শিক্ষাবিদদের মতে এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক। প্রতীকী চিত্র।
হাইলাইটস
- নিজের ধর্মের জায়গায় ‘মানবতা’ লেখার সুযোগ বাংলার কলেজে।
- সব মিলিয়ে অন্তত ৫০টি কলেজে এই নিয়ম চালু হয়েছে।
- একে অন্যন্ত প্রগতিশীল সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের (West bengal) অন্তত ৫০টি কলেজে, যার মধ্যে কয়েকটি কলকাতার কলেজও রয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির জন্য অনলাইন ফর্ম ফিল আপে ধর্মের (Religion) ক্ষেত্রে ‘মানবতা', ‘ধর্মনিরপেক্ষ', ‘অধর্মীয়' ইত্যাদি লেখার অপশন দেওয়া হয়েছে। স্নাতক স্তরের কোর্সে ভর্তির সময় যে কোনও ছাত্রছাত্রীকে তাঁর ব্যক্তিগত ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে স্বাধীন মতামত দেওয়ার সুযোগ করে দিতেই এই ব্যবস্থা, জানিয়েছেন শতাব্দী প্রাচীন বেথুন কলেজের এক আধিকারিক। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পিছনে ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে আসা বহু ছাত্রছাত্রীর নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় গোপন রাখতে চাওয়ার দাবির প্রভাব রয়েছে। ওই কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ করেছি অনেক আবেদনকারীই যেখানে ধর্ম উল্লেখ করার কথা, সেখানে নিজেদের ধর্মে অবিশ্বাসী হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে।'' তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে আসেন, ফর্মে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘মানবতা' শব্দটি রাখা হবে। প্রথমে অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে এমনটা করা হয়েছে।''
#StopHindiImposition কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির খসড়ার বিরুদ্ধে শুরু প্রতিবাদ
বেথুন ছাড়াও শহরের অন্যান্য কলেজ, যেমন স্কটিশ চার্চ কলেজ বা অন্য কলেজগুলি ‘অজ্ঞেয়বাদ', ‘ধর্মনিরপেক্ষ', ‘অধর্মীয়' ইত্যাদি লেখার অপশন দিচ্ছে বলে জানান উত্তর কলকাতার কলেজের এক আধিকারিক। এছাড়াও আরও যে সব কলকাতার কলেজে ‘মানবতা'র অপশন রয়েছে সেগুলি হল মৌলানা আজাদ কলেজ, রামমোহন কলেজ, বঙ্গবাসী মর্নিং। এছাড়া হাওড়ার আন্দুলের মহারাজা শ্রীশচন্দ্র কলেজ এবং মেদিনীপুরের মেদিনীপুর কলেজও এই অপশন দেওয়া হয়েছে। ‘‘এটা ঐতিহাসিক। কিন্তু আমাদের উচিত মানবধর্মকে অপশন হিসেবে রাখা।'' জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষাবিদ।
ভারতীয় দূতাবাসের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে আসা অতিথিদের ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দিলেন পাক আধিকারিকরা
এই আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে বেথুন কলেজের এক ইংরেজি অনার্সের ছাত্রী সাগরিকা সেন জানাচ্ছেন, ‘‘এটি একটি অত্যন্ত প্রগতিশীল পদক্ষেপ। আমি মনে করি এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। আমি জন্মগত ভাবে হিন্দু হলেও নিজের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করার আইডিয়াটি কোনওদিনই পছন্দ করিনি।'' আর এক ছাত্র সমময় সেনগুপ্ত, সমাজবিদ্যা নিয়ে পড়তে এসেছেন, তিনি এই সিদ্ধান্তকে যুগান্তকারী বলে মনে করছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি প্রগতিশীল প্রচেষ্টা। আমরা কোনও না কোনও ধর্মের অনুসারী বা বিশ্বাসী। কিন্তু সেটা আমাদের পরিচয় হতে পারে না। আমাদেপ পরিচয় হল মানবতাবাদ। এবং আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না, ধর্ম প্রত্যেকের নিজের পছন্দ।''