তিন তালাকের ফলে মুসলমান মহিলাদের অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানায় সরকার
কলকাতা: রাজ্যসভায় পেশের আগেই তিন তালাক নিয়ে প্রস্তাবিত আইনটি আরও সরলীকরণের চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার, সূত্র জানিয়েছে এনডিটিভিকে। যারা ওই আইন ভাঙবে, তারা জামিন পেতে পারে একমাত্র আদালত যদি তাদের জামিন দিতে রাজি থাকে, তবেই। মামলাটি করতে পারবে একমাত্র মহিলারাই। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গতকাল আইনটিতে এই বদলগুলি আনার সিদ্ধান্ত নেওয় হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় সরকার আজ রাজ্যসভায় তিন তালাক আইনের একটি সংশোধন আনতে চলেছে। এর ফলে তিন তালাককে একটি অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। কিন্তু সরকারি সূত্র এনডিটিভিকে জানায়, যদি বিরোধীদের পূর্নাঙ্গ সমর্থন না পাওয়া যায়, তবে জরুরি ভিত্তিতে এই নিয়ে অর্ডিন্যান্স পাস করানোর চেষ্টা করবে সরকার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তিন তালাক আইনের সংশোধন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরের দিনই এই আইন নতুনভাবে প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
এই আইনের নতুন পরিবর্তনে, একমাত্র যে মহিলার সঙ্গে ঘটনাটি ঘটেছে, সে অথবা তার কোনও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ই তার স্বামীর বিরুদ্ধে তিন তালাকের মামলা করতে পারবে।
দ্বিতীয় সংশোধনটি হল, ওই মহিলার স্বামী যদি ফিরে আসে, তাহলে সে মামলাটি তুলে নিতে পারবে এবং স্বামীর সঙ্গে পুনরায় সংসার করতে পারবে।
যদিও, তিন তালাকের জন্য অভিযুক্ত স্বামীর যে শাস্তি গত বছর জারি করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে, সেই তিন বছরের জেলের শাস্তিটি বহালই থাকবে নতুন সংশোধিত আইনটিতেও। জামিনের জন্য একমাত্র প্রশাসনিক প্রধানই দায়বদ্ধ থাকবেন। স্থানীয় পুলিশ অফিসাররা জামিন দিতে পারবে না অভিযুক্ত স্বামীকে।
মুসলমান মহিলা (বিবাহের অধিকার রক্ষা ) বিল 2017 লোকসভায় পাস হয়ে গিয়েছে আগেই। তিন তালাক সংক্রান্ত আইনে নতুন এই সংশোধনীর পর তা রাজ্যসভায় কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থন পাবে বলেই মনে করছে সরকার। কারণ, সেখানে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই।
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “আপনারা কেবল ভুল তথ্য দিয়েই দেড়খানা গুরুত্বপূর্ণ সেশন নষ্ট করে দিলেন। আমি এখনও এই ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না। আপনাদের কোনও আগাম সার্টিফিকেট দিতেও প্রস্তুত নই আমি। তার কারণ, এখনও এই আইনটি প্রণয়ন হয়নি।”
এই তিন তালাকের ফলে কোনও মুসলমান বিবাহিত পুরুষ যদি তিন বার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে, তাহলেই তার স্ত্রী’র সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। নতুন আইনের ফলে তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে বিবাহ-বিচ্ছেদ করতে চাইলে ওই পুরুষের জেল হবে। তার সঙ্গে দিতে হবে খোরপোশ।
এই নতুন আইনে ‘নিকাহ তালাক’-এর কথাও বলা হয়েছে। যার ফলে, ওই বিবাহ-বিচ্ছিন্না মহিলা অন্য আরেকজন পুরুষকে অথবা তার আগের বিয়ে করা পুরুষকে পুনরায় বিয়ে করতে সমর্থ হবে।