Read in English
This Article is From Aug 21, 2018

বন্যাবিধ্বস্ত কেরালায় উদ্ধারকার্যে 'নায়ক' মৎস্যজীবীরা

ভয়াবহ বন্যার প্রথমদিন থেকেই নিজেদের নৌকা নিয়ে উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছিলেন তাঁরা।

Advertisement
অল ইন্ডিয়া Translated By
কোচি:

গত দু’সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত কেরালা। মৃতের সংখ্যা কয়েকশো। স্থানান্তরিত করতে হয়েছে দশ লক্ষেরও বেশি মানুষকে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কুড়ি হাজার কোটি টাকারও বেশি। 1924 সালের পর এমন ভয়াবহ বন্যার সাক্ষী থাকেনি ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’। এই বিপর্যয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশ তথা বিশ্বের মানুষ। দিনরাত এক করে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন সেনাবাহিনীর জওয়ান ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। কিন্তু, তাঁদের মধ্যেও যাঁরা আলাদা হয়ে গেলেন এবং কেরালাবাসীর কাছে হয়ে উঠলেন ‘অবিসংবাদী নায়ক’, তাঁরা হলেন রাজ্যের মৎস্যজীবী। ভয়াবহ বন্যার প্রথমদিন থেকেই নিজেদের নৌকা নিয়ে উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছিলেন যাঁরা। শয়ে শয়ে মৎস্যজীবী নির্দ্বিধায় এবং নির্ভয়ে পৌঁছে গিয়েছেন পঠনমথিত্তা, আলাপুজা, এর্নাকুলাম বা ত্রিচুরের মতো বন্যাদুর্গত জেলাগুলিতে।

সোশ্যাল মিডিয়া দু’হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছে তাঁদের এই প্রচেষ্টাকে। তৈরি হয়েছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় সব মিম। তাদের মধ্যে একটি মিমের উল্লেখ না করলেই নয়। সেটিতে লেখা- “হলিউডের কাছে রয়েছে ব্যাটম্যান, আয়রন ম্যান ও স্পাইডার ম্যান। কেরালাবাসীর কাছে রয়েছে- ফিশারম্যান!

বন্যার জল বাড়তে আরম্ভ করার সঙ্গে সঙ্গেই কেরালার সরকারের পক্ষ থেকে কাজে লাগানো হয়েছিল রাজ্যের অগণিত মৎস্যজীবীকে।

Advertisement

একজন স্থানীয় মানুষ জানান, “ওই মৎস্যজীবীরা এমন এমন জায়গায় চলে গিয়েছিলেন মানুষদের উদ্ধার করতে, যেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা সেনাবাহিনীর লোকও পৌঁছাতে পারেননি”।

ওই মৎস্যজীবীরা উদ্ধারকার্য শুরু করতেন সকাল ছ’টার সময়। সারাদিন ধরে চলত সেই কাজ। তারপর তাঁরা ফিরে আসতেন সন্ধেবেলায়। আরেকজন স্থানীয় মানুষ জানান, “তাঁরা কেউই খালি হাতে আসতেন না। নিজেদের মতো করে খাবার বানিয়ে আনতেন। একের পর এক মানুষকে উদ্ধার করে তাঁদের হাতে খাবার তুলে দিতেন। সেইসব মানুষরা হয়তো কেউ দু’দিন বা কেউ চারদিন খেতে পারেননি”।

Advertisement

কেরালার মন্ত্রী কে জে অ্যালফনস এই মৎস্যজীবীদের ‘সবথেকে বড় নায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, প্রত্যেক মৎস্যজীবীকে প্রতিদিন তিন হাজার টাকা করে সাম্মানিক দেওয়া হবে। তাঁদের নৌকা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অর্থসাহায্য করা হবে তার জন্যও।

সমুদ্রের ঢেউয়ের উথালপাথালের মধ্য দিয়ে জীবন কাটাতে কাটাতে এভাবেই কখন যেন লড়াইয়ের ঢেউয়ে মিশে গেলেন কেরালার মৎস্যজীবীরা।  

 

 

 

 

Advertisement