লোকসভা ভোটের আবহে উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ চালু করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে সাধারণ অথচ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ে শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। এর ফলে চতুর্থ রাজ্য হিসবে, সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের ধার্য করা ৫০ শতাংশ সীমা অতিক্রম করল পশ্চিমবঙ্গ। তালিকায় রয়েছে, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা। ৬ মাস আগে, একই ধরণের সংরক্ষণ চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সংরক্ষণ চালু করার আগে পর্যন্ত সরকারি চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যে ৪৫ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল, তারমধ্যে তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের জন্য ২২ শতাংশ, তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য ৬ শতাংশ এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য ১৭ শতাংশ সংরক্ষিত ছিল।
ক্ষমতায় এসে প্রথমবার তপশিলি জাতি, উপজাতি বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী
সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সীমা ধার্য করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ ঘোষণার ফলে সেই সীমা পেরিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। সরকারি চাকরি ও শিক্ষার ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশ সংরক্ষণ করেছে মহারাষ্ট্র সরকার, তারমধ্যে সেরাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য রয়েছে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণার ফলে সর্বোচ্চ ৭৮ শতাংশ সংরক্ষণ করে সবচেয়ে বেশী হারে সংরক্ষণ করেছে মহারাষ্ট্র সরকার।
“কাটমানি” নিয়ে লোকসভায় তৃণমূল-লকেট চট্টোপাধ্যায় বাকযুদ্ধ
মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামী বিধানসভায় জানান, রাজ্যে চালু করা ৬৯ শতাংশ সংরক্ষণ চালু থাকবে, রাজনৈতিকদলগুলি ঐক্যমতে পৌঁছালে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিম শ্রেণীর জন্য ১২ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। সংরক্ষণ বিলে মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ ৪ শতাংশ থকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ, তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করায় সেরাজ্যে মোট সংরক্ষণের হার ৬২ শতাংশ।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর, রাজ্যের পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আবেদন করার যোগ্যতা পরে জানানো হবে, তবে যাঁরা ইতিমধ্যেই অন্য কোনও সংরক্ষণের আওতায় রয়েছেন, তাঁরা এই সংরক্ষণের বাইরে থাকবেন।তিনি বলেন, “এটা একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। আর্থিকভাবে পিছিয়ে শ্রেণীর বিভিন্ন সংজ্ঞা রয়েছে। সরকারি নির্দেশিকায় উল্লেখ করে, সেগুলি খুব দ্রুত প্রকাশ করা হবে”।
‘‘এবার রাজ্যে চলতে থাকা হিংসা বন্ধ হোক'': রাজ্যে শান্তির আবেদন নুসরত জাহানের
রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণীকল্যাণমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যাঁরা ইতিমধ্যেই সংরক্ষণের আওতায় রয়েছেন, এই নির্দেশিকার আওতায় তাঁদের গণ্য করা হবে না। তিনি বলেন, “তপশিলি জাতি, উপজাতি শ্রেণীর জন্য সংরক্ষণের হার একই রয়েছে। তিন শ্রেণীর সংরক্ষণের বাইরে থাকা মানুষদের জন্য এই সংরক্ষণের নির্দেশিকা”।
কংগ্রেস বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “এটা বহু বছরের লড়াইয়ের ফল। যদিও আমরা খুশি, তবে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত। একটা সহজ সরল পদ্ধতি চাই, যাতে একমাত্র সঠিক উপভোক্তাই এই পরিষেবা পান”।
বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, “আমার মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেরীতে ঘুম ভেঙেছে।কেন্দ্রে আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই এই সংরক্ষণ চালু করে দিয়েছে। এটা ভাল যে, কেন্দ্রের পদক্ষেপ অনুসরণ করছে রাজ্য। তবে উপভোক্তাদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত”।
৭ জানুয়ারি, সাধারণ অথচ আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। লোকসভা ভোটের আবহে উচ্চবর্ণের সংরক্ষণ চালু করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনডিএ মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)