শুধু সামাজিক সম্পর্ক নয় আর্থিক দিক থেকেও এই পরিবার ছিল যথেষ্ট সচ্ছল।
হাইলাইটস
- ইব্রাহিম পরিবারের যোগাযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে
- আর্থিক দিক থেকেও এই পরিবার ছিল যথেষ্ট সচ্ছল
- পরিবারের কর্তা মহম্মদ ইব্রাহিম শ্রীলঙ্কার অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী
কলম্বো: এতদিন কলম্বোর মাহাওয়েলা গার্ডেন্স এলাকার সাদা বাড়িটাকে সম্মান করত সবাই। পরিবারের সদস্যদেরও সামাজিক সম্মান ছিল, প্রতিপত্তি ছিল। কিন্তু রবিবারের ধারাবাহিক বিস্ফোরণের (Serial Blast In Sri Lanka) পর বদলে গিয়েছে সব। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে এই পরিবারই শ্রীলঙ্কার সবথেকে ভয়ানক জঙ্গিহানার মাস্টারমাইন্ড। যে হামলায় সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে তার নেপথ্যে ছিল এই ইব্রাহিম পরিবার। বাড়ির বেশিরভাগ সদস্যই মারা গিয়েছেন। পরিবারের কর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।ইস্টার সানডেতে হামলার পর দীর্ঘ সময় কোনও সংগঠন ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। দুদিন বাদে হামলার দায় নিয়েছে আইএসআইএস । তবে তার আগেই ইব্রাহিম পরিবারের যোগাযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল প্রশাসন।
শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৯! নয়জন আত্মঘাতী জঙ্গিদের একজন ছিল মহিলা
এই বাড়ির বড় ছেলে ইনসাফ ইব্রাহিমই কলম্বোর অন্যতম বিখ্যাত হোটেল সাংরিলাতে আঘাত হানে। প্রাতরাশের লাইনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে থাকা বোমা ফাটিয়ে দেয় ইনসাফ। মৃত্যু হয় বহু মানুষের। এরপর সেদিনই ইব্রাহিমদের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। বিপদ বুঝতে পেরে ইনসাফের ছোট ভাই ইলহাম একটি বোমা ফাটায়। তাতে মৃত্যু হয় তার। একই সঙ্গে তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানেরও প্রাণ যায়। শ্রীলঙ্কা পুলিশ সরকারিভাবে এ খবর জানায়নি। তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি বিশেষ সূত্র থেকে এই খবর জানতে পেরেছে।
পুলিশ যতই প্রমাণ করার চেষ্টা করুক না কেন স্থানীয়রা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে পরিবার আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে তারাই এমন একটা ভয়ানক কাজ করেছে। এই বাড়ির পাশেই থাকেন ফাতিমা ফাজলা নামে এক গৃহবধূ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ ওদের দেখে খুব ভাল মানুষ বলে মনে হত। ওরা যে কারও বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ত।'
শুধু সামাজিক সম্পর্ক নয় আর্থিক দিক থেকেও এই পরিবার ছিল যথেষ্ট সচ্ছল। পরিবারের কর্তা মহম্মদ ইব্রাহিম শ্রীলঙ্কার অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। এই মশলা ব্যবসায়ী প্রভাব সর্বজন বিদিত। একটি সূত্র বলছে দেশের ব্যবসায়ী মহল কীভাবে পরিচালিত হবে তা নির্ধারণ করতে ইব্রাহিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। তার কথা সকলেই শুনত এবং মানত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
স্থানীয়রা পুলিশকে জানিয়েছেন তিন কন্যা এবং ছয় পুত্রের বাবা ইব্রাহিম খাবার এবং টাকা দিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে থাকতেন। তবে এই ঘটনার পর তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলা সম্পর্কে সে কতটা কী জানে বা আদৌ কিছু জানে কিনা তা জানতেই তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বাবার পাশাপাশি দুই ছেলে ইনসাফ এবং ইলহামও নিজেদের কাজের জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত। ইনসাফের একটি ফ্যাক্টরি আছে।
সূত্র বলছে চরমপন্থায় বিশ্বাসী ইলহাম প্রকাশ্যেই নিজের মত প্রকাশ করত। শুধু তাই নয় এই হামলার সঙ্গে জড়িত এনটিজে সংগঠনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে ইলামের কয়েকবার দেখাও হয়েছে। অন্যদিকে কিছুটা উদারমনস্ক তবু কীভাবে সে এই হামলার সঙ্গে যুক্ত হল তা বুঝতে পারছে না প্রশাসন।