"আমাদের আটক করা হয়েছে": বারাণসী বিমানবন্দর থেকে ভিডিও বার্তা ডেরেক ও'ব্রায়েনের
বারাণসী: ডেরেক ও'ব্রায়েন সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে, বারাণসী বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হল, সোনভদ্র জমি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তাঁরা, কিন্তু শনিবার সকালে বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের আটক করা হয় বলে অভিযোগ। "উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই কাজ", ডেরেক ও'ব্রায়েন সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে বিমানবন্দরে আটকে দিয়ে বলেন পুলিশ আধিকারিক। এই ঘটনার পরেই বারাণসী বিমানবন্দর থেকে ভিডিও বার্তায় তাঁদের আটক করার কথা জানান ডেরেক। "তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের দলকে বারাণসী বিমানবন্দরেই আটক করা হয়েছে। তবে কোন আইনে বারাণসী বিমানবন্দরেই আমাদের আটকে দেওয়া হল তা স্পষ্ট করেননি এডিএম, এসপি। শুধু জানিয়েছেন যে ওপরতলার নির্দেশ মেনেই কাজ করেছেন তাঁরা। আমাদের তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়। আমরা সোনভদ্রার ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করতে ইচ্ছুক। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারের পাশেও দাঁড়াতে চেয়েছিলাম আমরা-ডেরেক", তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদের পক্ষ থেকে ওই ট্যুইটটি করা হয়।
জমি নিয়ে বিবাদ, গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪ মহিলাসহ ৯ জনের মৃত্যু
একটি ভিডিও বার্তাও দেন ডেরেক ও'ব্রায়েন।
পরে এনডিটিভিকে ডেরেক ও'ব্রায়েন জানান যে তাঁদের বিমানবন্দর থেকে একটি “শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত” অতিথি নিবাসে নিযে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। “আমাদের জানানো হয়েছে যে একটি অজ্ঞাত স্থানে আমাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অতিথি নিবাসে নিয়ে গিয়ে রাখা হবে। কিন্তু আমরা কোনও অতিথি নিবাসে যেতে চাই না। আমরা আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাই। এটা কোনওভাবেই ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করবে না, কেননা আমাদের এই প্রতিনিধি দলে খুব কম সংখ্যক লোক রয়েছে”, বলেন তিনি।
শুক্রবারই সোনভদ্রার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধিও। কিন্তু তাঁকেও সোনভদ্রা যাওয়ার পথে রাস্তাতেই আটকে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। শনিবার সকালে সেই একই চেষ্টা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল করলে তাঁদের বারাণসী বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবারই জানা যায়, সোনভদ্রা ও সংলগ্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে প্রিয়ঙ্কাকে সোনভদ্রা যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হলেও ওই স্থান ছাড়েননি সনিয়া কন্যা। সোনভদ্রার কাছেই মীর্জাপুরে একটি অতিথি নিবাসেই রাত কাটান তিনি।
উত্তরপ্রদেশে গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পথেই আটক প্রিয়ঙ্কা গান্ধি
চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে, সোনভদ্রার একটি গ্রামে জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১০ জনের, আহত হন ২৪ জনেরও বেশি মানুষ। অভিযোগ ওঠে যজ্ঞ দত্ত ও তাঁর শাগরেদরা মিলে একদল উপজাতি শ্রেণিভুক্ত কৃষকদের উপর গুলি চালায়। ওই কৃষকরা বহুযুগ ধরে সেখানকার ৩৬ একর জমিতে চাষ করে আসছে, সেই জমিই ছাড়তে রাজি না হওয়ায় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার যজ্ঞ দত্ত প্রায় দুই শতাধিক লোক ও ৩২ টি ট্রাক্টর নিয়ে এসে ওই জমি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করে। তখনই তাঁরা কৃষকদের দ্বারা বাধার সম্মুখীন হলে প্রায় আধঘণ্টার উপর সময় ধরে গুলি চালায়, যার জেরেই মৃত্যু হয় ১০ জনের। এই ঘটনায় ফের একবার শিউরে উঠেছে গোটা দেশের মানুষ।