Read in English
This Article is From Sep 03, 2019

“ছবি তুলুন, ভিডিও করছেন কেন?” মিড ডে মিলে নুন রুটি প্রসঙ্গে সাংবাদিককে আক্রমণ প্রশাসনের

স্থানীয় হিন্দি দৈনিক জনসন্দেশ টাইমসের (Jansandesh Times) সাংবাদিক পবন জয়সওয়ালের বিরুদ্ধে ভিডিওটির শুটিংয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Advertisement
অল ইন্ডিয়া ,

উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে একটি স্কুলে শিশুদের নুন রুটি খাওয়ানো হচ্ছে

লখনউ:

উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলে শিশুদের মিড ডে মিলে রুটি ও নুন খাওয়ানোর ভিডিও প্রকাশ্যে আনার অভিযোগ উঠিয়ে সাংবাদিককেই পালটা দোষারোপ করার ঘটনার মধ্যেই ফের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তাঁর মন্তব্যে বিতর্ক আরও বাড়িয়েছেন। ২২ আগস্ট মির্জাপুরের (Mirzapur) স্কুলে তোলা একটি ভিডিওতে দেখা যায় ছোট্ট শিশুদের কেন্দ্রীয় সরকারের মিড ডে মিল (midday meal) প্রকল্পের অধীনে দুপুরের খাবার হিসেবে নুন আর রুটি খেতে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় হিন্দি দৈনিক জনসন্দেশ টাইমসের (Jansandesh Times) সাংবাদিক পবন জয়সওয়ালের (Pawan Jaiswal) বিরুদ্ধে ভিডিওটির শুটিংয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রাম প্রধানের একজন প্রতিনিধিকেও এই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার বলছে, এই প্রতিনিধির উচিৎ ছিল, স্কুলে সাংবাদিককে না ডেকে শাকসবজির ব্যবস্থা করা! 

Mid Day Meal: শিশুদের পাতে নুন-রুটি! ছবি ছড়ানোয় মামলা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে

মির্জাপুরের শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা অনুরাগ প্যাটেল (Anurag Patel) ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা ও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেন সাংবাদিকদেরই বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন যে, ওই সাংবাদিক ইচ্ছাকৃতভাবে ভিডিওটি তৈরি করেছেন রাজ্য সরকারকে বদনাম করার জন্য। এখানেই শেষ নয়, অনুরাগ আরও বলেন, “উনি তো একটি সংবাদপত্রে লেখেন, ছবি তুলতে পারতেন ভিডিও করার কী দরকার!”

Advertisement

ওই কর্তা আরও বলেন, “সংবাদ পরিবেশনের অন্য উপায় আছে। আপনি যদি অডিওটি শুনে থাকেন তবে বুঝবেন কেউ (গ্রাম প্রধানের প্রতিনিধি যাকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে) তাকে ফোন করছে এবং বলছে যে এখানে এসে একটি ভাইরাল ভিডিও করুন।”

অডিও শুনে অবশ্য একবারও ভাইরাল শব্দটি পাওয়া যায়নি। তাহলে এমন কেন বলছেন অনুরাগ? কর্মকর্তার জবাব: “হয়তো ‘ভাইরাল' বলেননি তবেএকটি ভিডিও বানাতে তো বলেছিলেন। আপনি প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, আপনি ছবি তুলতে পারতেন, ছাপাতে পারতেন, তা তো আপনি করেননি। এজন্যই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছি।”

Advertisement

Chandrayaan 2: চন্দ্রযান-২ থেকে আলাদা হয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম, শুরু অপেক্ষা

অনুরাগ প্যাটেল আরও ব্যাখ্যা দেন, এর আগে বাচ্চাদের ভাত এবং নুন দেওয়া হত। তাঁর কথায়, “খিচুড়িতে নুন এবং ভাত তো দেন, তাই না? ডালও যোগ করা হয়। তবে বেশ কয়েকদিন তা হয়নি।" সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নিয়ে শতাধিক সাংবাদিক মির্জাপুর কালেক্টরেট কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান মঙ্গলবার। মজার বিষয় হল, যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এখন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন এর আগে তিনিই সাংবাদিকদের বলেন যে, ওই দিন বাচ্চাদের খাবার দেওয়া নিয়ে দু'টি পৃথক তদন্ত হয়েছিল এবং তাতে স্পষ্ট যে এই সাংবাদিক সত্যি কথাই তুলে ধরেছেন।

Advertisement

এমনকি, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরদিনই জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনুরাগ প্যাটেল বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করেছিলেন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধায়ককেও বরখাস্ত করা হয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানান যে তিনি তৃতীয় তদন্তের আদেশ দিয়েছেন, যাতে ওই সাংবাদিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। উত্তর প্রদেশের মিড ডে মিল কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে একটি বিস্তৃত মেনু সাজানো রয়েছে, যার মধ্যে ডাল, ভাত, রুটি এবং শাকসবজি রয়েছে। খাবারের তালিকা অনুযায়ী ফল ও দুধ নির্দিষ্ট দিনে শিশুদের জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তিন পৃষ্ঠার এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভিডিওটি শ্যুট করার দিন স্কুলে কেবলমাত্র রুটিই রান্না হয়েছিল। তাতে আরও বলা হয়েছে যে, গ্রাম প্রধানের প্রতিনিধির উচিৎ ছিল কোনও সংবাদদাতাকে না খবর দিয়ে আগে শাকসবজির ব্যবস্থা করা। যদিও এই বিষয়ে ওই সাংবাদিকের পাশেই দাঁড়িয়েছেন তাঁর সহকর্মীরা। “আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি, কারণ আমাদের প্রতিবেদক জনসমক্ষে দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে স্কুলের শিশুদের রুটি এবং নুন খাওয়ানো হচ্ছে। তিনি যে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়েছেন তা ভাইরাল হয়েছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ঘটনাটি সত্য। সত্যকে প্রকাশ করা কি ভুল?” প্রশ্ন তুলেছেন জনসন্দেশ টাইমসের জেলা প্রধান সঞ্জয় দুবে।

Advertisement