This Article is From Jun 27, 2018

ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে বদলি রুখে গেল শিক্ষকের

ভগবান প্রসঙ্গে তিনি জানান, “এর থেকেই বোঝা যায় সরকারি স্কুলেও ভাল এবং কমিটেড শিক্ষক আছেন”

ভেল্লিয়াগারামের সরকারি হাই স্কুলে ইংরাজি এবং তামিল পড়ান ভগবান

তিরুভাল্লুর, তামিলনাড়ু:

তামিল নাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার ভেল্লিয়াগারামের সরকারি হাই স্কুলের বেশির ভাগ ছাত্র ছাত্রী তাদের শিক্ষক ভাগবানকে স্কুলে ফেরত আসতে দেখে অত্যন্ত খুশী। কর্তৃপক্ষ বদলির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, যেখানে দেখা যাচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা কাঁদছে এবং আকুতি করছে যেন তাদের শিক্ষক না চলে যান।

নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী ভি সাঙ্ঘাভি যার বাবা একজন রাস্তার ধারের দোকানদার, জানায় আর কিছুতেই সে এতো খুশি হবে না। সে বলে, “ভগবান স্যার যেকোনো জিনিসই দারুণ ভাবে পড়ান। তিনি আমাদের সঙ্গে গল্প করে নিজের পরিবারের কথা বলেন। প্রোজেক্টর ব্যবহার করে আমাদের অনেক কিছু দেখান।“

সে আরও জানায়, “আমরা ভগবান স্যারকে খুব ভালবাসি। কারণ তাঁর দশম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরা অনেক নম্বর পেয়েছিল। সব শিক্ষকই ভাল পড়ায় কিন্তু ভগবান স্যার একটু বেশী ভাল পড়ান।“

সপ্তম শ্রেণীর মনীষা, যার মা একজন দিন মজুর, জানায়, “ভগবান স্যার খুব আকর্ষণীয় পদ্ধতিতে পড়ান। আমি একজন কালেক্টর হতে চাই। আমাদের অনেকের মা বাবাই বলেছে, ভগবান স্যার স্কুল ছেড়ে দিলে আমাদের আর স্কুলে পাঠাবে না।“

ভগবান যিনি নিজে থিরুত্তানির একটা পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, তিনি সরকারি স্কুল ও কলেজেই পড়েছেন এবং ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন।

গত চার বছর এই বিদ্যালয়ে ভগবান ইংরাজি ও তামিল পড়ান। অনেক ছাত্র ছাত্রীরাই জানিয়েছে, তিনি নিজের উদ্ভাবনী শিক্ষাদান পদ্ধতির মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলেছেন এবং তাদের বড় স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

ছাত্র ছাত্রীদের ভালবাসায় আপ্লুত ভগবান জানিয়েছেন, “আমি ওদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করেছি, বন্ধুর মতোই মিশেছি। স্কুলের নির্ধারিত সময়ের বাইরে যেকোনো সময় তারা আমার কাছে আসতে পারে। এই সম্পর্কের জন্যই সাফল্য এসেছে। তবে বদলির ক্ষেত্রে আমাকে সরকারের নির্দেশ মানতে হবে।“

এই স্কুলের মান এই বছর 264 থেকে 281 নেমে যায়, সেই কারণে মা বাবারা তাদের সন্তানদের নিকটবর্তী বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করতে আগ্রহী হয়ে যায়। এই কারণেই ভগবান সমেত স্কুলের দুই শিক্ষককে অন্যত্র বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ অরবিন্দ জানান, গত দুই বছরে তাঁরা বহু উদ্যোগ নিয়েছে। যেমন স্পোকেন ইংলিশ এবং কম্পিটিটিভ পরীক্ষার কোচিং, স্টাডি ট্যুর এবং নৈশভোজ সহযোগে সন্ধ্যায় বিভিন্ন শিক্ষকের সহযোগিতায় পাবলিক এক্সামের বিশেষ ক্লাস ইত্যাদি।  

ভগবান প্রসঙ্গে তিনি জানান, “এর থেকেই বোঝা যায় সরকারি স্কুলেও ভাল এবং কমিটেড শিক্ষক আছেন”।

38 বছরের পুরনো এই স্কুলে 200 শিশুর বসার ব্যবস্থা প্রয়োজন। নিচু ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীরা মাটিতে বসে ক্লাস করে। শিশুদের আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা দানের জন্য তাদের স্মার্ট ক্লাসরুম প্রয়োজন। তার সঙ্গে দশটা কম্পিউটার এবং ওয়াইফাই কানেকশন প্রয়োজন। স্কুলের একটা অংশ ঠিকভাবে তৈরি পর্যন্ত হয়নি।  

অভিভাবক-শিক্ষক সংগঠনের তরফে একজন জানান, “আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা দুর্দান্ত। সামান্য সাহায্য এবং শহরের বেসরকারি স্কুলের মতো আরও কিছু সুযোগ সুবিধা পেলে তাদের আরও ভাল হবে।“  

.