প্রতিষ্ঠানটির 200 বছরের ঐতিহ্যময় ইতিহাসে এমন জৌলুসহীন সমাবর্তন অনুষ্ঠান সম্ভবত কখনওই হয়নি (Presidency University Students Protest)। কলেজ হিসেবেও নয়, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও নয়। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়া ও আচার্য-বিহীন সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়ে গেল নন্দন 3 প্রেক্ষাগৃহে। উপাচার্য নিজের ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি। তিনি বলেন, “এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা। আমি পড়ুয়াদের স্পষ্টভাবে বলতে চাই একটাই কথাঃ অরাজক হয়ো না, শিক্ষার্থী হও”, এনডিটিভিকে বলেন অনুরাধা লোহিয়া। সমাবর্তনের নিজের বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখ হচ্ছে এত ছোট একটি জায়গায় সমাবর্তনের অনুষ্ঠানটি করতে হচ্ছে বলে”। প্রেসিডেন্সির একজন পড়ুয়াও উপস্থিত ছিল না এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। যে 750 জনের ডিগ্রি পাওয়ার কথা ছিল, উপস্থিত ছিল না তারাও। সাম্মানিক ডিলিট পাওয়া অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও সাম্মানিক ডিএসসি পাওয়া ভারতরত্ন বিজ্ঞানী সিএনআর রাও পড়ুয়াদের এই আচরণে বিস্ময়প্রকাশ করেন।
সৌমিত্র বলেন, “পড়ুয়াদের আরও সংযতভাবে বিষয়টি দেখা উচিত ছিল। শিক্ষক ও উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে মিটিয়ে নেওয়া উচিত ছিল বিষয়টি”।
সিএনআর রাও বলেন, “আমি ঘৃণায় বিশ্বাস করি না। আমাদের একসঙ্গে চলা উচিত সকলে মিলে। নইলে আমাদের কোনও ভবিষ্যত নেই। যে কোনও ছোটখাটো ইস্যুকে বড় ইস্যু বানিয়ে নিলে বাস্তবের আসল সমস্যাগুলির জন্য আর সময় দেওয়াই যাবে না”।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই হিন্দু হোস্টেল নিয়ে পড়ুয়াদের আন্দোলন চলছিল প্রেসিডেন্সিতে। সোমবার যা ভয়াবহ আকার ধারণ করে্। উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখে পড়ুয়ারা।
পড়ুয়াদের দাবি, গত তিন বছর ধরে সংস্কার হয়ে চলা হিন্দু হোস্টেলে তাদের এবার থাকতে দিতে হবে। প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের ওই হোস্টেলের বদলে এখন পনেরো কিলোমিটার দূরের রাজারহাটের হোস্টেলে থাকতে হচ্ছে।
আনিসুর নামের এক পড়ুয়া বলে, “কর্তৃপক্ষ এখন যেটা করছে, সেটা সম্পূর্ণ ভুল এবং কর্তৃপক্ষ যে প্রচারটা চালাচ্ছে, সেটাও সম্পূর্ণ মিথ্যে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সঙ্গে হোস্টেল নিয়ে আন্দোলনের কোনও সম্পর্কই নেই। কিন্তু, পড়ুয়াদের ‘খারাপ’ দেখানোর জন্য ওই দুটি বিষয়কে এক করে তুলে ধরছে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ”।
রিমঝিম সিনহা বলে আরেক পড়ুয়া বলে, “আমরা একটাই কমিউনিটি। যারা হিন্দু হোস্টেলের জন্য লড়ছে, আবার এত খেটে পড়াশোনা করে নিজেদের যোগ্যতায় অর্জন করা ডিগ্রিটি হাতে পাওয়ার জন্যও লড়ছে”।