তাঁর একগাল হাসিমুখ সবসময়ে সেতুবন্ধনের কাজ করেছে। যা দেখে বিবাদ ভুলে মুহূর্তে এক হয়ে যেতেন শাসক বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। শেষ যাত্রাতেও সুষমা স্বরাজ (Sushma Swaraj) মিলিয়ে দিলেন, দলের অভ্যন্তরে পরস্পর বিরোধী বলে পরিচিত মোদী (PM Modi) ও লালকৃষ্ণ আদবানিকে (LK Advani)। বিকেলে লোধি রোড শশ্মানে শোকের ছায়া। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় দেখা গেল এর বিরল চিত্র। বর্ষিয়ান আদবানির বাঁ হাত ধরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আরেক পাশে রাজনাথ সিং (Rajnath Sing)। দলের অভ্যন্তরে ‘লৌহ পুরুষ' আদবানি ঘনিষ্ট বলে পরিচিত ছিলেন সুষমা স্বরাজ (Sushma Swaraj)। প্রিয় মানুষের প্রয়াণে তাই ভেঙে পড়েছেন নবতিপর মানুষটি। বারে বারেই চোখের জল মুছেছেন।
একই পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও। তাঁকেও এদিন সকালে আবেগবিহ্বল হতে দেখা যায়। সুষমা স্বরাজের মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলেন আপাত কঠিন মানুষটি। মোদীর (PM Modi) সামনে তখন দাঁড়িয়ে সদ্য প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর স্বামী স্বরাজ কৌশল ও কন্যা।
বাগ্মীতা, দৃঢ়তা, কর্মকৃতিত্ব। সুষমা স্বরাজের মধ্যে ছিল বহুগুণ। যার জেরে দেশে বিদেশে, নিজের দল বা অন্য মতাদর্শের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন সম্মানের পাত্রী। দলের নিষ্ঠাবান সেনানী। আদাবানীর (LK Advani) কথাতেই পরাজয় নিশ্চিৎ জেনেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আবার, ১৯৯৯ সালে দক্ষিণ ভারতের বল্লারি লোকসভা থেকে লড়েছেন সনিয়া গান্ধির বিপক্ষে। দলের বহু নেতার মুখেই ঘুরছে সে কথা। ছাত্রীসম এহেন নেত্রীর বিয়োগ মেনে নেওয়া তাই বেশ কঠিন বিজেপির মার্গ দর্শকের কাছে। স্মৃতিচারনায় তিনি বলছিলেন, ‘সুষমাজীর মৃত্যু আমার কাছে অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর অনুপস্থিতি সবসময় অনুভব করব।' আবেগের সঙ্গে জানান, এমন কখনও হয়নি যে তাঁর জন্মদিনে কেক নিয়ে আসতে ভুল হয়েছে সুষমা স্বরাজের (Sushma Swaraj)। চোখ মুছতে মুছতে জানাচ্ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানি।
মন্ত্রিসভা ও দলে তাঁর সহকর্মীর মৃত্যুতে মোদী ট্যুইটে জানান, "সুষমা স্বরাজের প্রয়াণ তাঁর কাছে ব্যক্তিগত ক্ষতি। ভারতের জন্য তাঁর কাজ স্মৃতিতে থেকে যাবে। তাঁর পরিবার, অনুগামী ও সমর্থকদের প্রতি সমাবেদনা জানাচ্ছি।'