কলকাতা: কলকাতার সাবেক পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম সিংহী পার্ক। এ বছর তাদের পুজো পা রাখল ৭৭ বছরে। এ বছর সিংহী পার্কে তৈরি হয়েছে এক প্রাচীন মন্দির। উদ্যোক্তারা জানালেন, ‘মেহসানা’ জেলার ‘মোধেরা’ গ্রামের এক সুপ্রাচীন সূর্য মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে এ বছরের মণ্ডপ। অনুমান করা হয়, ১০২৬ থেকে ১০২৭ বঙ্গাব্দ সময়কাল নাগাদ ওই মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় ছিল চালুক্যদের রাজত্বকাল। প্রাচীন বাংলার পুস্পবতী নদীর ধারে কর্কটক্রান্তীয় রেখার উপরে অবস্থান এই মন্দিরের। এর স্থাপত্য আদতে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মধ্যে নীরবে বুনে এসেছে এক বিনি সুতোর গাঁথনি। সেই অনু্চ্চারিত ইতিহাসকেই ব্যস্ত রাজপথে পুজোর সমারোহে নিয়ে এসেছে সিংহী পার্ক দুর্গাপুজো কমিটি।
উদ্যোক্তারা জানালেন, বহু দিনের পুরনো এই পুজোর সঙ্গে স্থানীয় জনগণই শুধু না, প্রতি বছর দেখতে আসা দর্শনার্থীদেরও একপ্রকার আত্মার আত্মীয়তার টান তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাই সিংহী পার্কের পুজো কেবলমাত্র পুজোই নয়, প্রকৃত অর্থে উৎসবে পরিণত হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
মণ্ডপ সাজছে সূদূর কাঁথি থেকে আসা রাধকৃষ্ণ ডেকরেটর্সের হাত ধরে। সমগ্র থিম ভাবনা রূপ পেয়েছে মিঠুন দত্তের ভাবনায়। তবে সিংহী পার্কের আসল ঐতিহ্য তার মাতৃপ্রতিমা। সেই সাবেক রূপের সামনে নতজানু হন সকল ভক্তই। তাই প্রতিবারের মতো মাতৃমূর্তির গুরুভার রয়েছে ভাস্কর প্রদীপ রুদ্র পালের উপরেই। আলোর সাজ সম্পূর্ণ হবে চন্দননগর থেকে আসা পিন্টু ইলেকট্রনিক্সের হাত ধরে।
তবে রয়েছে পুরনোর সঙ্গে নতুনের মিশেলও। তাই প্রবেশ পথেই তৈরি করা হয়েছে আইফেল টাওয়ারের প্রতিকৃতি। যা মনে করিয়ে দেবে এ বছরের ফুটবল বিশ্বকাপকে। দু’পাশে থাকবে আরব্য রজনীর জিন, পরি, উড়ন্ত কার্পেটের গল্পগুলিও। পুরনো ও নতুনকে পাশাপাশি রেখে এ ভাবেই পুজোয় মেতে উঠেছে সিংহী পার্ক।