একটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের পড়ান জি ভগবান
আমাদের দেশে যেখানে ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ককে আলাদা মর্যাদা দেওয়া হয় সেখানে জি ভগবানের গল্প আমাদের সকলেরই মন জয় করে নেবে। তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর জেলার একটা সরকারি স্কুলের শিক্ষক জি ভগবানের সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় তাঁর ছাত্রদের তাঁকে বাধা দেওয়ার ছবি এবং ভিডিও অত্যন্ত ভাইরাল হয়েছে বলে তামিল খবরের চ্যানেল পুথিয়া থালাইমুরাই টিভি সূত্রে জানা গেছে। তাঁর প্রতি ভালবাসায় তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের সকলেরই দুই চোখ জলে ভর্তি দেখা গেছে। এর ফলে আধিকারিকরা সাময়িক ভাবে তাঁর বদলি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
28 বছরের মিস্টার ভগবান, ভেলিয়াগ্রামে একটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রদের পড়ান। নিয়ম মেনেই তাঁর বদলি হতে চলেছিল। কিন্তু ছাত্র ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের মতে ক্লাসরুম এবং তাঁর বাইরেও এই শিক্ষকের প্রচুর অবদান রয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে নিথ্য নামক এক ছাত্র জানিয়েছে, “আমরা ওঁর বদলি চাই না। তিনি অন্যতম সাপোর্টিভ শিক্ষক এবং আমাদের অনেকের কাছেই তিনি বড় দাদার মত”।
সংবাদ সংস্থা এএনআই এর টুইট করা একটা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে ওই শিক্ষক নিজেও তাঁর আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। এই ভিডিও ইন্টারনেটে খুবই ভাইরাল হয়েছে।
শিক্ষক হিসাবে প্রথম চাকরি পেয়ে মিস্টার ভগবান ওই স্কুলে চার বছর পড়িয়েছেন, দা নিউজ মিনিটের খবরে জানা গেছে।
"এটাই স্কুলে আমার প্রথম চাকরি। আমি একজন স্নাতক শিক্ষক হিসাবে 2014 সালে এই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োজিত হয়েছিলাম। এই বিদ্যালয়ের ছাত্র- শিক্ষক সমীকরণ দেখলে বুঝবেন এখানে শিক্ষক সংখ্যা বেশী। তাই যেই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা কম আমি সেখানে বদলি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমাকে তিরুত্তানিতে বদলি করা হয়েছিল”, তিনি জানান।
"আমি পড়াশোনার বাইরেও ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল রাখার চেষ্টা করেছি। আমি ওদের গল্প বলতাম, ওদের পারিবারিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করতাম, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ওদের সঙ্গে আলোচনা করতাম, প্রোজেক্টরে বিভিন্ন জিনিস দেখাতাম... এইভাবেই আমি ওদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পরি। একজন শিক্ষকের চেয়েও বেশই আমি ওদের কাছে একজন বন্ধু এবং দাদা”, দা নিউজ মিনিট কে তিনি জানান।
"ওরা আমার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদছিল, আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না”, জানান তিনি।
"আমরা শিক্ষা দপ্তরের কাছে অনুরোধ করেছি তাঁকে যেন বদলি না করা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের অন্যতম সেরা শিক্ষক তিনি। তিনি ছাত্র ছাত্রীদের উন্নতির জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেন এবং বিভিন্ন স্পেশাল ক্লাসের মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলেন। এমন কী সে ছাত্রদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করে এবং সব মিলিয়ে খুবই বন্ধুত্ব পূর্ণ“, বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল এ অরবিন্দ টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানান।
এই মুহূর্তে ছাত্রদের প্রতিবাদের ফলে মনে হচ্ছে সাময়িকভাবে 10 দিনের জন্য মিস্টার ভগবানের বদলি স্থগিত করা সম্ভব হয়েছে।
Click for more
trending news