This Article is From Jul 26, 2019

গণপিটুনিতে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুন প্রধানমন্ত্রী: চন্দ্র বসু

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখে গণপিটুনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহ সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।

এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে চন্দ্র বসু বলেন, তিনি নিজে ওই বিশিষ্টদের পাঠানো চিঠিটি পড়েছেন।

কলকাতা:

দেশে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনা রুখতে এমন কড়া আইন আনা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক যাতে এই ধরণের ঘটনা বন্ধ হয়, এবার প্রধানমন্ত্রীর মোদির কাছে এই আবেদন করলেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি তথা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। পাশাপাশি, গণপিটুনি সহ ধর্মীয় হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে যেভাবে দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখেছেন সে প্রসঙ্গেও মুখ খুলতে শোনা যায় ওই বিজেপি নেতাকে। এনডিটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে চন্দ্র বসু বলেন, তিনি নিজে ওই বিশিষ্টদের পাঠানো চিঠিটি পড়েছেন।

তিনি বলেন, ওই চিঠি পড়ে তাঁর মনে হয়নি যে কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চিঠিটি লিখেছেন অপর্ণা সেন সহ বিশিষ্টরা। চিঠিতে কোনও সরকারকে নির্দিষ্ট ভাবে দোষারোপ না করে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেই প্রধানমন্ত্রীকে পদক্ষেপ করার অনুরোধ করা হয়েছে বলেই মনে করেন চন্দ্র বসু। যদিও ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির ওই চিঠি প্রসঙ্গে এর আগে মুখ খুলতে শোনা যায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। তিনি বলেন,  “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যে সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা চিঠি লিখেছেন, তাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহী”। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “আসলে তাঁরা বিরোধীদের অনুগত হিসেবে কাজ করছে, যাতে বিজেপি সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা যায়”।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি লিখে দেশে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনা সহ সাম্প্রতিক ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহ সহ দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। এরপরেই ওই চিঠির জবাবে শুক্রবার ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব পাল্টা চিঠি লেখেন। এই খোলা চিঠিতে আগের চিঠির প্রেরকদের আক্রমণ করা হয় ‘‘নির্দিষ্ট ক্ষোভ, মিথ্যা বর্ণনা এবং পরিষ্কার রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব''-এর অভিযোগ তুলে।

এই নতুন চিঠিটি লিখেছেন সেন্সর বোর্ডের মুখ্য প্রসূন যোশী, বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত, চিত্র পরিচালক মধুর ভান্ডারকর, অভিনেতা বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং ধ্রুপদী নর্তক ও রাজ্যসভার সদস্য সোনাল মানসিং।

এই ৬১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির পাল্টা চিঠি প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি চন্দ্র বসু বলেন অকারণে এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে দেশে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনি সহ অসহিষ্ণুতার ঘটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। গণপিটুনির ঘটনাকে জাতীয় অপরাধ বলে বিবেচনা করা উচিত। এমনকি বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময়কালে তিনি নিজেও গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন এই ধরণের হত্যার ঘটনায় কড়া শাস্তি হওয়া উচিত। যাঁরা গণপিটুনির ঘটনায় যুক্ত হচ্ছেন তাঁদের ধারণা যে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে সহজেই পার পেয়ে যাবেন তাঁরা। কিন্তু যখনই গণপিটুনির ঘটনায় কড়া শাস্তির বিধান হবে তৎক্ষণাৎ উত্তেজিত জনতাও এমন ঘটনা ঘটানোর আগে দু'বার ভাববেন, আর এভাবেই বন্ধ করা সম্ভব হবে এই গণপিটুনির ঘটনা।

প্রধানমন্ত্রী মোদি যেভাবে সংসদে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় গণপিটুনির ঘটনার নিন্দা করেছেন সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাজ্য বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে এ ধরণের ঘটনা রুখতে তৎপর হোন। তিনি অনুরোধ করেন, প্রধানমন্ত্রী যেন তাঁর প্রশাসনকে এ ধরণের ঘটনা আটকাতে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।

তবে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি চন্দ্র বসু যেভাবে ৪৯ জন বিশিষ্টের লেখা চিঠির বয়ানকে সমর্থন করেছেন সে প্রসঙ্গে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা।

.