Unnao Rape: নিগৃহীতা পুলিশকে জানান গায়ে আগুন দেওয়ার আগে তাঁকে মারধরও করা হয় (ফাইল চিত্র)
হাইলাইটস
- সফদরজং হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর
- আকাশপথে তাঁকে উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লি আনা হয়
- আদালতে যাওয়ার পথে তাঁর উপর হামলা হয়
নয়া দিল্লি: এবার আর শুধু ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না ধর্ষকরা, যেন-তেন-প্রকারেণ ধর্ষিতাকে মেরে ফেলে প্রমাণ লোপাট করতে চাইছে তাঁরা। ঠিক এমনটাই হল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Prades) উন্নাওয়ের ২৩ বছরের এক তরুণীর ক্ষেত্রে। মার্চ মাসে তিনি পুলিশে অভিযোগ জানান যে তাঁকে ধর্ষণ (Unnao Rape) করেছে ২ ব্যক্তি, সেই অভিযোগ অনুযায়ী এক অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ, যদিও অধরা থাকে অন্যজন। গত বৃহস্পতিবার উন্নাওয়ের (Unnao) সেই নিগৃহীতা যখন আদালতে যাচ্ছিলেন, সেই সময়েই তাঁর উপর হামলা করে এক অভিযুক্ত। তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় তাঁকে। ৯০ শতাংশ পুড়ে যান ওই ধর্ষিতা, আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। কিন্তু এত কিছুর পরেও হল না শেষ রক্ষা। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ নাগাদ হাসপাতালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
অথচ ভয়ঙ্কর ভাবে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর তাঁকে প্রাণে বাঁচাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে আকাশপথে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়। ভর্তি করা হয় দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। সফদরজং হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান (বার্নস অ্যান্ড প্লাস্টিক) ডঃ শলভ কুমার বলেন, "রাত ১১ টা ১০ নাগাদ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং আমরা তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, কিন্তু তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি এবং রাত ১১:৪০ মিনিটে মারা যান তিনি।"
উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণীর গায়ে আগুন দিল অভিযুক্তরা, আকাশপথে আনা হল দিল্লিতে
তবে মারা যাওয়ার আগে ওই মহিলা পুলিশকে জানান যে উন্নাওয়ে তাঁর গ্রামের কাছেই ধর্ষণে অভিযুক্ত ২ ব্যক্তি সহ মোট ৫ জন তাঁকে আক্রমণ করে। প্রথমে তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে তাঁরা, এমনকি ছুরির ঘায়ে ঘায়েল করারও চেষ্টা করা হয় তাঁকে। পরে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। জানা গেছে, ওই ধর্ষিতা তাঁর দায়ের করা ধর্ষণের মামলার শুনানির জন্য়েই সেই দিন আদালতে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁকে রেলস্টেশনের কাছে ঘিরে ফেলে ওই হামলা চালায় ৫ জন।
তবে নির্যাতিতা মারাত্মক ভাবে পুড়ে যাওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালে নেওয়ার সময় পুরোপুরি সচেতন ছিলেন, সেখানেই তিনি পাঁচজন আক্রমণকারীকে শনাক্ত করে পুলিশকে একটি বিবৃতি দেন।
"ভোর ৪টের সময় আমি স্থানীয় রেলস্টেশনে রায় বরেলি যাওয়ার জন্যে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলাম। সেই সময়েই ওই ৫ জন (তিনি নাম দিয়েছিলেন) আমার জন্য ওৎ পেতে অপেক্ষা করছিল। ওরা আমাকে ঘিরে ধরে প্রথমে লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং আমার ঘাড়ে ছুরি দিয়েও আঘাত করে। তারপর ওরা আমার গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়", উন্নাওয়ের হাসপাতালের বেডে শুয়ে পুলিশকে ওই বিবৃতি দেন নিগৃহীতা।
হায়দরাবাদ হোক বা উন্নাও, দু'টি ঘটনাই ‘লজ্জাজনক': মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
উন্নাওয়ের ধর্ষিতা তরুণী বলেন, "আমার চিৎকারে সেখানে লোক জড়ো হয় এবং তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন"।
হামলাকারীদের মধ্যে ছিল ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত শিবম ত্রিবেদীও, যাঁকে পাঁচ দিন আগে এই মামলায় জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ধর্ষণের আরেক অভিযুক্ত শুভম ত্রিবেদীও ওই হামলাকারীদের মধ্যে ছিল বলে জানা গেছে। ৫ জন হামলাকারীকেই তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনার পর কীভাবে ধর্ষণকারীকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে । শিবম ত্রিবেদী ও প্রতিবেশী শুভম ত্রিবেদীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেন উন্নাওয়ের নিগৃহীতা, তবে এই ঘটনায় প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকাও।
দেখে নিন এই খবরগুলিও: