কলকাতা: কোভিড-১৯ রোগী কি আদৌ নিজের ঘরে কোয়ারান্টাইন থাকতে পারেন? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক গতকাল, সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল যে খুব হালকা বা প্রাক লক্ষণজনিত রোগী যাদের বাড়িতে স্ব-বিচ্ছিন্নতার সুবিধা রয়েছে তারা বাড়িতেই আলাদা থাকতে পারেন। সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, কোভিড রোগীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরাই কেবল নিজেদের বাড়িতে কোয়ারান্টাইনে থাকবেন। রোগীরা নয়। কেন্দ্রের এই গাইডলাইন নিয়ে বারেবারে মত পাল্টেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে, কোভিড-১৯-এর অত্যন্ত মৃদু লক্ষণ রয়েছে এমন রোগীদের যদি বাড়িতে আলাদা থাকার সুযোগ সুবিধা থাকে তবে তারা বাড়িতেই থাকতে পারেন। বাড়িতেই চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলা এবং তাঁদের কথামতো ওষুধ থাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা হাসপাতালে লক্ষ লক্ষ মানুষের থাকার ব্যবস্থা করতে পারি না।”
এই বিবৃতি নিয়ে তত্ক্ষণাৎ বিরোধী দলগুলির মধ্যে হইচই পড়ে যায়। বিরোধীরা বলতে থাকেন, পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছেন যে রাজ্যে কয়েক হাজার কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন।
যদিও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে উল্টে হাজির করে নয়া একটি আদেশ জারি করে যাতে দাবি করা হয়েছে এতে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকেই নাকি আরও স্পষ্ট করা তুলে ধরা হয়েছে।
ওই আদেশে বলা হয়েছে, “...কোভিড-১৯ ক্ষেত্রে প্রাথমিক বা গৌণ উপসর্গ রয়েছে এমন মানুষ ঘরেই থাকতে পারেন।” এখানে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে যে এটি কোভিড-১৯ পজিটিভদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবেই কোভিড-১৯ হাসপাতালে আনা হবে।
তবে শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আবারও আদেশ জারি করেছে যে, রাজ্য কোভিড-১৯ রোগীদের ঘরে থাকার বিষয়ে দেওয়া কেন্দ্রীয় নির্দেশিকাই অনুসরণ করবে।
ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “করোনা সন্দেহ রয়েছে অর্থাৎ যারা পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন, খুব হালকা বা প্রাক করোনা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এমন রোগীদের বাড়িতেই হোম কোয়ারেন্টাইন বা স্ব-বিচ্ছিন্নভাবে থাকতে হবে।"
যদিও কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য “বাড়িতে থাকুন” পরিকল্পনা বিষয়ে চিকিত্সক সংস্থা বা WHO-এর মতো স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কী বলছে তা জানা যায়নি।