রঘুমার রাজনের মতে, ভারতের উচিত মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্ত হওয়া।
New Delhi: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন (Raghuram Rajan) জানিয়েছেন, ভারত ‘‘বৃদ্ধির মন্দা''র মাঝখানে রয়েছে। এবং এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর (PM Modi) দফতরে (PMO) ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণকে দায়ী করেছেন। ‘ইন্ডিয়া টুডে'-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, মূলধন, জমি ও শ্রম বাজারের উদারীকরণের সংস্কার এবং বিনিয়োগ তথা বৃদ্ধিতে উদ্দীপনা ফিরিয়ে আনার জন্য। তিনি আরও জানান, ভারতের উচিত মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তিতে যুক্ত হওয়া। এতে প্রতিযোগিতা ও ঘরোয়া দক্ষতা বাড়বে। তিনি জানিয়েছেন, , ‘‘কোথায় সমস্যা হচ্ছে, তা বুঝতে আমাদের প্রথমেই শুরু করতে বর্তমান সরকারের কেন্দ্রীকরণের প্রবণতা থেকে। কেবল সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রেই নয়, নতুন কোনও আইডিয়া ও পরিকল্পনা সবই করছেন প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী দফতরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।''
তিনি জানাচ্ছেন, এতে দলটির রাজনৈতিক ও সোশ্যাল এজেন্ডার উপকার হচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংস্কারের তেমন উপকার হচ্ছে না। কী করে জাতীয় তথা রাজ্য স্তরে অর্থনীতি কাজ করে সে সম্পর্কে ঘরোয়া জ্ঞানের অভাব রয়েছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের ইন্টারনেট চালু করা ও বন্দিদের মুক্তি নিয়ে আমেরিকার আর্জি ভারতকে
পাশাপাশি তিনি জানাচ্ছেন, ক্ষমতার অতিকেন্দ্রীকরণ, ক্ষমতায়িত মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি এবং সুসংহত দৃষ্টিভঙ্গির অভাবের কারণে সংস্কারের প্রচেষ্টা কেবল তখনই হচ্ছে যখন প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাতে নজর দিচ্ছে।
তিনি তাঁর লেখায় আরও জানাচ্ছেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেছিল ‘‘ন্যূনতম সরকার, অধিকতর শাসন পরিচালনা'' এই স্লোগানে জোর দিয়ে। কিন্তু সেই স্লোগানকে ভুল বোঝা হয়েছে। যেটা বোঝানো হয়েছিল তা হল সরকার আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে। মানুষ ও বেসরকারি ক্ষেত্রকে আরও স্বাধীনতা দেওয়া হবে, সেকথা বলা হয়নি। সরকার জোর দিচ্ছে স্বশাসনের দিকে। সেক্ষেত্রে সরাসরি লভ্যাংশ তারা পাচ্ছে কি না সেটা দেখা দরকার। সরকারের ভূমিকা বহু ক্ষেত্রে প্রসারিত হচ্ছে সঙ্কুচিত হয়নি।
কেন্দ্র সরকার বাংলাকে পচা পেঁয়াজ জোগান দিচ্ছে: অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
রঘুরাম রাজনের মতে, অর্থনৈতিক মন্দার সব থেকে বড় কারণ হল মোদি সরকার সমস্যাটিকে মান্যতাই দিচ্ছে না। তাঁর বক্তব্য, সমস্যাটা না মেনে সমস্ত সমালোচককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দেগে দেওয়া উচিত হচ্ছে না। পাশাপাশি এই সমস্যাকে সাময়িক বলে মনে করা এবং খারাপ খবর ও অস্বস্তিকর সমীক্ষাকে চেপে দিলে এটা দূরীভূত হবে বলাটাই সঠিক পদক্ষেপ নয়।
গত জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের হিসেবে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশ। যা গত ছ'বছরের হিসেবে সর্বনিম্ন।
রঘুরাম রাজন আরও জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হওয়ার জন্য প্রতি বছর অন্তত ৮-৯ শতাংশ বৃদ্ধির হার হওয়া দরকার এখন থেকে। অন্যথায় ওই লক্ষ্যমাত্রাকে ক্রমশই আরও বেশি করে অবাস্তব বলে মনে হবে।