পূর্ব লাদাখের (Ladakh) অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে প্রকৃত সীমান্তরেখা (LAC) নিয়ে ভারত ও চিনের (China) মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। গত ৫ ও ৬ মে প্যানগং সরোবর অঞ্চলে দু'দলের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমান পরিস্থিতিতে উদ্ভূত উত্তেজনার বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ ছিল, ওই দু'দিন ভারতীয় সেনা আধিকারিক ও কর্মীদের উপরে চড়াও হয়ে তাঁদের ব্যাটন দিয়ে মারধর করে চিনা সেনারা। চিন ও ভারতের সেনা টহলদাররা প্রায়ই একে অপরের সীমান্ত অতিক্রম করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দু' তরফের সেনারাই পরে পশ্চাদপসরণ করে।
লকডাউন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের কথা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
প্যানগংয়ের সংঘর্ষের পর থেকে বেশ কয়েকবার চিনা সেনার ভারতীয় সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা জানা গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণে দেমচক অঞ্চল, প্যানগং সরোবরের পূর্ব তীর, গালওয়ান নদী অববাহিকা ও একেবারে সম্প্রতি গোগরা পোস্ট। এছাড়াও উত্তরে দৌলত বেগ ওল্ডি অঞ্চলেও চিনা সেনার সক্রিয় হয়ে ওঠার কথা জানা গিয়েছে।
"দ্বিপাক্ষিক ইস্যু আমরাই মেটাবো!" চিন নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতা ফেরাল দিল্লি
দৌলত বেগ ওল্ডি অঞ্চলে রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি বিমান অবতরণ ক্ষেত্র। এখানে মোতায়েন সেনাদের সাহায্যার্থে সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান অবতরণ করে। এই অঞ্চল শীতকালে রীতিমতো দুর্গম হয়ে ওঠে। তুষারপাত শুরু হলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এখানে সেনাদের সক্রিয় থাকা বেশ শক্ত হয়ে ওঠে।
দক্ষিণের দুবরুক ও উত্তরের দৌলত বেগ ওল্ডিকে যুক্ত করেছে একটি রাস্তা। গত বছর এই রাস্তাটির সম্পূর্ণ করেছে ভারত।
গত বছরের অক্টোবরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ উদ্বোধন করেন কোল চেওয়াং রিনচেন সেতু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫,০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই সব মরশুমের উপযোগী সেতুর নির্মাণ দৃষ্টি এড়ায়নি চিনের। এর সমান্তরালে অবস্থিত শিয়ক নদী। যা উত্তর লাদাখের প্রকৃত সীমান্তরেখা খুব দূরে নয়।
ওই রাস্তার একটি অঞ্চল গালওয়ান নদী অববাহিকার প্রকৃত সীমান্তরেখার পাশ দিয়ে গিয়েছে। এই নদীটি শিয়ক নদীর সঙ্গে মিশে গিয়েছে। এই অঞ্চল দিয়ে চিনা সেনা অনুপ্রবেশ করছে বলে মনে করা হয়। উপগ্রহ মারফত প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গিয়েছে গালওয়ান নদী অববাহিকার পাসের রাস্তাতে চিনা সেনার ছাউনি।
এছাড়া রয়েছে গোগরা পোস্ট। এটিও প্রকৃত সীমান্তরেখার একেবারে কাছে অবস্থিত। সূত্রানুসারে, এই পোস্টের কাছেই চিনা সেনার জমায়েত লক্ষ করা গিয়েছে। তবে এখনও সেই জমায়েত চিনা সীমান্তের মধ্যেই রয়েছে।
লাদাখের সবচেয়ে দক্ষিণে যে অঞ্চল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে সেটি দেমচক অঞ্চল। এখানেও চিনা ভারী সরঞ্জাম সরানোর কথা শোনা গিয়েছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানোর জন্য সেনা ও কূটনৈতিক স্তর— উভয়তই আলোচনা চলছে। কিন্তু পাশাপাশি সরকার এও জানিয়েছে, ‘‘ভারতের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।''.