This Article is From Oct 29, 2019

পাতকুয়োয় ৩ দিন আটকে থাকার পর পচা গলা অবস্থায় বেরোল ২ বছরের শিশু সুজিথের দেহ

গতরাতে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, শিশুটিকে উদ্ধার করতে আরও ১২ ঘন্টা সময় লাগত। তবে পাতকুয়োর মধ্যে থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে দেখেই তাঁরা বুঝতে পারেন ছোট্ট প্রাণ শেষ।

Sujith Wilson Death: সুজিথ উইলসনের দেহটি পাতকুয়োর অভ্যন্তরে একেবারে পচে গলে গিয়েছে

নয়াদিল্লি:

প্রাণের লড়াইয়ে জেতা হল না ২ বছর বয়সী সুজিথের। পাতকুয়োর অতলে পড়ে ৪ দিন আটকে থাকার পরে মঙ্গলবার ভোরে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীর (Tamil Nadu's Tiruchirappalli) শিশু সুজিথ মারা গিয়েছে। সুজিথ উইলসনের (Sujith Wilson) দেহটি পাতকুয়োর অভ্যন্তরে একেবারে পচে গলে গিয়েছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল, কুয়োর ভিতরে লাশ দেখতে পাওয়ার পরেই খনন প্রক্রিয়াটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতরাতে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, শিশুটিকে উদ্ধার করতে আরও ১২ ঘন্টা সময় লাগত। তবে পাতকুয়োর মধ্যে থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে দেখেই তাঁরা বুঝতে পারেন ছোট্ট প্রাণ শেষ। কর্মকর্তারা পরে সুজিথ উইলসনের পচা গলা দেহটি কুয়োর ভিতর থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠান।

প্রেমিকের সঙ্গে মিলে মা'কে খুন করে তিন দিন বাড়িতেই রেখে দিল মেয়ে

পরিবহণ বিভাগের প্রধান সচিব এবং ত্রাণ কমিশনার জে রাধাকৃষ্ণান সাংবাদিকদের বলেন, “২ বছরের ছেলের মৃতদেহ পচাগলা অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা তাকে উদ্ধারের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি তবে দুর্ভাগ্যক্রমে যে পাতকুয়োতে শিশুটি পড়েছিল তা থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। খনন প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে।”

সুজিথ উইলসন শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিত্যক্ত ওই পাতকুয়োর কাছেই খেলছিল, খেলতে খেলতেই ভেতরে পড়ে যায় সে। উদ্ধারকারীরা ওই কুয়োর গর্তের সমান্তরালে আরেকটি টানেল খোঁড়েন এবং দমবন্ধ হয়ে যাওয়া আটকাতে সুজিথকে ভেতরে অক্সিজেনও পাঠানো হয়।

00h0u738

পাথুরে অঞ্চল এবং জটিল প্রক্রিয়ার কারণে সুজিথ উইলসনকে উদ্ধারের অভিযান ধীরগতি ছিল। (পিটিআই)

পাতকুয়োয় আটকে ৬০ ঘণ্টারও বেশি! দড়ি দিয়ে টানতে গিয়ে পিছলে আরও গভীরে ২ বছরের শিশু

প্রাথমিকভাবে সুজিথ ২৬ ফুট গভীরতায় আটকা পড়েছিল কিন্তু পরে উদ্ধারকারীরা তাকে দড়ি দিয়ে টানতে চেষ্টা করলে সে আরও পিছলে ৭০ ফুট গভীরে পড়ে যায়। উদ্ধারকারীদের দল শিশুটির কাছে পৌঁছানোর জন্য পাতকুয়োর সমান্তরালে এক মিটার প্রশস্ত আরেকটি সুড়ঙ্গ খোঁড়েন। তবে পাথুরে জমির কারণে কাজের অগ্রগতি খুবই ধীর গতি ছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, শিশুটি আরও ৯০ ফুট গভীরতায় যাতে পিছলে না যায় তা আটকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫ টা নাগাদ পাতকুয়োর কাছে খেলতে খেলতে সুজিথ পড়ে যায়। ওই গর্তটির গভীরতা সম্পর্কে অবশ্য নানা জনে নানা কথাই বলছেন। কারও কারও মতে এটি ৬০০ ফুট গভীর, আবার কেউ কেউ বলছেন এটি কমপক্ষে ১০০০ ফুট গভীর।

অনেকেই রাজ্য সরকারের ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর' পদ্ধতির সমালোচনা করে বলেছেন যে উদ্ধার অভিযান শুরুর নয় ঘন্টা পরে এনডিআরএফকে ডাকা হয়েছিল। ও পন্নীরসেলভাম অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা একটি উন্নতমানের রিগ স্থাপন করেছি যা এক ঘন্টার মধ্যে পাঁচ ফুট ড্রিল করতে পারে। তথ্য পাওয়ার এক ঘন্টা পরেই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিল।” সমালোচকরা বলছেন, এ জাতীয় ঘটনার জন্য কোনও স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন পদ্ধতি নেই এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার পাতকুয়োয় আটকা পড়া বাচ্চাদের উদ্ধারের জন্য কোনও প্রযুক্তিই তৈরি করেনি।

জাতীয় ও রাজ্য স্তরের রাজনৈতিক নেতারা সুজিথ উইলসনের উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগে বলেছিলেন, শিশুটি যে নিরাপদে রয়েছে তা নিশ্চিত করতে ‘সর্বাত্মক চেষ্টা' করা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কামাল হাসান এবং অভিনেতা রজনীকান্ত সকলেই এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

তামিলনাড়ুর মন্ত্রী সি বিজয়বাস্কর এবং ‘ভেল্লামণ্ডি' এন নাগারাজন অন্যান্য উর্ধ্বতন রাজ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজ পর্যবেক্ষণও করছিলেন।

.