শোকস্তব্ধ তরুণ মজুমদার, বন্ধু হারালেন লিলি চক্রবর্তী
কলকাতা: ৮৯ বছরে এসে পরপর আঘাত। তাঁর থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট এবং তাঁর হাতে গড়া দুই জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল, সন্তু মুখোপাধ্যায় (Santu Mukherjee) তাঁর আগেই চিরবিদায় নিলেন। সেই আঘাত মারাত্মক ভাবে বিঁধেছে বহু জনপ্রিয় ছবির প্রবীণ পরিচালক তরুণ মজুমদারকে (Tarun Majumdar)। মুঠোফোনে ধরতেই গলার স্বরে ঝরেছে সেই ব্যথা, যন্ত্রণা। শুরুতেই জানালেন, তাঁর ছবি দিয়েই অভিনয়ে হাতেখড়ি তাপস, সন্তুর। তাপসকে তিনি এনেছিলেন দাদার কীর্তি-তে। সন্তু তাঁর ছবি সংসার সীমান্তে-তে প্রথম অভিনয় করলেও আগে মুক্তি পায় তপন সিংহের রাজা। এতখানি বয়স পেরিয়ে এই আঘাতে তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। তিনি নির্বাকদ্রষ্টা হিসেবে সবার চলে যাওয়া দেখছেন। সন্তু মুখোপাধ্যায় কি তাঁর প্রতিভার সঠিক স্বীকৃতি পেয়েছেন? প্রশ্ন করতেই আহত কণ্ঠে পাল্টা জবাব, চলে যাওয়ার পর এই প্রশ্নের উত্তরের আর কী প্রয়োজন! অভিনেতা তো সব প্রশ্নের উত্তরের ঊর্ধ্বে।
‘সংসার সীমান্তে' পৌঁছে থামলেন ‘রাজা', স্তব্ধ সাধের ‘হারমোনিয়াম‘
সন্তু মুখোপাধ্যায় নেই, গতকাল রাতে এই দুঃসংবাদ শোনেননি আরেক প্রবীণ অভিনেতা লিলি চক্রবর্তী (Lily Chakraborty)। সকালে ফোন খুলতেই সোশ্যালে দেখেন, দীর্ঘদিনের অভিনেতা-বন্ধুকে হারিয়েছেন তিনি। কথার শুরুতেই অভিনেতার আক্ষেপ, 'খুব ভালো বন্ধুকে হারালাম। সন্তুকে চিনি ওর প্রথম ছবি থেকে। আমাকে লিলু বলে ডাকত। কক্ষোণো লিলি বলত না। দেখা হলেই বলত, কী রে লিলু! আজ কী খেলু? আমিও ওকে তুই-তুকারি করতাম। খুব ভালোবাসত বন্ধু হিসেবে। একসঙ্গে প্রচুর কাজ করেছি। ফলে, বন্ধুত্বটা আরও পাকা হয়েছে। বড়পর্দার পাশাপাশি নাটকও করেছি আমরা। সেইসময় রংমহল থিয়েটারে রাজদ্রোহী বলে একটা নাটক হত। ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল। সন্তু ছিল কল্যাণী মণ্ডল। পর্দাতে যেমন থিয়েটারেও তেমনই সমান দক্ষ ছিল ও। প্রচুর কল শো-ও করেছি একসঙ্গে। সারাক্ষণ জমিয়ে রাখত আমাদের। ভীষণ মজার কথা বলত। দিলখোলা মনের সন্তুর পরিণতি এই হবে---ভাবতে পারিনি। স্ত্রী গোপা চলে যাওয়ার পর ভীষণ মুষড়ে পড়েছিল। তখন থেকেই একটু একটু করে ভাঙতে শুরু করে মানসিক দিক থেকে।
চলে গেলেন অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়
জানুয়ারিতে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সন্তু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তখন প্রথম শুনি, ক্যান্সার হয়েছে ওর। অভিনেতা আসবে অভিনেতা যাবে। কিন্তু যাঁরা চলে যাচ্ছেন তাঁদের অভাব পূরণ হওয়ার নয়। কিছুদিন আগেই তাপস লে গেল। এবার সন্তু। টালিগঞ্জ পাড়া আস্তে আস্তে যেন ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।