নিউ দিল্লি: পিটিশনরারদের ব্যবহার করা রাফাল নথি দেশের নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই নথি শত্রুদের কাছেও আছে। সুপ্রিম কোর্টকে (Supreme Court) বুধবার এই কথা জানাল কেন্দ্র (Centre)। রাফাল মামলার ((Rafale Case) রায় বেরোনোর পর সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার জন্য যাঁরা যাঁরা পিটিশন করেছিলেন, সেই পিটিশনাররা দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন। কেন্দ্র আরও জানাল, এই ধরনের কাজের ফলে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নও সংকটের মুখে পড়েছে। শুধু তাই নয়। এত গুরুত্বপূর্ণ নথি ফটোকপি কারও অজ্ঞাতসারে নেওয়াও একরকম চুরি করারই সামিল। 'দ্য হিন্দু' সংবাদপত্রের বিরুদ্ধেও তোপ দাগে কেন্দ্র। ফ্রান্সের থেকে ৩৬'টি যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে খবর করার জন্য। কেন্দ্র আজ আদালতেকে স্পষ্ট জানায়, যাঁরা রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত গোপন নথির ওপর ‘নির্ভর করছেন', তাঁরা আসলে সরকারি নিরাপত্তা আইনকেই ভঙ্গ করছেন। যার শাস্তি হল কারাবাস অথবা জরিমানা।
প্রসঙ্গত, এর আগে, রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত মামলাটির শুনানির সময় কেন্দ্র জানিয়েছিল, সংশ্লিষ্ট চুক্তি সংক্রান্ত বহু গুরত্বপূর্ণ নথি চুরি হয়ে গিয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে। কেন্দ্রের এই দাবির পর গোটা দেশ জুড়ে হইচই পড়ে যায়। সরব হয় বিরোধীরাও। তারা প্রশ্ন তোলে, এত গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো চুরি হয়ে গেল কী করে?
তারপর সরকারের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, কোনও নথি চুরি হয়নি। প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে সেগুলির প্রতিলিপি বের করে নেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্র তার পিটিয়নে জানায়, "এই নথিগুলি সরকারি নিরাপত্তা আইনের আওতায় পড়ে। কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া কোনওভাবেই এগুলিকে প্রকাশ্যে আনা যায় না"।
কেন্দ্র আরও জানায়, যাঁরা এই নথিগুলির প্রতিলিপি নিয়েছেন, তাঁরা আসলে প্রকারান্তরে ভারতের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলির চুক্তিকেও লঙ্ঘন করেছেন।
অন্যদিকে, এডিটরস গিল্ড দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সরকারের অবস্থানের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, মিডিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করা কোনও সাংবাদিককে তাঁর সূত্র জিজ্ঞাসা করার মতোই 'নিন্দনীয়'।
দ্য হিন্দু পাবলিশিং গ্রুপের চেয়ারম্যান এন রাম জানান, দেশের মানুষের স্বার্থেই ওই নথিগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। কোন সূত্র থেকে তাঁরা তা পেয়েছিলেন, সেটি কোনওভাবেই জানানো হবে না।
এনডিটিভি'র মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "আমরা কিছু চুরি করিনি। অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্র মারফৎ এগুলো পেয়েছি এবং সূত্রের পরিচয় গোপন রাখতে আমরা দায়বদ্ধ। সূত্রের সম্বন্ধে কেউ আমাদের থেকে একটি তথ্যও পাবে না। এই নথিগুলি এখন নিজেরাই নিজেদের হয়ে কথা বলছে"।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি আবার বলেন, মিডিয়ার স্বাধীনতা দেশের নিরাপত্তার থেকে কোনওভাবেই বড় হতে পারে না।