This Article is From Oct 08, 2018

“পুরুষ পুলিশদেরও শিখতে হবে কীভাবে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে হয়”- বলছেন দিল্লির 4 মহিলা কমিশনার

সমস্ত জেলাগুলির পুলিশ প্রধানদের 14 জনের মধ্যে 4 জন মাত্র নারী। দিল্লিতে সব অঞ্চলগুলির মধ্যে মহিলা কর্মীর শতকরা হার মাত্র 11 শতাংশ।

Advertisement
অল ইন্ডিয়া

রাজস্থানের আসলাম খান, হরিয়ানার মনিকা ভরদ্বাজ, বিহারের নূপুর প্রসাদ এবং দিল্লির মেঘনা যাদব- দিল্লির চারটি জেলা পুলিশ প্রধানের ভূমিকায় রয়েছেন এই চারজন

নিউ দিল্লি:

দিল্লির কথা উঠলেই সকলেই বলবেন মহিলাদের জন্য সবচেয়ে অনিরাপদ শহর এইটিই। তা সত্ত্বেও দিল্লির চারটি জেলা পুলিশ প্রধানের ভূমিকায় রয়েছেন চারজন নারী। রাজধানীতে এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটি সর্বোচ্চ। “কাজটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। এই সময়ে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সচেতনতা তৈরি করা” বলছেন হরিয়ানার মনিকা ভরদ্বাজ। বর্তমানে পশ্চিম দিল্লি পশ্চিম জেলার সহকারী কমিশনার তিনিই। এই চারজন অফিসার হলেন- রাজস্থানের আসলাম খান (Aslam Khan), হরিয়ানার মনিকা ভরদ্বাজ(Monika Bharadwaj), বিহারের নূপুর প্রসাদ (Nupur Prasad) এবং দিল্লির মেঘনা যাদব (Meghna Yadav)। এই চারজনের মধ্যে একটি জিনিস সাধারণ। নূপুর প্রসাদ বলেন, " মা হিসেবে এবং ব্যক্তিগত ও পেশাদারিত্বে জীবনে ভারসাম্য বজায় রেখে চলাটা এক বড় চ্যালেঞ্জ।"

2017-র ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (National Crime Records Bureau) রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে অপরাধের জাতীয় গড়ের থেকেও দিল্লির অপরাধের হার দ্বিগুণেরও বেশি। 19 টি প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ দিল্লিতেই। "নারীদের অত্যাচারের যত মামলা দেখতে পাই তারচেয়েও সংখ্যাটা বেশি কারণ অনেকে অত্যাচারের কথা কোথাও বলতেও চান না। এটা আরও মারাত্মক বিষয়।”, নূপুর প্রসাদ বলেন।

নূপুর প্রসাদ প্রথম মহিলা কর্মকর্তা যাকে 2017 সালে জাতীয় রাজধানী শহর দিল্লিতে পুলিশ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে শহরের মাদক বিক্রেতা এবং অপরাধমূলক গ্যাং গুলি শেষ করে ফেলার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়েছিলেন তিনি। সমস্ত জেলাগুলির পুলিশ প্রধানদের 14 জনের মধ্যে 4 জন মাত্র নারী। দিল্লিতে সব অঞ্চলগুলির মধ্যে মহিলা কর্মীর শতকরা হার মাত্র 11 শতাংশ। "আমরা উন্নতি করছি। এমন একটা দিন নিশ্চয়ই অর্জন করব যেন 14 টি জেলায় 14 জনই নারী কর্মকর্তা রইবেন। আমরা নতুনভাবে স্বাভাবিক হতে চাই।" বলেন মেঘনা যাদব। তিনি এও জানান মহিলাদের শীর্ষ পদে নিয়োগ মানেই মহিলাদের উপর অত্যাচার কমে যাওয়া নয়। তিনি বলেন, "আমরা যদি 14 টি পদই মহিলাদের দিয়ে পূরণ করতে পারি, তারপরেও যদি শহরে ও গ্রামে পুরুষেরা মহিলাদের সম্মান না করতে শেখেন কিছুই বদলাবে না।"

Advertisement

এই চারজন সিনিয়র অফিসারও কাজ করতে গিয়ে নানা বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছেন। নূপুর প্রসাদ "আমরা নিয়মিতভাবে আমাদের পুরুষ পুলিশদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। বিভিন্ন পুলিশ যারা পুরুষও তাঁরা বিভিন্ন পারিপার্শ্বিকতা থেকে কাজ করতে আসেন, বিভিন্নভাবে বড় হন। কীভাবে নারীদের সঙ্গে কথা বলতে হয় এটাও তাঁদের শেখার দরকার আছে, শেখানোর দরকার আছে। নানান সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান (Sentisisation) একমাত্র উপায়। পুরুষ পুলিশ থেকে শুরু করে সমাজের সকলের সাথে এই প্রচার চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাড়ি থেকেই শুরু করতে হবে মানসিকতা বদলের কাজ।”

তিনি ও তার সহকর্মীরা বলছিলেন, নারী নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ে দিল্লি পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকখানি পথ পেরিয়ে এসেছে। 2012 সালে নির্ভয়া (Nirbhaya) ঘটনার ক্ষেত্রে যখন 23 বছরের মেডিকেলের ছাত্রীটি দিল্লির চলন্ত বাসে নির্মম্ভাবে গণধর্ষিতা হয়, রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় তাঁকে- তার পর থেকেই দিল্লি পুলিশের নিয়মে বড় রদবদল ও সংস্কার হয়।

Advertisement

মহিলাদের অনলাইনে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি এখন খুবই প্রাসঙ্গিক। যদিও সেই অনলাইন মিডিয়াকেই নিজেদের হাতিয়ার করে তুলেছেন এই পুলিশ অফিসারেরা। "সামাজিক মিডিয়া আমাদের নিজেদের কথা উপস্থাপনা করার পাশাপাশি গুজব বা ভুয়ো খবর প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। আমরা পুলিশ হিসেবে শুধুই অপরাধ দমন করি তাই নয়, আমরা নানান সচেতনতামূলক প্রচার, ক্যাম্পেইনও চালাই। টুইটার (Twitter) আমাদেরকে তা করতে সহায়তা করে।" বলছেন মনিকা ভরদ্বাজ, টুইটারে 20 হাজারেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে তাঁর। অনলাইন মারফত আসা বিভিন্ন সমস্যাও তিনি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখেন।

Advertisement