নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে উত্তাল রাজধানী
নয়া দিল্লি: দেশের উত্তর-পূর্বাংশ ছেড়ে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের আগুন ছুঁল রাজনীতির খাসতালুক দিল্লিকেও। রবিবার দুপুরে দিল্লি দক্ষিণে (South Delhi) নয়া আইনের প্রতিবাদ সমাবেশে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন Jamia Millia Islamia-র পড়ুয়ারা। দেখতে দেখতে সেই প্রতিবাদ বড় আকার নেয়। শিক্ষার্থীদের এই সমাবেশে যোগ দেয় জনতাও। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে দিল্লি দক্ষিণ প্রশাসন। পড়ুয়াদের ওপর লাঠিচার্জও করা হয়েছে বলে খবর।
অসমে বিজেপির জোটসঙ্গীর মতবদল! সংসদে সমর্থনের পর এখন নাগরিক আইনের বিরোধিতা
হিংসা যাতে শহরের অন্য অংশে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ইতিমধ্যেই ওখলা আন্ডারপাস থেকে সরিতা বিহার পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যান চলাচল। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে শহরের নিউ ফ্লেন্ডস কলোনি। বিক্ষোভের ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে দিল্লি-মথুরা রোড, বদরপুর, আশ্রমচকেরও। কীভাবে খোদ রাজধানীতে এত বড় আকার নিল প্রতিবাদ সমাবেশ? বিভিন্ন মহল থেকে উঠে আসা এই প্রশ্নের জবাবে দিল্লি পুলিশের যুক্তি, তাদের ধারণা ছিল ১০০ থেকে ২০০ জনের মতো শিক্ষার্থীর জমায়েত হবে বিক্ষোভে। পড়ুয়াদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ যোগদানে তার সংখ্যা যে হাজার খানেকেরও বেশি হবে, বোঝা সম্ভব হয়নি ।
এদিকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জামিয়া মিলিয়ার এক শিক্ষার্থী মিরান হায়দারের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের ভেতরেই চলছিল তাঁদের প্রতিবাদ সমাবেশ। আচমকাই পুলিস লাঠিচার্জ করায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফুঁসে ওঠে জনতাও। দেখতে দেখতে প্রতিবাদ সমাবেশ পরিণত হয় বিশাল বিক্ষোভে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন জামিলা মিলিয়ার উপাধ্যক্ষ নাজমা আখতার। তিনি ছাত্রদের অনুরোধ করেন শান্তি বজায় রাখার জন্য। একই সঙ্গে বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরে পা রাখলে তিনি কারোরই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারবেন না। ফলে, পড়ুয়ারা যেন ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ না দেখায়। তিনি আরও জানান, এমন অশান্তির মুহূর্তে যে বা যারা ক্যাম্পাসের বাইরে পা রাখবে তার সুরক্ষার দায়িত্ব তার নিজের।
‘‘কারা হিংস্র পোশাক দেখেই বোঝা যায়'': নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
এদিকে সোমবার সংসদে নাগরিকত্ব বিল পাসের পর থেকেই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের উত্তর-পূর্ব অংশ। দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ সমাবেশ, মশাল মিছিল। ভাঙচুর চালানো হয় সরকারি সম্পত্তি এবং যানবাহনের ওপর। পুলিশি টহলদারি সত্ত্বেও কারর্ফু অমান্য করে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যেই পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন চারজন। রবিবার সকালে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে আরও দু'জনের। গুরুতর আহত অবস্থায় গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজে ভর্তি আছেন ২৭ জন। পাশাপাশি, হিংসা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। কলকাতা সহ একাধিক জেলায় ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে গত দু'দিন ধরে। অবরোধ হয়েছে বহু রাস্তা, রেলপথ। ভাঙচুর চালানো হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। নিরাপত্তার খাতিরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কলকাতার একাধিক অঞ্চলে।