জনশূন্য পথঘাট। প্রায় অদৃশ্য গাড়িঘোড়াও। করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) উৎপত্তিস্থল চিনের (China) শহর উহানের (Wuhan)এখনকার চেহারাটা এরকমই। সেখান থেকে সম্প্রতি ফেরা মহারাষ্ট্রের এক পড়ুয়া তেমনটাই জানাচ্ছেন। উহানের পার্শ্ববর্তী এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিবিএস নিয়ে পড়ছেন আশিস কুর্মি। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর করোনা ভাইরাসের প্রথম কেস ধরা পড়ে। কিন্তু আশিস করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তিনি জানাচ্ছেন, প্রাথমিক ভাবে শহরের পথেঘাটে চলাফেরায় কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। কিন্তু ক্রমে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করতেই শুরু হয় নিষেধাজ্ঞা।
দিল্লিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ১, সব মিলিয়ে ৩১, আতঙ্কে বন্ধ স্কুল: ১০ তথ্য
ABP Majha-কে বৃহস্পতিবার রাতে আশিস জানিয়েছেন, ‘‘২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম ভাইরাস আক্রান্তকে চিহ্নিত করা হয় ৮ ডিসেম্বর। কিন্তু আমরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগে এর সম্পর্কে জানতে পারিনি।''
"টালমাটাল হচ্ছে" ভারত, দেশকে সামলান প্রধানমন্ত্রী, মোদিকে পরামর্শ মনমোহনের
তিনি আরও জানাচ্ছেন, ‘‘উহানের রাস্তায় মৃতদেহের সারির যে সব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তা ফেক। আমি ভারতে ফেরার পর এই ভিডিওগুলি সম্পর্কে জানতে পারি। শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার পদ্ধতি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে চালু হয়। আমরা স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াতাম। দোকানবাজার, বন্ধুর বাড়ি যেতাম। কিন্তু সেটা ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারপর থেকে ঘোষিত হল লকডাউনের বিষয়টি। আমাদের চলাফেরাও বন্ধ হয়ে গেল।''
আশিস জানিয়েছেন, তাঁদের সকলকে বাড়ির মধ্যে বন্দি থাকতে হয়েছিল। শিক্ষকরা তাঁদের খেয়াল রাখতেন। যতদিন তাঁরা ওই চত্বরে ছিলেন, চিনা নাগরিকদের অনুমতি ছিল না সেখানে প্রবেশের। পরে পরিস্থিতি খারাপ হলে, তাঁদের মাস্ক সরবরাহ হয়। নিয়মিত পরীক্ষা করত শারীরিক অবস্থার। এরপরই আশিসরা সিদ্ধান্ত নেন দেশে ফিরে আসার। কিন্তু তখনই তাঁরা জানতে পারেন উহান বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এরপর বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস সব বন্দোবস্ত করে এবং একটি বাস তাঁদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেয়।
ভারতে পৌঁছনোর পরে ১৪ দিন তাঁদের কোয়ারান্টাইন করে রাখা হয়। তারপর লাতুর জেলায় নিজের বাড়িতে ফেরার অনুমতি পান আশিস।
কতটা ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস? আশিস জানাচ্ছেন, ‘‘করোনা ভাইরাসের মৃত্যুহার ১৫ বছর আগে চিনে ছড়িয়ে পড়া সার্স ভাইরাসের থেকে অনেক কম।''
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত ওই ভাইরাসের প্রকোপে মৃতের সংখ্যা ৩,০৪২।