টেলি সংস্থাগুলিকে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া টাকা মেটানোর নির্দেশ দেয় Supreme Court
হাইলাইটস
- টেলি সংস্থাগুলির বকেয়া মেটানো সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনার নির্দেশ খারিজ
- নির্দেশ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট, পাশাপাশি তিরস্কার করা হল কেন্দ্রকেও
- এর আগে টেলি সংস্থাগুলিকে সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত
নয়া দিল্লি:
হাজার হাজার কোটি টাকার বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় টেলি সংস্থাগুলিকে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে সমস্ত বকেয়া ৩ মাসের মধ্যে মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত, কিন্তু সেই নির্দেশ কেন এখনও মানা হয়নি সে বিষয়ে জানতে টেলি সংস্থাগুলির কর্তাদেরও তলব করল আদালত। পাশাপাশি পাওনা আদায় করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারকেও তিরস্কার করল শীর্ষ আদালত। "আপনারা যদি কঠোর ব্যবস্থা না নিতে চান তাহলে আমরাও কঠোর আদেশ দিতে চাই না। তেমন হলে তো সরকারের তরফ থেকে বকেয়া আদায়ের বিষয়ে এই আবেদনটি দায়ের করাই উচিত ছিল না। দেশে কোনও আইন নেই? আমরা অত্যন্ত ব্যথিত। আমার মনে হয় আদালতের এ বিষয়ে কাজ করাই উচিত নয়", ভোডাফোন আইডিয়া (Vodafone Idea), ভারতী এয়ারটেল (Bharti Airtel) এবং টাটা টেলিসার্ভিসেসের (Tata Teleservices) দায়ের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার এ কথা বলে বিচারপতি অরুণ মিশ্র, এস আবদুল নাজির এবং এম আর শাহের বেঞ্চ (Supreme Court)।
দেখুন এই সংক্রান্ত ১০ তথ্য:
সুপ্রিম কোর্ট টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলিকে ৯২,০০০ কোটি টাকার বকেয়া অর্থাৎ অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেভিনিউ (এজিআর) প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল।
ভারতী এয়ারটেল, ভোডাফোন, এমটিএনএল, বিএসএনএল, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস, টাটা টেলিকমিউনিকেশন এবং অন্যান্য টেলি সংস্থার কর্তাদের ১৭ মার্চের মধ্যে জবাব তলব করেছে আদালত।
"যেভাবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে তার জন্যে আমরা টেলি সংস্থাগুলির কর্তাদের কাছ থেকে জবাব চাই। এখনও একটি পয়সাও জমা করা হয়নি ... এটা কি আর্থিক দম্ভের ফলে করা নয়?" বলল আদালত। অভিযোগ একজন ডেস্ক অফিসার আদালতের নির্দেশ স্থগিত রাখার কথা বলেন।
"এই দেশে পুরোপুরি আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়ে চলা টেলিকম ক্ষেত্রে কীভাবে এমন কাজ করা যায় তা আমি বুঝেই উঠতে পারছি না। একজন ডেস্ক অফিসার নিজেকে বিচারপতি হিসাবে বিবেচনা করে আমাদের আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ফেললেন। ডেস্ক অফিসার কে? ডেস্ক অফিসার কোথায়? এখনই তাঁকে এখানে ফোন করে ডাকুন। দেশে কি কোনও আইন নেই?", বলেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি।
" কোনও সংস্থাই বহু বছর ধরে কোনও টাকা জমা দেয়নি। তাদের অন্তত কিছু বকেয়া টাকা জমা করা উচিত ছিল", বলে আদালত।
বকেয়া মেটানো নিয়ে আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করে ভারতী এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়া এবং টাটা টেলিসার্ভিসেস সহ অন্যান্য টেলিকম সংস্থা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়।
টেলি সংস্থাগুলির বকেয়া ৯২ হাজার কোটি টাকা মেটানোর নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই বকেয়া মেটানোর শেষ তারিখ ছিল গত ২৩ জানুয়ারি। সেই সময় আরও পিছিয়ে দেওয়ারই আবেদন করে টেলি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো।
নিয়ম অনুযায়ী, দেশের টেলিকম সরবরাহকারীরা সংস্থাগুলিকে টেলিকম মন্ত্রককে তাদের এজিআরের ৩-৫ শতাংশ স্পেকট্রাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে এবং 8 শতাংশ লাইসেন্স ফি হিসাবে প্রদান করার কথা থাকে।
টেলি সংস্থাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে যে এজিআরের মধ্যেই মূল পরিষেবাগুলি থেকে অর্জিত রাজস্ব অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, অন্যদিকে সরকার বলছে এর মধ্যে সমস্ত আয়ই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
টেলিকম বিভাগ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ভারতী এয়ারটেলের প্রায় ২৩,০০০ কোটি টাকা, ভোডাফোন আইডিয়া ১৯,৮২৩ কোটি টাকা এবং রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের ১৬,৪৫৬ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে।
Post a comment