চন্দননগরের প্রাচীণ জগদ্ধাত্রী দেবী বুড়িমার আদলে গড়ে তোলা প্রতিমার অঙ্গে ডাকের সাজ।
কলকাতা: শহর কলকাতার পুজোর একটা মোটামুটি চিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বনেদিয়ানা উত্তরে, আর দক্ষিণে থিমের বাহার। সেই থিমের সমারোহে দক্ষিণের পুজোগুলির মধ্যে বনেদিয়ানার ছাপ ফেলেছে মহানায়ক উত্তম কুমারের স্মৃতি বিজড়িত লেডিস পার্ক ভবানীপুর মহাপুজো কমিটি। সর্বজনীন হলেও, এখানে রয়েছে বনেদিয়ানার ছোঁয়া। বনেদিবাড়ির ধাঁচে একচালার প্রতিমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মহিষাসুরসহ অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তি শোভা পেয়েছে। চন্দননগরের প্রাচীণ জগদ্ধাত্রী দেবী বুড়িমার আদলে গড়ে তোলা প্রতিমার অঙ্গে ডাকের সাজ। প্রিন্সেপ ঘাটের আদলে হয়েছে মণ্ডপসজ্জা। এবারে এই পুজো পা দিল ৭৫ বছরে। প্রথা মেনে অষ্টমীর দিনে এখানে সম্পন্ন হল কুমারি পুজো। কুমারির নাম মনসী বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথা মেনে অষ্টমীর দিনে এখানে সম্পন্ন হল কুমারি পুজো।
দক্ষিণ কলকাতার এই পুজোটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহানায়ক উত্তম কুমারের নাম। এটি মহানায়কের পাড়ার পুজো। যতদিন জীবিত ছিলেন এই পুজোমণ্ডপে আসতেন মহানায়ক উত্তম কুমার, পুষ্পাঞ্জলিও দিতেন এখানেই।
পুজোকে ঘিরে নানা আয়োজনেও এখানে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন উদ্যোক্তারা। অ্যাসিড আক্রন্ত এক মহিলা এবং গার্হস্থ্য হিংসার শিকার এক মহিলাকে আনা হয়েছে এই পুজো মণ্ডপে। তাঁদের সম্মাননা দেওয়া হয়। এই পুজোয় অন্যতম আরেকটি বিষয় হল, এখানে অষ্টমীর দিনটি শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য বরাদ্দ করা থাকে। এই দিন সন্ধ্যায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন ও অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় মাহিলারা। শাঁখ বাজানোর প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে হরেরকমের অনুষ্ঠানে মহাষ্টমীর ,সন্ধ্যা জমজমাট হয়ে ওঠে এখানে।
এখানে অষ্টমীর দিনটি শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য বরাদ্দ করা থাকে।
পুজোর চারদিনই নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন পুজো উদ্যোক্তারা। বাচ্চারা এবারে ইতিমধ্যেই কালমৃগয়া নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেছে, বড়দের জন্য এবারের আকর্ষণ ছিল মর্জিনা আব্দুল্লাহ। শুধুমাত্র আচার অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই নয়, থাকে ভুরিভোজের ব্যবস্থাও। অষ্টমীর দিন ছিল খিচুরি ভোগের ব্যবস্থা। সঙ্গে পাঁচরকমের ভাজা, সব্জি, চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি।
মহানায়কের স্মৃতি মাখা এই ক্লাবের পুজোটি দক্ষিণ কলকাতার পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। নানান অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়ায় জমজমাট হয় ওঠে পুজোমণ্ডপ।