West Bengal: করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই রেশন সামগ্রী নিয়ে রাজ্য জুড়ে বিক্ষিপ্ত অশান্তি (ফাইল চিত্র)
হাইলাইটস
- কেন্দ্রের পাঠানো ত্রাণ সামগ্রী পাচার করছে তৃণমূল, অভিযোগ বিজেপির
- রেশনের জিনিসচুরি করে বিজেপি দলীয় কার্যালয়ে মজুত করছে, অভিযোগ তৃণমূলের
- বিজেপি-তৃণমূল রেশন তরজায় হেনস্থা হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে
কলকাতা: রাজ্যে (West Bengal) যখন লকডাউনের জেরে মানুষের হাতে রেশন সামগ্রী (Ration Supplies) তুলে দেওয়া একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে, ঠিক সেই সময় এই খাদ্য সামগ্রী নিয়েই যুযুধান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও বিরোধী দল বিজেপি (BJP)। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে ত্রাণ হিসাবে যে খাদ্যশস্য পাঠাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার, সেই সামগ্রীই ট্রাক থেকে ‘চুরি' করে নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস, এমন অভিযোগে নদিয়ার রানাঘাটে শুক্রবার কয়েক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। যদিও শাসক দলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপিই রেশন সামগ্রী সরিয়ে নিজেদের দলীয় অফিসে মজুত করে রাখছে। এমনকী এই অভিযোগে জলপাইগুড়ি জেলার তেলিপাড়া থেকে দু'জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই গ্রেফতারির পরেই রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে রানাঘাটে রেশন সামগ্রীকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে রাজ্য বিজেপি।
জলপাইগুড়ির তেলিপাড়া এলাকার একটি গুদামঘর থেকে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছবি লাগানো বস্তা থেকে প্রচুর চাল ও আটা উদ্ধার হয়। শাসক দল তৃণমূলের অভিযোগ, ওই ঘরটি আসলে বিজেপির দলীয় অফিস। তারাই ওই চাল বেআইনিভাবে মজুত করে রেখেছে। যদিও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ওই অফিসটি তাঁদের দলীয় অফিস নয়। তৃণমূলই ওখানে রেশনের চাল রেখে বিজেপির নামে অপবাদ দিচ্ছে।
লকডাউনের তৃতীয় পর্বে কী করা যাবে, কী করা যাবে না
তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রেশন সামগ্রী বিতরণ নিয়ে তরজা চলছে। বিজেপির দাবি, তৃণমূল নেতারা কেন্দ্রের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী নিজেরা মানুষের মধ্যে বিতরণ করছেন যা কিনা আসলে রেশন দোকানের মাধ্যমে সকলের হাতে পৌঁছনো উচিত। কিন্তু শাসক দল তা না করে ব্যক্তিগতভাবে চাল ও আটা মানুষজনকে এমনভাবে দিচ্ছে যেন ওই ত্রাণ তাঁরাই দিচ্ছেন। এদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা একই ধরণের অভিযোগ করেছে তৃণমূলও।
কোভিড-১৯ যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানাতে রবিবার হাসপাতালে পাপড়ি বর্ষণ করবে সেনা
রানাঘাটের একটি চালকলে চাল বোঝাই একটি ট্রাক থামিয়ে ওই বস্তাগুলি নামিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বস্তাগুলিতে যে চিহ্ন দেওয়া ছিল তাতে এটা স্পষ্ট যে ওই বস্তা ভর্তি চাল কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যে সরবরাহ করা হচ্ছিল। জানা গেছে সেখানকার রাইস মিলের অভ্যন্তরে ওরকম বেশ কয়েকটি খালি বস্তা পাওয়া গেছে। বিজেপি দাবি করছে যে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো ত্রাণসামগ্রীই বিভিন্ন ব্যাগের মধ্যে ভরে এদিক-ওদিক পাচার করা হচ্ছে। ওই চালকলের মালিকও বস্তাগুলি কীভাবে তাঁর ওখানে এলো সেবিষয়ে কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। এই নিয়ে বিরাট ঝামেলা শুরু হলে তা মেটানোর জন্যে শেষপর্যন্ত সেখানকার বিডিওকে ডেকে আনা হয়। তিনি জানান যে গোটা বিষয়টি নিয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেবিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্যে উর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানানো হবে।
জলপাইগুড়ির, তেলিপাড়ায় বিজেপির কার্যালয় বলে যে ঘরটিকে চিহ্নিত করেছে তৃণমূল সেখান থেকে ২১,০০০ কেজি চাল এবং ৩,৯০০ কেজি আটা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। স্থানীয় রেশন দোকান পরিচালনা করেন এমন দু'জনকে ওই ঘটনায় গ্রেফতার করার পর তাঁরা জানান যে, রাজ্য থেকে আসা বিপুল রেশন সামগ্রী মজুত করতে জায়গা কম হওয়ায় তারা গুদামঘর হিসাবে বিজেপির কার্যালয়টি ব্যবহার করছিলেন। ঘটনা নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে বলে খবর।