কলকাতা: বাংলার সংস্কৃতির জগতে মৃত্যুর মিছিল অব্যাহত। আজ প্রয়াত হলেন কবি ও লেখক দিব্যেন্দু পালিত। বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। বুধবার যাদবপুর অঞ্চলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে সেখানেই প্রয়াত হন তিনি। ১৯৩৯ সালের মার্চ মাসে বিহারের ভাগলপুরে জন্ম হয় তাঁর। প্রথম গল্প প্রকাশ পায় মাত্র ১৬ বছর বয়সে। ১৯৫৫ সালে। আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয়তে। সেই শুরু। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। গদ্যের মতোই তাঁর কলম সচল ছিল পদ্য লেখাতেও। বাবার মৃত্যু পর কলকাতায় চলে আসেন ১৯৫৮ সালে। কর্মজীবন শুরু হয় হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ডের সহকারী সম্পাদক হিসেবে। পরে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত পেশার সঙ্গেও যুক্ত হন তিনি।
১৯৮৪ সালে তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস 'সহযোদ্ধা'র জন্য পান আনন্দ পুরস্কার। ১৯৯০ সালে বঙ্কিম পুরস্কার পান 'ঢেউ' উপন্যাসের জন্য এবং ১৯৯৮ সালে 'অনুভব' উপন্যাসের জন্য পান সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন 'কৃত্তিবাস' গোষ্ঠীর সঙ্গে। বাংলাভাষার ছোটগল্পে তাঁর বুড়ো আঙুলের ছাপ প্রবলভাবে বিদ্যমান। বেশ কয়েকটি গল্প এবং উপন্যাস নিয়ে বাংলা সহ একাধিক ভাষায় হয়েছে চলচ্চিত্র ও নাটক। তাঁর একটি ছোটগল্প অবলম্বনে পরিচালক তপন সিনহা তৈরি করেন কালজয়ী ছবি 'অন্তর্ধান'।
তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে টুইট কেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের অধিকর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমরা গত বছরে হারিয়েছি রমাপদ চৌধুরী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীদের। এই বছরের শুরুতেই হারালাম দিব্যেন্দু পালিতকে। আমাদের একের পর এক অভিভাবকরা চলে যাচ্ছেন"।
লেখালেখি ইদানিং অনেক কমিয়ে দিয়েছিলেন। বয়সোজনিত অসুস্থতার কারণে। তবু, সচল ছিল মন। সেই মনটি নিয়েই শীতের দুপুরে শহর ছেড়ে চলে গেলেন 'হঠাৎ একদিন'-এর লেখক।