This Article is From Jul 31, 2019

বিধানসভার লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শান্ত থাকার পরামর্শ প্রশান্ত কিশোরের

তৃণমূল কংগ্রেসকে তিনটি মন্ত্র প্রশান্ত কিশোরের (Prashanta Kishor)-“ভোট পর্বের বাইরে বেরোন। যুদ্ধং দেহী মনোভাব ছাড়ুন। শান্ত হোন, কাজ করুন: সরকার”।

বিধানসভার লক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শান্ত থাকার পরামর্শ প্রশান্ত কিশোরের

৩০ মে খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কলকাতা:

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার, বিধানসভা ভোটের আগে, তৃণমূল নেত্রী তথা দলীয় নেতৃত্বকে তিনটি মন্ত্র দিলেন প্রশান্ত কিশোর—রেগে যাওয়ার প্রবণতা কমান, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের কথা বন্ধ করুন, বিজেপির সঙ্গে লড়াই থামান। আপাতভাবে তৃণমূলনেত্রী (Mamata Banerjee) সেই কৌশলকে গ্রহণ করেছেন। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি রাজ্যে ফিকে হয়ে যাবে বলে মনে করেন না ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। বরং এটি একটি বড় লড়াই বলেই মত তাঁর। “প্রায় ইন্দিরা গান্ধির মতো ক্যারিশমাযুক্ত নেতা নরেন্দ্র মোদি। তারসঙ্গে বামেদের মতোই ক্যাডারভিত্তিক দলীয় ভিত বিজেপির। তারসঙ্গে লড়াই এক মহিলার”—২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে এভাবেই দেখছেন ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর।

মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে “দিদিকে বলো” কর্মসূচী, দাবি দলীয় সূত্রের

তবে আসন্ন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগে মমতা শিবিরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর (Prashanta Kishor)। তাঁর টিম সূত্রের বক্তব্য, “ আমরা জানি, জয় শ্রীরাম স্লোগানে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তা উচিত হয়নি। সমস্যাটা হল—তাঁকে কে বলবেন? তারজন্য আমরা রয়েছি”।

৩০ মে খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashanta Kishor) বার্তা, “ভোটের আবহ থেকে বেরিয়ে আসুন। যুদ্ধংদেহী মনোভাব ছাড়ুন। শান্তি ফেরান এবং কাজ করুন”। পাল্টা লড়াইয়ের জন্য, সমস্তরকম কৌশলকেই কাজে লাগাতে চান প্রশান্ত কিশোর। ক্ষোভ, বিকল্প রাস্তা, পরিবর্তন, শৃঙ্খলা এবং অবশ্যই দিদিকে ফোন করুন।  “দিদিকে বলো” চালু হওয়ার পর থেকেই জয় শ্রীরাম এবং কাটমানি থেকে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার অভিমুখ বদলে দিয়েছে, দাবি প্রশান্ত কিশোরের টিমের। বিজেপি এটিকে একটি গিমিক বললেও, তাদের পুরানো পথ থেকে সরে গিয়ে নয়া ইস্যু তুলেছে।

বাংলার মানুষ বলছে “দিদিকে ছাড়ো”, কটাক্ষ শিবরাজ সিং চৌহানের

প্রশান্ত কিশোরের (Prashanta Kishor) টিমের দাবি, বিজেপির তোলা নয়, বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে নিজেদের এজেন্ডা ঠিক করতে চায় তারা। আগামী ২০ মাসের মধ্যে ৫০ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য দিদিকে বলো হেল্পলাইনের। তাদের আশা,  এরফলে সাধারণ মানুষ কী চান, এবং কী চান না তা সম্পর্কে মজবুত তথ্য পাওয়া যাবে। পাশাপাশি সরকার ও প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কাজ সম্পর্কেও তথ্য জানা যাবে।

প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফে বলা হয়েছে, “এই তথ্য ১০ থেকে ১৫টি পয়েন্টে পরিণত হবে। আমরা বিহারের নীতিশ কুমারকে ৭টি পয়েন্ট দিয়েছিলাম, জগনমোহনকে ৯টি”।

প্রশান্ত কিশোর (Prashanta Kishor) বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউই রাজনৈতিক শিক্ষার্থী নন। রাজ্যের লাল ড্রাগনের পতন  ঘটিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), দেশকে বিজেপির থেকে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর।

জনসংযোগের চেষ্টাই প্রমাণ করে জনতার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে তৃণমূল, বলল বিজেপি

বিহারের বক্সারে চিকিৎসকের পুত্র, পোলিও বিরোধী প্রচারাভিযান দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর (Prashanta Kishor)। রাষ্ট্রসংঘে ছিলেন প্রায় এক দশক। ওই ১০ বছরের মধ্যে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন, পশ্চিম আফ্রিকায় এবং ২০১২-এ ভারতে ফেরেন। তারপরেই নরেন্দ্র মোদির প্রচারের কাজে যুক্ত হন।

এই সময়ে দাঁড়িয়ে ব্যর্থতার চেয়ে প্রশান্ত কিশোর (Prashanta Kishor) সফল হয়েছেন বেশী। বাংলাকে তাঁরা রঙীন চশমায় দেখছেন না।  লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ২ থেকে ১৮টি আসন পাওয়া যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর টিম খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, কোন কৌশলে বঙ্গে গেরুয়া রাস্তা তৈরি হয়েছে।

তাদের পরামর্শ, “মুসলিম এবং হিন্দু সম্পর্কে লাগাতার বার্তা দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেছে বিজেপি। তারা যতবেশী মেরুকরণের কথা বলেছে, রাজ্যে ততবেশী মেরুকরণ হয়েছে। সাম্প্রদায়িক আলোচনা পরিবারে ঢুকিয়েছে তারা। সাম্প্রদায়িকতা সম্পর্কে কথা বন্ধ করুন”।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জন্য প্রশান্ত কিশোরের টিম-ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি ১,০০০ জনকে বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যা অন্ধ্রপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডির থেকে ৩০০ জন কম।

প্রশান্ত কিশোরের (Prashanta Kishor) টিমের বক্তব্য, “যদি বিজেপি আমাদের জানে, আমরাও জানি, কীভাবে কাজকর্ম করে বিজেপি”।

তাদের নিজেদের মন্ত্র: দুটো যুদ্ধ সমান নয়, প্রত্যেকটি যুদ্ধই আলাদা। কোনওকিছু না বলেই তা চলে যায়, যুদ্ধে সবাই জয়ের জন্যই লড়াই করে।

তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে, ‘ক্ষিপ্ত মমতা' (Mamata Banerjee) তকমা ছাড়ার পথে।

.