হায়দরাবাদ: শুক্রবার ভোরে তেলেঙ্গানা ধর্ষণ ও খুনের সাথে যুক্ত চার অভিযুক্তকে এনকাউন্টার করে খুন করে হায়দরাবাদের পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, চার অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করছিল, আর তখনই পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়, যার ফলে মৃত্যু হয় চার জনের। পুলিশের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, পুরো ঘটনাটি ঘটে আজ ভোর রাত ৩ টে থেকে সকাল ৬ টার মধ্যে। প্রাপ্ত খবরানুসারে, আদালতে 'চার্জশিট' জমা পড়ার পর পুলিশ এই চারজনকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়, তাদের 'অভিব্যক্তি কী' তা বোঝার জন্য। কিন্তু সেখানেই এক অভিযুক্ত পুলিশের কাছ থেকে হাতিয়ার ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, যদি অভিযুক্ত পালিয়ে যেতে সক্ষম হত তাহলে তা নিয়ে বিরাট সমস্যা দেখা দিত, যার ফলে পুলিশের কাছে আর কোনও পথ খোলা ছিল না। পুলিশের চালানো গুলি থেকেই মারা যায় চার অভিযুক্ত, স্বীকার করে নিয়েছে পুলিশ বিভাগ। তবে পুলিশ কমিশনার সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেবেন বলেই আশা করা হচ্ছে।
তেলেঙ্গানা ধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্তদের এনকাউন্টার, মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেশজুড়ে
তবে ইতিমধ্যে এই ঘটনার জেরে রাজনৈতিক মহল থেকে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। পি চিদাম্বরমের পুত্র কার্তি চিদাম্বরম জানিয়েছেন, ‘‘হত্যা আমাদের ব্যবস্থায় একটি কালো দাগ। ধর্ষণ ঘৃণ্য অপরাধ। আইনের অধীনে এর বিচার হওয়া উচিত।'' কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, ‘‘এনকাউন্টার'' করে কাউকে মেরে ফেলাটাও নিন্দনীয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝতে পারছি দ্রুত বিচারের প্রয়োজনীয়তার কথাটা। কিন্তু এটা কোনও পথ নয়।'' তিনি টুইট করে এই কথা জানিয়েছেন। বর্ষীয়ান আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার জানিয়েছেন, ‘‘এটি গ্রহণীয় নয়।'' তিনি বলেন, ‘‘এই ন্যায়বিচার নারীরা চায় না। আমরা কী করে নিশ্চিত হব যে, এই অভিযুক্তরাই আসল অভিযুক্ত এবং আসল অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি?'' আরেক বর্ষীয়ান আইনজীবী করুণা নান্ডি জানিয়েছেন, ‘‘কেউ আর কখনও জানতে পারবে না যে চারজনকে পুলিশ গুলি করে মেরেছে তারা নিরপরাধ কিনা। দ্রুত অ্যাকশনের জন্য তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কিনা। হয়তো চার নির্দয় ধর্ষক ঘুরে বেড়াচ্ছে।'' তবে সাধারণ মানুষ যে, পুলিশের এমন পদক্ষেপে খুশি সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তারা পুষ্পবৃষ্টি করে 'বাহবা' জানিয়েছন এই পুলিশদের।
এক ঘণ্টার মধ্যেই গণধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে পশু চিকিৎসককে, জানাচ্ছে পুলিশ
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে ভোর তিনটে নাগাদ তদন্তের উদ্দেশে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্ত চারজনকে। হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ৬০ কিমি. দূরে অবস্থিত এই এলাকা থেকেই উদ্ধার করা হয়েছিল তরুণীর দগ্ধ্ শরীর।এই চারজনই সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ, এবং এই ঘটনার দায়ভারও স্বীকার করে নিয়েছে তারা।
ধর্ষণকারীদের নিয়ে জয়া বচ্চনকে সমর্থন করলেন মিমি চক্রবর্তী
২৭ নভেম্বর রাতে ঘটেছিল সেই মর্মান্তিক ঘটনা। এক তরুণীকে টুল-বুথের কাছে স্কুটার রেখে যেতে দেখে এই চার অভিযুক্ত। পেশায় তারা ছিল ট্রাক ড্রাইভার ও খালাসি। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে তার স্কুটারের টায়ার পাংচার করে দিয়ে তার ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তরুণী ফিরে এসে এমন ঘটনা দেখার পর এই চারজন তাকে সাহায্য করার ভান দেখিয়ে এগিয়ে আসে, আর তারপরেই ঘটে নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যালীলা। প্রথমে চারজনে মিলে ধর্ষণ করে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয় এই পশু চিকিৎসককে। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে তারা সমস্ত প্রমাণ লোপাটের জন্যই এমন ঘটনা ঘটিয়েছিল।