Covid-19: সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই আজ থেকে খুলে যাচ্ছে শপিং মল, হোটেল এবং ধর্মীয় স্থানগুলি
হাইলাইটস
- দেশে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা
- আজ থেকেই খুলে গেল শপিং মল, রেস্তোরাঁ ও ধর্মীয় স্থানগুলোও
- তবে করোনা সতর্কতা মেনে চলতে হবে দেশের সব নাগরিককে
নয়া দিল্লি:
করোনা ভাইরাসকে রুখতে গত প্রায় দু'মাস ধরে লকডাউন চলার পর এবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের জীবনে (Unlock 1) ফেরার চেষ্টা করছে ভারত। সব কিছু বন্ধ রেখেও সেভাবে এড়ানো যায়নি করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ, এবার তাই ওই মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে মুখোমুখি যুদ্ধ। অর্থাৎ আজ (৮ জুন) থেকেই দেশের মোটামুটি সমস্ত অফিস, শপিং মল (Malls Reopen Today), রেস্তোরাঁ, ধর্মীয় স্থানগুলো খুলে যাচ্ছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই জনসমাগম বাড়বে আর সেই সঙ্গে বাড়বে কোভিড- ১৯ আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা। তাই সতর্ক থাকতে হবে প্রত্যেককেই। ধর্মীয় স্থানগুলোতে (Religious Places Reopens Today) প্রসাদ বিতরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে। শপিং মল, রেস্তোরাঁগুলোতে একসঙ্গে যাতে বেশি মানুষ প্রবেশ করতে না পারেন তাই চালু করা হচ্ছে টোকেন সিস্টেম। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি সমস্ত অফিসেই জারি করোনা সতর্কতা, মেনে চলতে হবে কড়া নির্দেশিকা (MHA SOP Unlock 1)। এদিকে রবিবারই এই নিয়ে দেশে টানা পঞ্চম দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে ৯,০০০ এরও বেশি হল। শুধু তাই নয়, রবিবারই দেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০,০০০ এরও বেশি মানুষ ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে এই অবস্থায় করোনার সঙ্গে লড়তে গেলে যেটা সবচেয়ে আগে প্রয়োজন তা হল, দেশের মানুষের সতর্কতা অবলম্বন করা।
इन नियमों का रखें विशेष ख्याल
আজ (৮ জুন) থেকেই যেন এক নতুন যুদ্ধ শুরু। করোনা ভাইরাস মূলত যে ৫টি রাজ্যে জাঁকিয়ে বসেছে সেগুলোতে আরও চ্যালেঞ্জিং অবস্থাও শুরু আজ থেকেই। কেননা করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই খুলে গেল দেশের শপিং মল, রেস্তোরাঁ, ধর্মীয় স্থানগুলোও। খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সমস্ত অফিসও। দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী রয়েছে। সেখানে মোট ৮৫,৯৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরেই ৩০,১৫২ জন করোনা রোগী নিয়ে রয়েছে তামিলনাড়ু। দেশের রাজধানী দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত মোট ২৮,৯৩৬ জন, গুজরাটে আক্রান্ত ২০,০৯৭ জন এবং রাজস্থানে আক্রান্ত ১০,৫৫৯ জন। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মোট সংক্রমণের প্রায় ৭০ শতাংশ এবং মোট মৃত্যুর প্রায় ৭৮ শতাংশই ওই ৫ রাজ্যে। এই পাঁচটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যের পরেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ, যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজারের কাছাকাছি।
তবে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা হলেও জীবন আর কখনোই হয়তো আগের মতো স্বাভাবিক হবে না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকা মেনে তবেই শপিংমল, হোটেল এবং রেস্তোঁরা ও ধর্মীয় স্থানগুলিতে যাওয়া যাবে। অর্থাৎ করোনা সতর্কতা জারি থাকবে পুরো দমে।
কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা করোনা সতর্কতা মেনেই বিভিন্ন ব্য়বস্থা করছে রাজ্যগুলোও। এই যেমন, পঞ্জাব সরকার বলেছে শপিং মলে প্রবেশের জন্য টোকেন দেবে তারা। গুজরাটের কয়েকটি ধর্মীয় স্থানেও পুজোআচ্চার জন্যে চালু হচ্ছএ টোকেন ব্যবস্থা । সব জায়গাতেই মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব রাখার বিষয়টি।
এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছেন যে, রাজ্য সরকার পরিচালিত হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে বর্তমানে কেবল করোনা রোগীদেরই চিকিৎসায় জোর দেওয়া হচ্ছে। তবে আজ (সোমবার) থেকেই খুলে দেওয়া হচ্ছে সীমান্ত এলাকা। করোনা রোগী ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে যদি কোনও অন্য অসুখে ভোগা রোগী দিল্লির বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে চান তবে তা পারবেন।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক আজ অর্থাৎ ৮ জুন থেকেই ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার অধীনে থাকা ৮২০ টি স্মৃতিস্তম্ভ খোলারও অনুমোদন দিয়েছে। কর্নাটক সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মেনে সেরাজ্যের ধর্মীয় স্থানগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছে। পাশাপাশি, প্রসাদ বিতরণ এবং বিশেষ উপাসনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যদিও গোয়া সরকার আরও কিছু দিনের জন্যে সেখানকার ধর্মীয় স্থান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারও এখনও ধর্মীয় স্থানগুলো খোলার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
দিল্লির জামা মসজিদের শাহী ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারী বলেছেন, আজ (সোমবার) থেকেই ঐতিহাসিক ওই মসজিদটির দ্বার উন্মুক্ত করা হচ্ছে। তবে সেখানে প্রার্থনা করতে আসা সকলকেই নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। প্রার্থনা করতে হবে খালি মেঝেতেই, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত কার্পেট। প্রয়োজনে কোনও ব্যক্তি বাড়ি থেকে নিজের জন্যে প্রার্থনা করার আসন নিয়ে আসতে পারেন।
দিল্লি শিখ গুরুদ্বারা ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মনজিন্দর সিং সিরসা বলেছেন যে সিসগঞ্জ, রাকবগঞ্জ এবং বাংলা সাহিব গুরুদ্বারাতেও বিধিনিষেধ মেনে, করোনা সতর্কতা অবলম্বন করে তবেই ভক্তদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। সিরসা বলেছেন, "সমস্ত ক্যাম্পাসকে নিয়মিতভাবে সংক্রমণ মুক্ত করা হচ্ছে। একে অপরের মধ্যে দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রবেশ ও প্রস্থান দ্বারের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
যদিও দিল্লির গির্জা এখনই খোলা হচ্ছে না। বিশপ অনিল কৌটো বলেছেন যে রোমান ক্যাথলিক চার্চের অধীনে থাকা গির্জাগুলো আরও কিছুদিন বন্ধ রাখা হবে।
করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়তে এবার প্রত্যেককেই সতর্কতা অবলম্বন করেই আর্থিক ও সামাজিক কাজকর্ম শুরু করতে হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে রবিবারই এই নিয়ে দেশে টানা পঞ্চম দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একদিনে ৯,০০০ এরও বেশি হল। শুধু তাই নয়, রবিবারই দেশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০,০০০ এরও বেশি মানুষ ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৯৯৮৩ জন। সব মিলিয়ে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত ২,৫৬,৬১১ জন।
Post a comment