রবিবার উন্নাও ধর্ষণের নিগৃহীতার গাড়িকে ধাক্কা মারে একটি চলন্ত ট্রাক
লখনউ: উন্নাও (Unnao) ধর্ষণ কাণ্ডে নিগৃহীতা (Unnao Rape Survivor Critical) ও তাঁর আইনজীবী, দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রয়েছেন তাঁরা, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রবিবার গাড়ি দুর্ঘটনার পর তাঁদের কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে (King George Medical University hospital) ভর্তি করা হয়। ওই দিনের দুর্ঘটনায় মারা যান নিগৃহীতার পরিবারের দুই মহিলা সদস্যও। ঘটনায় কুলদীপ সিং সেঙ্গারের বিরুদ্ধে (Kuldeep Singh Sengar) খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে নিগৃহীতার পরিবার। "দুজনেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুজনকেই ভেন্টিলেটারে রাখা হয়েছে। বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও তাঁদের শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। ওনাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল করছে", সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের এক মুখপাত্র।
উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে বহিষ্কার বিজেপির
আবার সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলার সময় ওই দুজনের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক বলেন, "ধর্ষণের নিগৃহীতার অবস্থা আপাতভাবে স্থিতিশীল হলেও তাঁকে এখনও ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই (Unnao Rape Survivor Critical) রাখতে হয়েছে "।
তবে আশার কথা এই যে, ওই কিশোরীর সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে তাঁর মাথায় বড়সড় কোনও চোট লাগেনি। প্রতিদিন ঘড়ি ধরে একদল চিকিৎসক তাঁর দিকে নজর রাখছে বলেই জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ (King George Medical University hospital)।
রবিবার, একটি গাড়িতে করে রায়বেরিলির দিকে যাচ্ছিলেন ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবার এবং তাঁদের আইনজীবী। সেই সময়ই তাঁদের গাড়িটিকে উল্টোদিক থেকে আসা একটি লরি সজোরে ধাক্কা মারে। ওই লরিটির নম্বর প্লেট কালো কালি দিয়ে ঢাকা ছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নিগৃহীতার দুই কাকিমার এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নিগৃহীতা ও তাঁর আইনজীবীকে।
এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই, ইতিমধ্যেই বিজেপির বহিষ্কৃত বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার (Kuldeep Singh Sengar) সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে তাঁরা। ২০১৭ সালে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত একবছর ধরে জেলবন্দি রয়েছেন কুলদীপ সিং সেঙ্গার। ইতিমধ্যেই কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে নিজেদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডের ৪টি মামলাকে উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে । প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে লেখা মেয়েটির চিঠি, যেখানে ওই দুর্ঘটনার আগেই সে জানিয়েছিল, তাঁদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, সেটির পরিপ্রেক্ষিতেই এই পদক্ষেপ, এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
আদালত সিবিআইয়ের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে এই মামলার সম্পর্কে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের এপ্রিলে কুলদীপ (Kuldeep Singh Sengar) গ্রেফতার হওয়ার পরে গত এক বছরে মামলা সেভাবে না এগোনোর প্রসঙ্গটিও উঠে এসেছে।
উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর প্রশ্নে নিরুত্তর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
ওই নিগৃহীতার অভিযোগ, ২০১৭ সালের জুন মাসে এক আত্মীয়র সঙ্গে অভিযুক্ত বিধায়কের বাড়িতে চাকরির জন্য গেলে তাকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত বিধায়ক।
এক বছর পরেও নানা জায়গায় আবেদনের পরে কোনও বিচার না পেয়ে ওই মেয়েটি ও তার মা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে বিষয়টি জাতীয় সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে।
মেয়েটির বাবা ক'দিন পরে পুলিশের কাছে আটক থাকার সময় মারা যান। ময়না তদন্ত থেকে জানা যায়, তাঁকে প্রবল মারধর করা হয়েছিল। যেদিন মুখ্যমন্ত্রী বাড়ির সামনে প্রতিবাদে সামিল হন মেয়েটি ও তার মা, তার পরের দিনই তার বাবার মৃত্যু হয়।