Read in English
This Article is From Jul 25, 2019

"জনতার ভয়ঙ্কর আইন": খোলা চিঠিতে লিখলেন তৃণমূল সাংসদ নুসরৎ জাহান

"গো রক্ষক"-দের দ্বারা আক্রমণের বিভিন্ন ঘটনা লাগাতার উঠে আসছে, গরু পাচার ও গরুর মাংস খাওয়ার মতো গুজবকে হাতিয়ার করে আক্রমণ করছে তাঁরা, মত নুসরতের

Advertisement
অল ইন্ডিয়া

মুসলিমদের উপর একের পর এক হামলার নিন্দায় সরব হলেন নুসরৎ জাহান

কলকাতা:

দেশে "ক্রমবর্ধমান ঘৃণার রাজনীতি" নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির চিঠি লেখার পরের দিনেই খোলা চিঠি (Open letter) তৃণমূল সাংসদ নুসরৎ জাহানের (Nusrat Jahan)। মানুষের জীবনের মূল্য মনে করিয়ে দিয়ে যেভাবে কিছু লোক আইন হাতে তুলে নিচ্ছে সে বিষয়ে সমালোচনা করলেন অভিনেত্রী তথা সাংসদ। "জনতার ভয়ঙ্কর আইন", এমন করেই দেশের কিছু লোকের আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনার বর্ণনা করলেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) ওই সাংসদ। "ঘৃণার কারণে অপরাধ ও গণপিটুনির ঘটনা দেশের এখন নিত্যকার ঘটনায় দাঁড়িয়ে গেছে। ২০১৪-২০১৯ সালের মধ্যে মুসলিম ও দলিতদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ঘৃণার কারণে অপরাধ দানা বেঁধেছে। চলতি ২০১৯ সালেই ১১টি ঘৃণার কারণে অপরাধ ঘটেছে এবং তার ফলে ৪ জনের মৃত্যুও হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা দেশের সংখ্যালঘু ও দলিতদের উপরেই করা হয়েছে এই ধরণের অপরাধ", চিঠিতে লেখেন তিনি। তিনি এও আশা করেছেন যে এই ধরণের ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন সাধারণ মানুষ।

জয় শ্রী রাম বিতর্কে মোদিকে চিঠি লিখলেন অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহরা

তৃণমূল সাংসদ নুসরৎ জাহান এও দাবি করেন যে, “গো রক্ষা”-র অজুহাতে দেশ জুড়ে একের পর এক গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। গরু পাচার করা হচ্ছে বা গরুর মাংস খাওয়া হচ্ছে এই গুজবকে হাতিয়ার করেই সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছেন তাঁরা। “এই বিষয়ে সরকারের নীরবতা ও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার মতো ঘটনা আমাদের আহত করছে”, লেখেন তিনি। “তাবরেজ আনসারি (Tabrez Ansari), মহঃ ইখলাক (Mohd Ikhlaq) এবং পেহলু খানের (Pehlu Khan) মতো একের পর এক মানুষের সঙ্গে অবিচার হয়েছে”, একথাও লেখা রয়েছে নুসরতের খোলা চিঠিতে।

Advertisement

৪ বছর আগে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গো হত্যার অভিযোগ এনে ৫২ বছরের মহঃ ইখলাককে হত্যা করেছিল গ্রামের কিছু উন্মত্ত জনতা। ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল দিল্লি-আলওয়ার জাতীয় সড়কে গরু পাচারের অভিযোগ তুলে পিটিয়ে মারা হয়েছিল পেহলু খানকে। অন্যদিকে, চলতি বছরেই ঝাড়খণ্ডে “জয় শ্রী রাম”  না বলতে চাওয়ায় ২৪ বছরের তাবরেজ আনসারিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

গত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতা তৃণমূল সাংসদ নুসরৎ জাহান তাঁর চিঠিতে “জয় শ্রী রাম” (Jai Shri Ram) প্রসঙ্গটিও উল্লেখ করেন। “ভগবানের নাম নিয়ে একের পর এক হত্যার ঘটনা ঘটছে। এই ধরণের গণপিটুনির সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা আমাদের দেশের শত্রু ছাড়া আর কিছুই নয়”, লেখেন তিনি। পাশাপাশি গণতন্ত্রের অবমাননা রুখতে কেন্দ্রকে কড়া আইন তৈরির সুপারিশও করেন নুসরৎ।

Advertisement

নিজের ওই খোলা চিঠিতে "সারে জাঁহা সে আচ্ছা" এই দেশাত্মবোধক গানের কয়েক লাইনও উল্লেখ করেন তিনি (Nusrat Jahan)।

আমি দীর্ঘদিন ধরেই এটা বলে আসছি, বিশিষ্টদের চিঠি নিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

Advertisement

বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই ঘৃণার রাজনীতি নিয়ে চিঠি লেখেন অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহ সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।  প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বিশিষ্টদের চিঠিতে বলা হয়েছে, “দুঃখজনকভাবে জয় শ্রীরাম (Jai Shri Ram) এখন উত্তেজনামূলক যুদ্ধের হুঙ্কারে পরিণত হয়েছে, তার ফলে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে এবং রাম নাম নিয়ে অনেক জায়গায় গণপিটুনির ঘটনাও ঘটছে। এটা দুঃখজনক যে, ধর্মের নাম নিয়ে হিংসার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে! এটা মধ্যযুগ নয়! রামচন্দ্রের নাম ভারতের বেশীরভাগ মানুষের কাছে পবিত্র। দেশের সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে আপনার উচিত, রামনাম ব্যবহার করে এই ধরণের ঘটনা বন্ধ করা”। 

Advertisement