লোকসভায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
হাইলাইটস
- এযাবৎ দেশে ৭৩টি করোনা-আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে
- গত দু’সপ্তাহে দেশে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে
- পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের
নয়াদিল্লি:
করোনা ভাইরাসের দাপট ক্রমেই বাড়ছে। দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৩। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার করোনা নিয়ে মুখ খুললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। করোনা ভাইরাস যে এই মুহূর্তে অত্যন্ত উদ্বেগের একটি বিষয়, তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী ভাবে মোকাবিলা করা প্রয়োজন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই সময়ে ভ্রমণ না করাই ভাল। কারণ এতে ঝুঁকিটা বাড়ে।’’ এযাবৎ দেশে ৭৩টি করোনা-আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত দু’সপ্তাহে দেশে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। সবথেকে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে কেরলে। করোনার বিস্তার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, কূটনৈতিক, সরকারি, রাষ্ট্রসঙ্ঘ ইত্যাদি ক্ষেত্র ছাড়া ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সমস্ত ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সারা বিশ্বে করোনার দাপটে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত ৪,৫০০-রও বেশি। অসুখ ছড়িয়েছে ১০০টিরও বেশি দেশে।
মহারাষ্ট্র এবং জম্মু ও কাশ্মীরের ১,১০০ জন তীর্থযাত্রী ও ৩০০ পড়ুয়া সহ প্রায় ৬,০০০ ভারতীয় আটকে রয়েছেন ইরানে। এই মুহূর্তে করোনা-আক্রান্ত দেশের তালিকায় উপরেই রয়েছে ইরানের নাম। আপাতত সেখানে আটক ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনাই যে লক্ষ্য, তা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
মঙ্গলবার ইরান থেকে আটক ভারতীয়দের দেশে ফেরানো শুরু হয়েছে। প্রথম বার ৫৮ জনকে দেশে ফেরানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর একথা জানিয়েছেন।
সারা দেশে সবথেকে বেশি করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা কেরলে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরপরই রয়েছে হরিয়ানা। সেখানে ১৪ জন ইতালির পর্যটককে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। মহারাষ্ট্রে ১১, দিল্লিতে ৬ ও কর্নাটকে ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানান, করোনা সংক্রমণ রুখতে জন সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জানিয়েছিলেন, বিশেষজ্ঞরা করোনা ভাইরাস রুখতে যে কোনও জমায়েত বন্ধ রাখতে বলেছেন। একটি টুইট করে তিনি একথা জানান।
১৫ ফেব্রুয়ারির পর চিন, ইতালি, ইরান, কোরিয়া, ফ্রান্স, স্পেন ও জার্মানির মতো করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে আগত সমস্ত পর্যটক, যাঁদের মধ্যে ভারতীয়রাও রয়েছেন, তাঁদের সকলকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারান্টাইন করে রাখা হবে বলে বুধবার জানানো হয়েছে সরকারি তরফে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু' করোনাকে ‘প্যানডেমিক' ঘোষণা করার পর সারা পৃথিবীর সঙ্গে দেশজ বাজারেও সর্ববৃহৎ ‘সিঙ্গল ডে সেল অফ ওভার' দেখা গিয়েছে বৃহস্পতিবার।
দেশের বহু ক্ষেত্রে স্কুল ও কলেজ বন্ধ রয়েছে করোনা-আতঙ্কের কারণে। দিল্লিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাশ্মীর ও লাদাখেও স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে।
প্রতিটি রাজ্যই নিজেদের মতো করে করোনা-প্রাদুর্ভাবকে রুখতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে সকলকে এক ছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের ১০ নম্বর ধারার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি মহামারী রোগ আইনের ২ নম্বর ধারা চালু করার ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে আহ্বান জানিয়েছে।
মহারাষ্ট্র সরকার ২৯ মার্চ আইপিএলের প্রথম ম্যাচের (মুম্বই ইন্ডিয়ানস বনাম চেন্নাই সুপার কিংস) টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছে। ওইদিনই আইপিএল শুরু হবে। চলবে ২৪ মে পর্যন্ত।
করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৪,৫০০ ছাড়িয়েছে। সারা পৃথিবীতে আক্রান্ত ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ। এই রোগের সংক্রমণ রুখতে হাঁচি ও কাশির সময় মুখ টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখতে বলা হচ্ছে।
Post a comment