Jammu and Kashmir: বেশ কিছুদিন ধরেই অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে ওই রাজ্য।
নয়া দিল্লি: দেখতে দেখতে ষষ্ঠ সপ্তাহে প্রবেশ করল কাশ্মীরের (Kashmir) অবরুদ্ধ পরিস্থিতি। ঠিক এই সময়েই রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান সোমবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে গত মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে বাতিল করে দেওয়ার পরে কেন্দ্র যেভাবে সে রাজ্যে (Jammu and Kashmir) কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে সেই সম্পর্কে "গভীরভাবে উদ্বিগ্ন" তিনি। "আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বিধিনিষেধ আরোপ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আটকে রাখা সহ কাশ্মীরিদের মানবাধিকার নিয়ে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রভাব সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি,", মানবাধিকারের পক্ষে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হাই কমিশনার মিশেল বাছেলেট মানবাধিকার কাউন্সিলের (UN Human Rights Council) ৪২ তম অধিবেশনে তার উদ্বোধনী ভাষণে একথা বলেন ।
জম্মু ও কাশ্মীরের তরুণ প্রজন্মকে ব্যবসায় উৎসাহিত করতে আর্মির পদক্ষেপ
"যদিও আমি ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের সরকারকেই মানবাধিকারকে সম্মানিত ও সুরক্ষিত করার জন্য অনুরোধ করে চলেছি, তবুও আমি বিশেষ করে ভারতের কাছে বর্তমান অবরুদ্ধ পরিস্থিতি বা কারফিউকে সহজ করার জন্য; বেসিক পরিষেবাগুলিতে মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আবেদন করেছি; এবং যে সমস্ত নেতারা আটক রয়েছেন তাঁদের মানবাধিকারের প্রতিও যাতে শ্রদ্ধা জানানো হয় সেই অনুরোধ করছি। এইসব ব্যাপারে কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে পরামর্শ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণএবং কেননা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে তাঁদের ভবিষ্যতের উপর প্রভাব পড়বে। "
গত মাসেই, মোদি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের কয়েক দশক পুরনো বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিধান বাতিল করে দেয়। পাশাপাশি ওই রাজ্যকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করারও ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান এমএস বাছেলেট এও বলেন যে তিনি নিয়ন্ত্রণ রেখার দু'দিকে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। তিনি বলেন যে কাশ্মীরের জনগণের ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাঁদের পরামর্শ নেওয়া এবং তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
জম্মু ও কাশ্মীর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এই কথা বলে আন্তর্জাতিক ফোরামে এই বিষয়টি উত্থাপনের ব্যাপারে পাকিস্তানের প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করে ভারত।
কাশ্মীরের পাশাপাশি অসম নিয়েও উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান এমএস বাছেলেট । তিনি বলেন যে অসমে জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বা এনআরসির মাধ্যমে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিক করার লক্ষ্যে যে চরম অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়েও চিন্তিত তিনি। ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত ওই চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ।
“প্রত্যেকটি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে তাড়ানো হবে”, অসমে বললেন অমিত শাহ
তিনি এ বিষয়ে ভারত সরকারের কাছে আবেদন প্রক্রিয়া চলাকালীন যথাযথ কার্যাবলী নিশ্চিত করতে, এবং নির্বাসন বা আটকে রাখা রোধ করতে ও মানুষকে রাষ্ট্রহীনতার হাত থেকে রক্ষা করা নিশ্চিত করার জন্য আবেদন করেন।
অসম এনআরসি প্রসঙ্গে গত সপ্তাহেই এই বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক জানায় যে "যাঁরা চূড়ান্ত তালিকায় নেই তাঁদের এখনই আটক করা হবে না এবং তাঁরা আইনের আওতায় থাকা সমস্ত বিকল্প ব্যবহার শেষ না করা পর্যন্ত আগের মতো সমস্ত অধিকারই ভোগ করতে পারবেন। এই তালিকায় বাদ পড়া ব্যক্তিদের এখনই 'রাষ্ট্রহীন' করা হবে না" ।
তবে শেষপর্যন্ত যাঁরা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিত হবেন তাঁদের অসম তথা দেশ থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে সাফ জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।