Kirit Somiaya ২৭ বার বলেন, “ম্যায়নে আপকো জবাব দে দিয়া হ্যায়।”
মুম্বই: বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন বা CAA-র সমর্থনে স্কুলের মধ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Prime Minister Narendra Modi) এই আইনের জন্য ‘ধন্যবাদ' লিখে চিঠি পাঠাতে বলার কারণে মুম্বইয়ের একটি স্কুলকে নোটিশ পাঠাল মহারাষ্ট্র সরকার। শুক্রবার বিজেপি আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে মুম্বইয়ের মাতুঙ্গার দয়ানন্দ বালক বালিকা বিদ্যালয়ের (Dayanand Balak Balika Vidyalaya) শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে বলা হয়েছিল। সোমবার স্কুল পরিদর্শন করে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন BJP-র প্রাক্তন সাংসদ কিরীট সোমাইয়া (Former BJP MP Kirit Somaiya)। “সংসদে পাস হওয়া একটি আইন বিষয়ে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়াসের জন্য” বিদ্যালয়কে নোটিশ পাঠানো নিয়ে রাজ্যের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস সরকারের উদ্দেশে একটি ভিডিওতে মন্তব্যও করেন কিরীট।
নাগরিকত্ব আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ কেরালা
তবে, সারা দেশে বিক্ষোভ সৃষ্টিকারী নাগরিকত্ব আইনের বিষয়ে স্কুল পড়ুয়াদের রাজনীতিতে টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে NDTV-র করা প্রশ্নের জবাবে কিরীট সোমাইয়ার একটাই মাত্র প্রতিক্রিয়া ছিল: “ম্যায়নে আপকো জবাব দে দিয়া হ্যায়।”
"যদি কোনও ঐক্য না থাকে...": নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন
বিজেপি নেতা এই বাক্যটি ২৭ বার পুনরাবৃত্তি করেছেন।
তাকে একাধিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল:
* একটি স্কুলে সিএএ রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন কেন উত্থাপিত হচ্ছে, এবং বিজেপি নেতারাও এতে জড়িত রয়েছেন কেন?
* যেখানে অনেক প্রাপ্তবয়স্করা পর্যন্ত এখনও এই আইন বুঝতে পারেননি, সেখানে স্কুলের শিশুদের আইনের বিরোধিতাকারীদের ‘দেশদ্রোহী' বলতে শেখানোর কী অর্থ?
* কোনও স্কুলে এই জাতীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা কি ভুল নয়?
* আপনার কি মনে হয় ছোট বাচ্চাদের সিএএ সম্পর্কে জানানো এবং তাদেরকে সরকারকে পোস্টকার্ড লিখতে বলা উচিত?
* আপনার কাছে কি এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই?
* আপনি যদি আগেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিতেন তবে আমরা এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞাসা করতাম না।
* এতো ঠিক যেন একটা মেশিন জিজ্ঞাসা করার মতো। কিরীট সোমাইয়া স্কুলেই ছিলেন কিন্তু তিনি কিছুই বলছেন না।
প্রতিটি প্রশ্নেই সোমাইয়া একই প্রতিক্রিয়া দেন।
পড়ুয়াদের রাজনীতির সঙ্গে জোড়ার জন্য স্কুল প্রশাসনকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। শিক্ষা দফতর বিষয়টি জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে।
স্কুল প্রশাসনের একজন ট্রাস্টি বলেন; “এটি বিজেপির একটি অনুষ্ঠান যা স্কুলের মাঠে আয়োজিত হয়েছিল এবং আমরা অধ্যক্ষকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। স্কুল শেষ হওয়ার পরে কিছু পড়ুয়াও তার সঙ্গে এসেছিল। পড়ুয়ারা সিএএ সম্পর্কে আরও জানতে চেয়েছিল। কিছু পড়ুয়া প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিল এবং আমরা প্রত্যাখ্যান করতে পারিনি। অনুষ্ঠানটির সঙ্গে বিদ্যালয়ের কোনও যোগসূত্র নেই।”
ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে কলেজ পড়ুয়া, সমাজকর্মী ও বিরোধী দলগুলির দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যেই মুম্বাইয়ের স্কুলে এহেন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সরকার জানিয়েছে যে সিএএ ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ২০১৫ সালের আগে তিনটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ- পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সহজেই ভারতীয় নাগরিকত্ব দেবে। তবে সমালোচকদের আশঙ্কা সিএএ মুসলমানদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে এবং সংবিধানে বর্ণিত ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘন করছে।