"ভারতীয় গণতন্ত্রে প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে", টুইট করেন Mamata Banerjee
হাইলাইটস
- জেএনইউয়ের হামলার ঘটনায় গর্জে উঠলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
- দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন বলেই মনে করেন তিনি
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন দিলীপ ঘোষ
কলকাতা/ গঙ্গাসাগর: দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উপর হামলা চালানো হয়েছে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই হামলাকে বিজেপির "ফ্যাসিবাদী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক" (Fascist Surgical Strike) বলে আখ্যা দেন তিনি। এই ঘটনা (JNU Row) নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর "কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন" বন্ধ করা উচিত, বিজেপির পক্ষ থেকে করা এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়াতেও পাল্টা আক্রমণ শানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)। ছাত্র নেতা হিসাবেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে এর আগে কখনও কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ জাতীয় হামলার ঘটনা দেখেননি তিনি। "দেশ জুড়ে যা ঘটছে তা খুবই উদ্বেগের... আমিও এক সময় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম, কিন্তু ছাত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের আক্রমণ আমি আগে কখনও দেখিনি ..., এটা গণতন্ত্রের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ ছিল। ছাত্র সম্প্রদায়ের উপর এই আক্রমণ আসলে একটি ফ্যাসিবাদী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল", গঙ্গাসাগর সফরে যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ কথাই বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেএনইউ হামলায় প্রকাশিত ছবি, এবিভিপির জড়িত থাকার ইঙ্গিত
তিনি আরও দাবি করেন যে, বিজেপির বিরুদ্ধে যে বা যাঁরাই সোচ্চার হয়েছেন তাঁদেরই "দেশ-বিরোধী" বা একজন পাকিস্তানি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
"ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং এখানে আমাদের প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। কিন্তু যে ওঁদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাঁকেই দেশ-বিরোধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একটি গণতন্ত্রে কীভাবে কাউকে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে দেশ-বিরোধী বা পাকিস্তানি বলে চিহ্নিত করা হতে পারে?", প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল নেত্রী।
তিনি বলেন, দিল্লি পুলিশের নিয়ন্ত্রণ সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হাতে নেই তা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, "একদিকে ওঁরা (বিজেপি) গুণ্ডা পাঠাচ্ছে এবং অন্যদিকে পুলিশকে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার কথা বলে রাখছে। পুলিশের উপর ওপরতলা থেকে চাপ এলে তাঁরাই বা কী করতে পারে?"
"দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন, প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা বিপন্ন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিপন্ন", সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়ে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল নেত্রী আরও অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার জেএনইউতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি সমবেদনা জানাতে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেও তাঁদের ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
"জেএনইউতে কোনও টুকরে টুকরে গ্যাং দেখিনি", বললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
"তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলকে ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রতিনিধি দলকে ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হল কিনা তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে এই ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, ওঁরা (বিজেপি) সত্য প্রকাশ হোক তা চায় না, তাই আমাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে আমরা ছাত্রদের সঙ্গেই রয়েছি", বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, জেএনইউর শিক্ষার্থীদের জন্য "কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন" বন্ধ করা উচিত তৃণমূল নেত্রীর।
"গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর যখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্থা করা হয় তখন উনি কোথায় ছিলেন? কিছু রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই জেএনইউয়ে উনি একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন। গত আট বছর ধরে যে কলেজগুলিতে তৃণমূলের ছাত্রনেতারা ভাঙচুর করেছে, সেখানে কেন উনি একটিও প্রতিনিধি দল পাঠাননি?", কটাক্ষ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন দিলীপ ঘোষ।