M Nethra: নিজের পড়াশুনোর জন্যে বাবার জমা করা ৫ লক্ষ টাকা গরিবদের সাহায্যে দান করেছে এই মেয়েটি
হাইলাইটস
- লকডাউনে অভাবীদের সাহায্য করতে এগিয়ে এলো তামিলনাড়ুর কিশোরী
- নিজের উচ্চশিক্ষার জন্যে জমানো ৫ লক্ষ টাকা সে দান করে দিল গরিবদের সাহায্যে
- এম নেথ্রা নামে ওই কিশোরীকে সম্মান জানালো রাষ্ট্রসংঘ
চেন্নাই (তামিলনাড়ু): বহুদিন আগে কবি বলে গেছেন, "সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি আর লকডাউনের ফলে দেশের অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে তাতে একে-অপরের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন আরও বেশি করে টের পাচ্ছে মানুষ। যার যতটুকু সামর্থ্য তাই দিয়েও যদি মানুষ তার থেকে খারাপ অবস্থায় থাকা মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো কিছু মানুষের মুখে অন্তত দু'বেলা দু'মুঠো অন্নসংস্থান হয়। সদিচ্ছা থাকলে যে তেমনটা পারা যায় তার জলজ্যান্ত উদাহরণ তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) মাদুরাইয়ে এক কিশোরী (M Nethra)। তাঁর বাবা সেলুন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। মেয়ের উচ্চশিক্ষার জন্যে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন ভদ্রলোক। কিন্তু সেই মেয়েরই অনুরোধে জমানো ৫ লক্ষ টাকা তিনি খরচ করে ফেললেন কিছু দরিদ্র মানুষের সাহায্যে। তবে মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়ানোয় এম নেথ্রা নামের ওই কিশোরীকে "গুডউইল অ্যাম্বাসাডর টু দ্য পুওর" বা "দরিদ্রদের শুভেচ্ছাদূত" হিসাবে নিয়োগ করেছে রাষ্ট্রসংঘ (United Nations)।
লকডাউনের জের, চাকরি হারিয়ে গ্রাজুয়েট ছেলেরা কাজ খুঁজছেন মনরেগা প্রকল্পে!
সামান্য সেলুন মালিকের মেয়ে হয়েও যেভাবে নিজের শিক্ষার জন্যে সঞ্চিত অর্থ পুরোটাই ঢেলে দিয়েছেন গরিবদের পাশে থাকার জন্যে তাতে এম নেথ্রার তারিফ না করে পারেনি রাষ্ট্রসংঘ। তাই কিশোরীর এই উদ্যোগকে আরও উৎসাহিত করতে তাঁকে ইউনাইটেড নেশনস অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিস (UNADAP) -এর অ্যাম্বাসাডর হিসাবে নিয়োগ করেছে তারা।
লাদাখ সীমান্ত নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটাতে ভারত-চিন শীর্ষ সামরিক স্তরে বৈঠক
ওই কিশোরী যেভাবে নিজের বাবাকে রাজি করিয়ে ৫ লক্ষ টাকা দান করছিলো, তাতে নিজের রাজ্যের ছোট্ট বাসিন্দাকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই তামিলনাড়ুর প্রতিমন্ত্রী সেল্লুর রাজুর। মেয়েটির দরাজ প্রশংসাই যে তিনি করেছেন তাই নয়, পাশাপাশি একথাও বলেছেন যে, তিনি মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামীকে বলে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার নামে তৈরি সম্মাননা পুরস্কারটিও যাতে কিশোরী পায় তার চেষ্টা করবেন। "কয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রীও (নরেন্দ্র মোদি) মেয়েটির প্রশংসা করেছেন। তিনিও মাদুরাইকে নিয়ে গর্বিত। রাষ্ট্রসংঘের নেতাদের সঙ্গে দেখা করার এবং দরিদ্রদের সাহায্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত", বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, "আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সুপারিশ করতে চাই যাতে আগামী দিনে ওই মেয়েটিকে জে জয়ললিতা অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়"।
প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর রেডিও অনুষ্ঠান "মন কি বাত" চলাকালীন করোনা ভাইরাস লকডাউনের মাঝে দুর্দশাগ্রস্থ লোকেদের সাহায্য করতে যেভাবে মেয়েটির বাবা সি মোহন এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর প্রশংসা করেন।
"শ্রী মোহন জি মাদুরাইয়ে সেলুন চালান। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিনি নিজের মেয়ের পড়াশুনার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা সাশ্রয় করেছিলেন। তবে এই দুঃসময়ে সঞ্চিত পুরো টাকাটাই তিনি দেশের অভাবী ও দুর্দশাগ্রস্তদের সাহায্যের জন্যে ব্যয় করেছেন", বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
ইউনাইটেড নেশনস অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিস জানিয়েছে যে এম নেথ্রাকে নিউইয়র্ক এবং জেনেভাতে আয়োজিত রাষ্ট্রসংঘের সম্মেলনেও বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হবে।