জাত, ধর্ম, বর্ণ এবং বিয়ে। এই চার বিষয় ভারতের মতো দেশে ঐতিহাসিক ভাবেই যেন একে অপরের পরিপূরক। সেই ভাবনাকে ক্রমাগত প্রশ্ন করে যাওয়াই যায়। প্রশ্ন করাও হয়ও। তবু, তা থামে না। এ এক কঠিন সত্য। অন্য জাত এবং অন্য ধর্মের মধ্যে বিয়ে হওয়ায় তা নিয়ে প্রভূত অশান্তি এবং তার ফলে চলে যাওয়া প্রাণ- সবকিছুই দেখে এসেছে এই দেশ। এই একবিংশ শতাব্দীতেও প্রায়শই তা দেখে চলেছে। মেঘালয়ে খাসি উপজাতির মহিলার অ-খাসি জাতের সঙ্গে বিয়ে করা নিয়ে এই মুহূর্তেই যেমন তরজা বাদানুবাদ ও হিংসা তুঙ্গে। একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সম্প্রতি এই বিষয়ে, যাতে বলা হয়েছে, নিজেদের জাতের বাইরে বিয়ে করলে খাসি উপজাতির মহিলাদের সমস্ত সম্পত্তি ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে।
এই পদক্ষেপের ফলে প্রায় কুড়ি লক্ষ মানুষের খাসি উপজাতি গোষ্ঠীতে এতটাই বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে যে, কেউ কেউ চাইছে অসমের মতোই মেঘালয়েও যেন এনআরসি চালু করা হয়।
যে দুই বিবাদমান গোষ্ঠীর মধ্যে বিতর্কে শিলং এখন দু’ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ বলছে, খাসি উপজাতির মহিলাদের সঙ্গে অন্য জাতি বা উপজাতির বিবাহ সম্পন্ন হলে গোটা খাসি উপজাতিটাই মুছে যাবে। এছাড়াও রয়েছে আরেকটি গোষ্ঠী, যারা মনে করছে মিশ্র জাতি-উপজাতির মধ্যে বিয়ে হলে তা বিভেদ সৃষ্টিকারী এবং মহিলাদের পক্ষে অবমাননাকর। যেহেতু, মেঘালয় পৃথিবীর মুষ্টিমেয় কিছু মাতৃকূলভিত্তিক সমাজের মধ্যে একটি।
বিতর্কের শুরু হয়, যখন, খাসি হিল অটোনমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিলেন প্রধান অধিকর্তা এইচ এস শাইলা খাসি বংশ আইনে একটি নতুন সংশোধন আনতে চান। সেই সংশোধন অনুযায়ী, অন্য জাতি বা উপজাতির পুরুষকে বিয়ে করলে খাসি উপজাতির মহিলারা তাঁদের প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে।