কলকাতা: রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় অনেকটা স্বাভাবিক যানচলাচলের মুখ দেখল দক্ষিণপশ্চিম কলকাতা। মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার কারণে গত কয়েকদিন ধরেই ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি অংশ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেই কারণে ওই এলাকায় যান চলাচলের সমস্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। শুধু ওই এলাকায় নয়, ব্রিজ ভাঙার দুর্ঘটনার জেরে কলকাতার নানা অংশেই ট্রাফিকের সমস্যা দেখে দিয়েছে। তবে রবিবার সেই পরিস্থিতি অনেকখানি কমেছে বলেই দাবি ট্রাফিক পুলিশের। মঙ্গলবার ভেঙে পড়ে পঞ্চাশ বছর পুরনো মাঝেহাট ব্রিজ। যার জেরে দক্ষিণ 24 পরগণা জেলার এই শহরের দক্ষিণ পশ্চিম অংশ থেকে যাতায়াত করতে বা নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে এক থেকে আড়াই ঘণ্টা দেরি হয়ে যাচ্ছিল সাধারণ মানুষের।
এই দুর্ঘটনার পর যান চলাচলের সমস্যা এড়াতে 20 বা আরও বেশি চাকার ট্রাক শহরে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। শহরে ইতিমধ্যেই যে কটি এমন ধরণের গাড়ি রয়েছে তাঁদের শহর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য সোমবার সকাল 6 টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই বিষয়টি ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনা এড়াতে আরও চারটি সেতুতে এরকম ভারী যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এই চারটি সেতু হল বেলগাছিয়া ব্রিজ, অরবিন্দ সেতু, বিজেন সেতু এবং টালিগঞ্জ সার্কুলার ব্রিজ। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে কোলাঘাট, আসানসোল, ডানকুনি ও কৃষ্ণনগরে শত শত ট্রাক অপেক্ষা করছে রাস্তাতেই। পশ্চিমবঙ্গের ট্রাক অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সচিব সুভাষ চন্দ্র বোস বলেন, "প্রধান সমস্যা ঘটায় অতিরিক্ত ভার নিয়ে ফেলা ট্রাকগুলি। পুলিশ ও মোটর যানবাহন বিভাগের উচিৎ কড়া হাতে এই বিষয়টি বন্ধ করা। তাতে রাস্তা ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে বাঁচে।"
কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন তারা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে চলেছেন। ব্রিজ ভাঙার ফলে বহু পণ্যবাহী ট্রাক শহরে পণ্য খালাস করতে এসে আটকে পড়েছে। কলকাতার পাইকারি বাজার নিয়ন্ত্রকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন আটকে থাকা গাড়ির মধ্যেকার পচনশীল দ্রব্য যেমন মাছ, ডিম, দুধ, ফল ও সবজি নিয়েও।
শনিবার এই শহরের পুলিশ জানায়, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাঁরা যান চলাচল স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা করছেন।
রাজ্য সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন যে, যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বিকল্প সড়ক নির্মাণের চেষ্টা চলছে। রেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের মধ্যে সোমবারই একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।