Telangana: ৬ ডিসেম্বর, গোটা দেশকে হতচকিত করে দিয়ে এনকাউন্টারের মাধ্যমে গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তদের হত্যা করে পুলিশ
হাইলাইটস
- তেলেঙ্গানা এনকাউন্টারে তদন্ত কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট
- শীর্ষ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত করবে ওই কমিটি
- আগামী ৬ মাসের মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে
নয়া দিল্লি: তেলেঙ্গানা গণধর্ষণকাণ্ডে (Telangana Rape) অভিযুক্তদের এনকাউন্টারের ঘটনায় তদন্ত কমিশন গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতেরই (Supreme Court) অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতির নেতৃত্বে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখবে ওই কমিশন। তেলেঙ্গানায় ২৬ বছর বয়সী তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত ৪ জনকে হত্যার বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত। ওই তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভিএস সিরপুরাক। এছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রেখা এবং সিবিআইয়ের প্রাক্তন নির্দেশক কার্তিকেয়ান। এই তদন্ত কমিটিকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে। শীর্ষ আদালত আরও বলে যে, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত অন্য কোনও আদালত বা কর্তৃপক্ষ এই এনকাউন্টারের (Telangana Encounter) বিষয়ে তদন্ত করবে না। অর্থাৎ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের ফলে স্বভাবতই বাতিল করে দিতে হবে তেলঙ্গানা (Telangana) সরকারের গঠন করা আট সদস্যের বিশেষ তদন্ত কমিটি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এস এ নাজির এবং সঞ্জীব খান্নার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছে, "তেলেঙ্গানায় পশুচিকিৎসককে গণধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত চারজনের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলে আমরা একমত হয়েছি"।
"আমরা পুলিশকে দোষী করছি না। আমরা জানি না সেদিন কী হয়েছিল। আমরা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি এবং আশা করছি যে আপনারা সে বিষয়ে সহযোগিতা করবেন", বলেন বিচারপতিরা। শীর্ষ আদালত আরও জানায়,"আমাদের মনে হয়েছে যে এই বিষয়ে (তেলঙ্গানা) এমন কিছু দিক রয়েছে যার জন্যে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে"।
‘‘আইন তার কর্তব্য করেছে'': তেলেঙ্গানা এনকাউন্টার প্রসঙ্গে তেলেঙ্গানা পুলিশ
গত ৬ ডিসেম্বর, গোটা দেশকে হতচকিত করে দিয়ে এনকাউন্টারের মাধ্যমে গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তদের হত্যা করে পুলিশ । তাঁরা দাবি করে যে ওই ৪ অভিযুক্ত তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে তদন্ত চলাকালীন গুলি চালায়, তাই বাধ্য হয়েই আত্মরক্ষার্থে ওই এনকাউন্টার করতে হয় তাঁদের। ওই ৪ অভিযুক্তের মৃত্য়ুতে সাধারণ মানুষ পুলিশকে বাহবা দিলেও, অনেকেই এই এনকাউন্টারের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৪ অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফ, জল্লু শিব, জল্লু নবীন এবং চিন্তাকুণ্টা চেন্নাকেশাভুলুকে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য ভোর তিনটের সময় ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়ে ছিল। হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে একটি সেতুর নিচে ওই মহিলার মৃতদেহ পাওয়া যাওয়ায় অভিযুক্তদের সেখানেই নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন অন্যদের পালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
পুলিশের দাবি, দু'জন তাঁদের আক্রমণ করে, অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের দিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর পরে তাঁরা আত্মরক্ষার্থে অভিযুক্তদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
তেলেঙ্গানা ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তরা ৩ রাজ্যে এই ধরণের আরও ঘটনা ঘটিয়েছে: পুলিশ
২৭ নভেম্বর যখন একটি টোল বুথের কাছে নিজের স্কুটিটি পার্ক করে রেখে যান ওই মহিলা চিকিৎসক তখনই তা খেয়াল করে অভিযুক্তরা । অভিযোগ, ওই যুবতী চলে যাওয়ার পরেই তাঁর রেখে যাওয়া স্কুটির টায়ার পাংচার করে দিয়ে সেখানেই অপেক্ষা করছিল তাঁরা। পরে তিনি চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের অ্যাপয়েন্টমেন্ট শেষের পর যখন ওই টোল বুথে ফিরে আসেন, তখন অভিযুক্তরা স্কুটি ঠিক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে একটি ট্রাক ইয়র্ডে নিয়ে যায়, সেখানেই তাঁকে গণধর্ষণ করে তাঁরা, তারপর শ্বাসরোধ করে যুবতীকে হত্যা করার পর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেয় বলে পুলিশ জানায়।
দেখুন এই ভিডিও: