জুতো যখন মানুষের প্রতিনিধি
হাইলাইটস
- জুতো যখন মানুষের প্রতিনিধি
- কিছু শিক্ষার্থী ফুলও আনেন
- এক IIM ছাত্রের মতে, ফুল শান্তির প্রতীক
বেঙ্গালুরু: কলেজ চত্বরে প্রকাশ্য সমাবেশ নাস্তি। সন্ধে ছ'টার সময়েও সেখানে পুলিশি প্রহরা। কিন্তু প্রতিবাদ কি এভাবে রোখা যায়? তাই মানুষের মাথা দেখা না গেলেও দেখা গেল সারি সারি জুতোর মিছিল। যারা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করল। সঙ্গে ছিল ফাঁকা পোস্টার। একছিটে কালির আঁচড়ও নেই তাতে। শুক্রবার এই নীরব প্রতিবাদ দেখিয়ে দিল, একটি শব্দ খরচ না করেও কীভাবে NRC-র বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়। এবং এমন অভিনব প্রতিবাদ করে দেখালেন বেঙ্গালুরুর IIM-এর শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবারে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু আরেকবার জামিয়া কাণ্ড যাতে না ঘটে তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
বাংলার পথে কেরলও, আপাত বন্ধ জনগণনা
সন্ধের পরেও যখন পুলিশ টহল দিচ্ছে ক্যাম্পাসে তখনই শুরু হয় এই অভিনব প্রতিবাদ। প্রথমে কলেজের এক শিক্ষক গোলাপি রঙের একটি পোস্টার রাখেন গেটের বাইরে। পোস্টারে একটি অক্ষরও লেখা নেই। সেই পোস্টারের ওপর তিনি খুলে রেখে যান জুতো।
এরপরে একই ভাবে বেরিয়ে আসেন দুই শিক্ষার্থী। তাঁদের একজন হুইল চেয়ারে বসা। অন্যজন নিজের এবং বন্ধুর দুটি পোস্টার এবং জুতো বাইরে রেখে চুপচাপ ভেতরে চলে যান।
ক্রমশ বাড়তে থাকে জুতোর সংখ্যা। সমস্ত শিক্ষার্থী একে একে বাইরে এসে রেখে যান জুতো আর ফাঁকা পোস্টার। কেউ কেউ রাখেন ফুল। যুক্তি, এই ফুল শান্তির প্রতীক।
NDTV সাক্ষী এই অভিনব প্রতিবাদের। বিক্ষোভ সমাবেশ না করে, শ্লোগান না দিয়ে, প্ল্যাকার্ড হাতে না নিয়ে বিরোধিতার এই ঘটনা যেন প্রতিবাদের নতুন ভাষার জন্ম দিল।
সারিবদ্ধ জুতো আর ফাঁকা পোস্টার ততক্ষণে দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছে, বেঙ্গালুরু IIM-এর শিক্ষার্থীরা পাশে রয়েছেন জামিয়া প্রতিবাদের। তাঁরা মেনে নেননি নয়া নাগরিকত্ব আইন।
প্রসঙ্গত, ১৪৪ ধারা মেনে চার জনের বেশি একসঙ্গে এক জায়গায় জমায়েত হতে পারবেন না বলেই বাকিরা অপেক্ষা করেছেন গেটে ভেতরে। হামলার ভয়ে সামনে আসতে চাননি কয়েকজন। তাঁদের জুতো বয়ে নিয়ে বাইরে রেখেছেন এক ছাত্রী। তাঁর কথায়, দেশে যা হচ্ছে তাতে তাঁরা শঙ্কিত। প্রতিবাদে সামিল হয়েও তাই যাঁরা নিজেদের অবস্থান, ভবিষ্য়ত নিয়ে কুণ্ঠিত তাঁরা অন্যের মাধ্যমে নিজেদের জুতো বাইরে রাখছেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বলি ৬! CAA-এর প্রতিবাদে উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু বিক্ষোভকারীদের!
NDTV-কে কলেজের এক অধ্যাপক দীপক বলেন, নয়া আইন কেড়ে নিয়েছে দেশবাসীর আত্মপরিচয়। স্বাধীন দেশে এই পদক্ষেপ সঠিক নয়। এবং বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার অধিকার আছে আগামী প্রজন্মের। তাই শিক্ষার্থীদের বলতে দেওয়া হোক। সত্যিই এখন প্রতিবাদের প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি প্রহরা বাড়লেও প্রশাসন কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করেনি এই নীরব প্রতিবাদের।