ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে উন্নাও দুর্ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেন সিবিআই আধিকারিকরা
লখনউ: উন্নাও দুর্ঘটনার তদন্তে নয়া মোড়। ঘাতক ট্রাকের নম্বর প্লেটে কেন কালো আঁচড় ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রহস্য উদঘাটনের চেষ্টায় সিবিআই (CBI) গোয়েন্দারা। ট্রাকটির মালিকের দাবি, ইএমআই (EMI payments) দিতে দেরি হওয়ার কারণে ওই গাড়ির নম্বর প্লেটে কালো রং লাগিয়ে দিয়েছিল অর্থপ্রদানকারী সংস্থা। ট্রাক মালিকের দাবি অর্থ প্রদানকারী সংস্থাটি কানপুরে অবস্থিত। তবে, ঘাতক ট্রাক মালিকের দাবিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন অর্থপ্রদানকারী সংস্থার এক এজেন্ট। তাঁর কথায়, "সময়মতো কিস্তি (EMI payments) দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য কাউকেই কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। ওই ট্রাকের মালিক ইএমআই (EMI payments) দিতে প্রথমে ব্যর্থ হলেও পরে তা পরিশোধ করে দিয়েছিলেন। আমাদের কারও পক্ষ থেকে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি।" এজেন্ট আরও বলেন, "তিনি এর আগেও এখান থেকে টাকা নিয়ে তার গাড়িগুলি কিনেছিলেন। গাড়িগুলির নো-অবজেকশন শংসাপত্রও রয়েছে। বর্তমানে দুটি গাড়িও আমাদের সংস্থা থেকে লোন নিয়েই কিনেছেন।"
সময়সীমার মধ্যেই কুলদীপ সেনগারের সাক্ষাৎপ্রার্থীদের বিবরণ চাইল সিবিআই
প্রশ্ন উঠছে কেন তাহলে ঘাতক ট্রাকের মালিক অন্য কথা বলছেন। তাঁর উপর কি কোনও প্রভাব রয়েছে? নাকি অন্য কোনও কারণেই অর্থপ্রদানকারী সংস্থাকে সামনে রেখে সাফাই খোঁজার চেষ্টা করছেন? তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। গত রবিবার, উন্নাও থেকে বেসরকারি গাড়িতে রায়বরেলি যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা কিশোরী (Unnao rape survivor) ও তার পরিবারের বেশ কয়েকজন। মাঝপথেই ঘটে দুর্ঘটনা। নির্যাতিতা (Unnao rape survivor) যে গাড়িুতে ছিলেন সেটিকে ধাক্কা মারে একটি ট্রাক। মৃত্যু হয় নির্যাতিতার দুই আত্মীয়ের। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই কিশোরীকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। আহত হন তাদের আইনজীবীও। তদন্তে নেমে দেখা যায় ঘাতক ট্রাকের নম্বর প্লেটটি কালো আঁচড় দেওয়া। ট্রাকের নম্বর বোঝা যাচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নিয়েই এই বিষয়ে রহস্যভেদে নামেন গোয়েন্দারা।
সিসিটিভি (CCTV) ফুটেজে দেখা যায়, নম্বর প্লেট অস্পষ্ট হলও টোলপ্লাজা পর্যন্ত পৌঁছতে ট্রাকটিকে কেউই বাধা দেয়নি। কেন্দ্রীয় সংস্থার গোয়েন্দাদের কাছে পুলিশ এই আচরণের কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি এখনও। এই দুর্ঘটনার দিন দশেক আগেই উন্নাওয়ের নির্যাতিতা ও তার পরিবারের তরফে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি পাঠানো হয়। জানানো হয়েছিল, অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার (Kuldeep Sengar) ও তার দলবল তাদের হুমকি দিচ্ছে। তাদের জীবন সংশয়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে যেন কোর্ট প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সে চিঠি সময় মতো পৌঁছায়নি প্রধান বিচারপতির কাছে। এরপরই ঘটে দুর্ঘটনা। অভিযোগ, অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক ধর্ষণ মামলার প্রমাণ লোপাট করতেই এই ষড়যন্ত্র করেছেন।
"ভাই কুলদীপের খারাপ সময় যাচ্ছে...": উন্নাও ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রসঙ্গে বললেন বিজেপি বিধায়ক
রবিবার কেন পুলিশ উন্নাওয়ের নির্যাতিতাদের সঙ্গে ছিল না। নির্যাতিতার বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্মী এনডিটিভিকে জানায়, গাড়িতে জায়গা না হওয়ায় তাদের সেখানেই থেকে যেতে বলা হয় নির্যাতিতার পরিবারের তরফে। কর্তব্যে গাফিলতির কারণে ইতিমধ্যেই উচ্চপদস্থ এক অফিসার সহ তিন জন পুলিশ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে যোগী প্রসাসন।
সিবিআই তদন্ত শুরু করেই জেলবন্দি বিধায়ক কুলদীপ সিং (Kuldeep Sengar) সেঙ্গারের সঙ্গে কারা জেলে দেখা করতে আসতো সেই তালিকা চেযে পাঠিয়েছে। শুক্রবারই দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘঠনার পুননির্মান করেছে গোয়েন্দারা। বাড়ানো হয়েছে তদন্তকারীর সংখ্যাও। উন্নাওয়ের নির্যাতিতাকে সিআরপিএফ নিরাপত্তা ও ২৫ লক্ষ টাকা দিতে যোগী সরকারকে নির্দেষ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।