মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, ইরানই বিমানটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
হাইলাইটস
- ইউক্রেনের বিমান দুর্ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করছে আমেরিকা
- তাদের সুরে সুর মিলিয়েছে কানাডা ও ব্রিটেন
- ইরান এই অভিযো অস্বীকার করে জানিয়েছে, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন
তেহরান: আমেরিকা (US) ও ইরানের (Iran) মধ্যে উত্তেজনার আঁচ ক্রমেই বাড়ছে। গত শুক্রবার বাগদাদে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন জেনারেল কাসেম সোলেমানি (Qasem Soleimani) ও আরও কয়েকজন। প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছিল ইরান। তারপরই মঙ্গলবার রাতে ইরাকের দু'টি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে তারা। এরপর বুধবার রাতেও হামলা চালায় ইরান। বাগদাদের গ্নিন জোনে দু'টি রকেট নিক্ষেপ করে। হামলায় কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। এরই পাশাপাশি ওই দিনই, অর্থাৎ বুধবার তেহরান থেকে আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউক্রেনের এক যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৭৬ জন যাত্রীর। আমেরিকার চাঞ্চল্যকর দাবি, ইরানই ভ্রান্তিবশত ওই বিমানটিকে ধ্বংস করেছে।
তেহরানে দুর্ঘটনার কবলে ইউক্রেনের বিমান, সমস্ত যাত্রীরই মৃত্যুর আশঙ্কা
নিউজ উইক, সিবিএস ও সিএনন জানিয়েছে, উপগ্রহ, রাডার ও বৈদুতিন তথ্যও ইঙ্গিত করছে, ইরান নিক্ষিপ্ত ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ওই বিমান দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমার সন্দেহ রয়েছে। হয়তো বিমানটি কোনও স্পর্শকাতর এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। তখনই কেউ ভুল করে কিছু করে ফেলেছে। কেউ কেউ বলছেন বটে, প্রযুক্তিগত গণ্ডগোল। কিন্তু আমি তা মনে করছি না। কোনও বড় ভুল হয়েছে।'' এভাবেই নাম না করেও ইরানকেই বিঁধেছেন ট্রাম্প।
বুধবার রাতে বাগদাদের গ্রিন জোনে রকেট হামলা ইরানের
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও এই ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, একাধিক গোয়েন্দা সূত্রের কাছ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী ইরান ওই বিমানটিতে হামলা চালিয়েছিল। প্রসঙ্গত, ওই বিমানে ৬৩ জন কানাডার নাগরিক ছিলেন। ট্রুডো জানাচ্ছেন, গোয়েন্দা বিভাগের মতে, ইরানের ভূমি থেকে আকাশে ওড়া ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল বিমানটিকে।
তিনি জানাচ্ছেন, কানাডার নাগরিকরা এবিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং তাঁদের এর উত্তর চাই। প্রধানমন্ত্রীর মতে, ভ্রান্তিবশ্ত বিমানটিকে ইরান আক্রমণ করে থাকতে পারে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও এমন দাবি করেছেন। তাঁর মতেও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই বিমানটি ধ্বংস হয়ে যায়। তবে তিনিও মনে করছেন, এই হানা ভুল করে করেছে ইরান। পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
ইরান অবশ্য এমন দাবিকে অস্বীকার করেছে। তাদের মতে, এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন। তেহরান বিমান বন্দর থেকে এখনও বহু বিমান উড়ছে। তারা কানাডাকে জানিয়েছে, এবিষয়ে কোনও তথ্য তাদের কাছে থাকলে তা জানাতে। ইরানের মন্ত্রী আলি আবেদজাদেহ বলেছেন, ঘটনাস্থলে পাওয়া ব্ল্যাক বক্স থেকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রয়োজনমতো তথ্য যাচাই করতে ফ্রান্স বা অন্য কোনও দেশের সহায়তা নেওয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ইউক্রেন বিষয়টির তদন্তের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের দ্বারস্থ হয়েছে। সেদেশের ৪৫ সদস্যের একটি দল তেহরানে গিয়েছে। এ বিষয়ে কোনও দেশের কাছে নিশ্চিত তথ্য থাকলে তা তাদের জানানোর আবেদন করেছে ইউক্রেন।