This Article is From Sep 18, 2019

"আপনি কোনও ভাষা চাপিয়ে দিতে পারেন না": অমিত শাহকে বললেন রজনীকান্ত

হিন্দি (Hindi) ভাষার মাধ্যমেই দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব তাই জাতীয় ভাষা হোক হিন্দি, অমিত শাহের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

অমিত শাহের (Amit Shah) হিন্দি মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হলেন সুপারস্টার রজনীকান্ত

চেন্নাই:

কোনও ভাষাই চাপিয়ে দেওয়া যাবে না, সুপারস্টার রজনীকান্ত হিন্দি নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যের বিরোধিতা করে বললেন ওই কথা। হিন্দি (Hindi) ভাষার মাধ্যমেই দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব তাই জাতীয় ভাষা হোক হিন্দি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Amit Shah) এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদের কণ্ঠ ক্রমশই জোরালো হচ্ছে। এবার সেই প্রতিবাদী কণ্ঠের দলে যোগ দিলেন থালাইভাও (Rajinikanth)। চেন্নাইয়ে রজনীকান্ত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "কোনও ভাষাই জোর করে আরোপ করা যাবে না। দক্ষিণ ও উত্তরের রাজ্যগুলি কিছুতেই একটি সাধারণ ভাষা গ্রহণ করবে না।" "একটি সাধারণ ভাষা একটি দেশের উন্নয়নের জন্য ভাল তবে দুর্ভাগ্যক্রমে, ভারতে কোনও একটি নির্দিষ্ট ভাষাকে সাধারণ ভাষা হিসাবে গণ্য করা সম্ভব নয়", বলেন ওই অভিনেতা।

হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে গড়ে তোলার বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যকে অনেকেই অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় চাল হিসাবে দেখেছে।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অমিত শাহের হিন্দি সংক্রান্ত মতামতের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিবাদ করেন এবং একটি টুইট করে জানান যে "আমাদের দেশকে হিন্দি ভাষার মাধ্যমেই ঐক্যবদ্ধ করে তোলা সম্ভব" এই দাবিটি একেবারেই অযৌক্তিক।

গত শনিবার জাতীয় হিন্দি দিবসে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ভাষার মাধ্যমেই ভারতকে একসূত্রে বাঁধার আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে দেশের সর্বাধিক কথিত ভাষা হল হিন্দি। আর এই ভাষা দেশের মানুষের মধ্যে একতা তৈরির ক্ষমতা রাখে। অমিত শাহ একথাও স্বীকার করে নেন যে ভারত বহু ভাষাভাষীর মানুষের দেশ এবং প্রতিটি ভাষারই নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। তবে তার মধ্যেই হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহ হিন্দি দিবসে ট্যুইট করে ওই প্রস্তাব দেন।

অমিত শাহের হিন্দি দিবসে টুইটে অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি

এরই প্রতিবাদে সোচ্চার হন আরেক অভিনেতা-রাজনীতিবিদ কমল হাসান। মাক্কাল নিধি মালম দলের প্রধান কমল জানান, ভারতের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কেন্দ্রের। তিনি নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ভাষা-যুদ্ধের হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেন, এটা ভারত বা তামিলনাডু কারওরই কাম্য নয়।

কমল বলেন, ‘‘ভারতের প্রজাতন্ত্র গঠনের সময় বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এখন কোনও শাহ, সুলতান বা সম্রাট সেই প্রতিশ্রতিকে ভাঙতে পারবেন না। জালিকাট্টু কেবল একটা প্রতিবাদ ছিল। ভাষার জন্য আমাদের যুদ্ধ তার চেয়ে অনেক অনেক বড় হবে। ভারত বা তামিলনাডুর এমন যুদ্ধের কোনও প্রয়োজন নেই। আমরা সব ভাষাকেই সম্মান করি। কিন্তু মাতৃভাষা সব সময়ই তামিল থাকবে।''

তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের অধিকাংশই আনন্দের সঙ্গে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত দায় যা বাংলায় লেখা। কারণ, যে কবি এটি লিখেছে‌ন তিনি সমস্ত ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান করেই লিখেছেন। তবেই সেটা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হয়েছে।''

“আপস করব না”, হিন্দি নিয়ে অমিত শাহের মন্তব্যে বললেন বিএস ইয়েদুরাপ্পা

এদিকে বাংলার বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৫০ জন উজ্জ্বল ব্যক্তিত্বও রাজ্যের মানুষকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে ওঠার আহ্বান জানান। ফেসবুকে তাঁরা সকলকে অনুরোধ করেন বাংলা ভাষাকে তাঁদের জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে কোনও প্রয়াসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হতে। এই ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ছিলেন কবি সুবোধ সরকার, কবি-গদ্যকার বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, আবৃত্তিকার ঊর্মিমালা বসু ও জগন্নাথ বসু, স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য।

ওই পোস্টে কৌশলে একটি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করার পাশাপাশি জানানো হয়, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে একদিন এমনও আসতে পারে, যেদিন আমাদের মাতৃভাষা, আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষাকে বিপণ্ণ হতে হবে।''

.