হবে। সর্বাধিক গ্রহণ অবস্থা হবে সকাল ১০.৪৭ মিনিটে এবং পূর্ণগ্রাস গ্রহণ প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়ামে দুপুর ১২:৩০ (IST) এ শেষ দেখা যাবে। যদিও ভারতে, বার্ষিক সূর্যগ্রহণের সর্বোচ্চ সময়কাল মাত্র ৩ মিনিট।
Surya Grahan 2019: সূর্যগ্রহণের সময় কী করবেন, কী করবেন না জেনে নিন
সূর্যগ্রহণের তিনটি প্রকারভেদ রয়েছে - সম্পূর্ণ, আংশিক এবং কৌণিক।
চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে এলেই সূর্যগ্রহণ হয়, চাঁদের কারণেই পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে যায়। সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদের আপাত ব্যাস সূর্যের চেয়ে ছোট হয় এবং সূর্যের বেশিরভাগ আলোকেই তা বাধা দেয়। এর ফলে সূর্যকে তখন চাঁদের আড়াল থেকে "আগুনের আংটি"-র মতো দেখায়।
বেশিরভাগ সময়েই বছরে দুটি সূর্যগ্রহণ হয়, তবে বিরল ক্ষেত্রে এক বছরে সাতবার সূর্যগ্রহণও হতে পারে।
ভৌগোলিক অবস্থানের উপর নির্ভর করে সূর্যগ্রহণের আংশিক পর্যায়গুলি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন মাত্রায় দৃশ্যমান হয়।
খালি চোখে নয়, সঠিক পদ্ধতি ছাড়া সূর্যগ্রহণ দেখা অত্যন্ত বিপজ্জনক: জ্যোতির্বিজ্ঞানী
সূর্যগ্রহণের সময়কালে দেশজুড়ে অনেক মন্দির যেমন কেরালার শবরীমালা মন্দির, অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুমালা তিরুপতি বালাজি মন্দির এবং মাদুরাইয়ের মীনাক্ষী মন্দির বন্ধ থাকবে এবং নিয়ম মতে সূর্যগ্রহণ শেষে বিভিন্ন শুদ্ধাচার অনুষ্ঠানের পরে মন্দিরগুলি আবার খোলা হবে।
তবে সূর্য গ্রহণ দেখার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করার কথা জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এক বর্ষীয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, সঠিক পদ্ধতি ও নিরাপদে গ্রহণ দেখার যন্ত্রপাতি ছাড়া গ্রহণ দেখতে গেলে অতি বেগুনি রশ্মি ও ইনফ্রারেড রশ্মির আঘাতে চোখের রেটিনায় বড়সড় সমস্যা তৈরি হতে পারে। এমপি বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের অন্তর্গত রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকাডেমি অফ এমপি বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি জানিয়েছেন, এক মুহূর্তের জন্যেও এ সময় সূর্যের দিকে খালি চোখে তাকানো উচিত নয়। তিনি এও বলেন, যদি গ্রহণে ৯৯ শতাংশ সূর্যকেও ঢেকে ফেলে চাঁদ, তাহলেও অবশিষ্ট রশ্মি চোখের ক্ষতি করার পক্ষে যথেষ্ট।
তিনি জানিয়েছেন, যথাযথ সোলার ফিল্টার যার তেজস্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে সঠিক অপটিক্যাল ঘনত্ব রয়েছে তা দিয়ে গ্রহণ দেখা যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, মোটা অ্যালুমিনিয়াম মিলার ফিল্ম এবং দৃশ্যমানতা যুক্ত কালো পলিমারও নিরাপদ। এগুলি গ্রহণ দেখার জন্যে তৈরি বিশেষ গগলসে থাকে বলে জানান তিনি।
ওয়েল্ডার্স গ্লাস নম্বর ১৪-ও সোলার ফিল্টার হিসেবে দারুণ কার্যকরী বলে জানান তিনি। তবে দেবীপ্রসাদ দুয়ারি জানিয়েছেন, পিনহোল ক্যামেরা অথবা টেলিস্কোপ প্রোজেকশনের মাধ্যমে সূর্যগ্রহণ দেখাই গ্রহণ দেখার সেরা উপায়। তিনি সতর্ক করে জানিয়েছেন, সানগ্লাস, স্মোক গ্লাস, কালার ফিল্ম দিয়ে গ্রহণ দেখা একেবারেই উচিত নয়। তাতে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
দেখে নিন এই ভিডিও: