এম ভানিথা, যিনি ইসরোতে ৩২ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন
শ্রীহরিকোটা: সোমবার চন্দ্রযান-২ (Chandrayaan-2) পাড়ি দিল চাঁদের উদ্দেশ্যে, এটি ভারতের কাছে অন্যতম উচ্চাভিলাষী এবং জটিল মহাকাশযাত্রা ছিল। এই চন্দ্রাভিযান সফল করতে মাসের পর মাস ধরে নিরলস পরিশ্রম করেছেন মহিলা ও পুরুষদের একটি বিশেষজ্ঞ দল। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে এই ধরণের কঠিন মহাকাশযাত্রার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে ভারত যেখানে এই চন্দ্রযান ২ অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেক কম খরচে চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে। ভারতে এই প্রথমবার, এই চন্দ্রাভিযানের নেপথ্যে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে ইসরোর (ISRO) একদল মহিলা-বিজ্ঞানী (Women Scientist)। দেশের দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযান প্রকল্পটি (Chandrayaan-2 Mission) সম্ভব হয়েছে মূলত দুই নারীর হাতযশেই, একজন এই প্রকল্পের পরিচালক মুথ্যাইয়া ভানিথা এবং অন্যজন রীতু কারিধাল, যাঁর পরিচালনাতেই চাঁদের বুকে এই ভারতীয় চন্দ্রযানটি চলাচল করবে।
চাঁদের দেশে পাড়ি দিল চন্দ্রযান-২
এম ভানিথা, যিনি ইসরোতে ৩২ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন, জানা গেছে তাঁর বাবা চেন্নাইয়ে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
রীতু কারিধাল, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার, ইসরোতে ২২ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন
“আমি এখানে একজন জুনিয়র মোস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগ দিয়েছিলাম। আমি ল্যাবে কাজ করতাম, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা করতাম, হার্ডওয়্যার তৈরি করতাম, নকশার উন্নয়নের কাজ করতাম এবং তারপর এই পদে আসীন হই”, বলেন শ্রীমতি ভানিথা।
সোমবারই চন্দ্রযান ২ চাঁদের উদ্দেশ্যে সফলভাবে পাড়ি দিয়েছে।
"আমি সহজেই অন্য ব্যক্তিদের মানসিকতা বুঝতে পারি এবং আমি তাঁদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে পারি। আমরা সবাই অনেক বছর ধরে একসঙ্গে রয়েছি ... আমি প্রত্যেক ব্যক্তির ভূমিকা এবং তাঁদের দায়বদ্ধতা বুঝতে পারি এবং সেইজন্যেই প্রত্যেকের কাছ থেকে যেটুকু পেয়েছি তাঁর সম্মান করেছি", চন্দ্রাভিযান সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন তিনি।
অন্যদিকে রীতু কারিধাল, একজন অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার, ইসরোতে ২২ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। লখনউ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স থেকে স্নাতক ওই বিজ্ঞানী এর আগে ইসরোর মঙ্গলযান পাঠানোর সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বর্তমানে চন্দ্রযান ২ এর (Chandrayaan-2 Mission) মিশন ডিরেক্টর।
পি কুনহিকৃষ্ণন, একজন রকেট প্রকৌশলী-স্যাটেলাইট ফ্যাব্রিকেটর
শ্রীমতি ভানিথা ও কারিধালের মত, এমন অসংখ্য নারী রয়েছেন যাঁরা এই মিশনকে সফল করতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন, বর্তমানে ইসরোতে প্রায় ৩০ শতাংশ কর্মীই মহিলা।
ইসরোর চেয়ারম্যান ডঃ কে সিভান বলেন, "ইসরোতে পুরুষ ও নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয় না। সকলের সমান অংশ থাকে এবং তাঁরা সমানভাবে পরিশ্রম করেন এবং নিজেদের অবদান রাখেন"।
গত সপ্তাহে বন্ধ প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্যে মহাকাশে পাঠানো সম্ভব হয়নি চন্দ্রযান ২-কে। কিন্তু এই সমস্যাটির সমাধান করেন প্রযুক্তি বিজ্ঞানী এবং থিরুবনন্তপূরমে বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্রের পরিচালক ডঃ এস সোমনাথ।
৫৬ মিনিট আগে যান্ত্রিক সমস্যার জন্য আটকে গেল Chandrayaan 2 -এর লঞ্চিং
প্রযুক্তি বিজ্ঞানী এবং থিরুবনন্তপূরমে বিক্রম সারাভাই মহাকাশ কেন্দ্রের পরিচালক ডঃ এস সোমনাথ
ইসরোর মহিলা ও পুরুষ বিজ্ঞানীদের অসামান্য অবদানের কারণেই অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় এত কম খরচে এই চন্দ্রাভিযান করতে সক্ষম হল ভারত। এই চন্দ্রযানের প্রস্তুতিতে প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে, অন্যান্য দেশগুলির অনুরূপ মিশনগুলির তুলনায় যা অনেক কম, অন্য দেশগুলি কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে এই ধরণের চন্দ্রাভিযানের জন্যে
প্রথম চন্দ্রাভিযান চন্দ্রযান ১-এর উৎক্ষেপণের প্রায় ১১ বছর পর এই দ্বিতীয় অভিযান চালাল ভারত। এই চন্দ্রযানটি চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে সেখানে জলের সন্ধান চালানো ছাড়াও আরও বেশ কিছু পরীক্ষা চালাবে বলে জানা গেছে।