West Bengal: "করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঢিলে দেবেন না", মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন রাজ্যপাল (ফাইল চিত্র)
হাইলাইটস
- মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানালেন রাজ্যপাল
- "বিরোধী দলগুলোকে অযথা ছোট করবেন না", একথাও বলেন জগদীপ ধনখড়
- "করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াইয়ে কোনও ঢিলেমি নয়", বলেন রাজ্যপাল
কলকাতা: ফের একবার পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) সমালোচনার তিরে বিদ্ধ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। রাজ্যের প্রকৃত করোনা পরিস্থিতি (Coronavirus) প্রকাশ্যে আসতে দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সরাসরি এবার এই অভিযোগ করলেন রাজ্যপাল। পশ্চিমবঙ্গের করোনা আক্রান্তের প্রকৃত পরিসংখ্যান প্রকাশ করুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, টুইটে লিখলেন একথাও। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শনিবার টুইট করেন,"@MamataOfficial রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির তথ্য লুকিয়ে রাখবেন না, দয়া করে প্রকৃত তথ্য সামনে আনুন।" তিনি এই বিষয়টিও উল্লেখ করেন যে, ৩০ এপ্রিলের পর আর নতুন করে কোনও মেডিকেল বুলেটিনই প্রকাশ করেনি রাজ্য সরকার। ওই বুলেটিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেখানো হয়েছিল ৫৭২, তারপর আর সেই পরিসংখ্যানে কোনও আপডেট করা হয়নি।
পাশাপাশি রাজ্যপাল এই কথাও বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন "তিনি নিজেই রাজ্যের সমার্থক"। গোটা বিশ্বের মতো এই দেশ তথা রাজ্যও যখন করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মহামারীর সঙ্গে যুঝছে, ঠিক সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীকে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানালেন রাজ্যপাল। সংবাদসংস্থা এএনআইকে জগদীপ ধনখড় বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকেই একটি রাজ্য বলে ভাবেন I তিনি মনে করেন একটি দেশের মধ্যে থেকে কোনও রাজ্য নয়, আসলে একটি দেশ চালাচ্ছেন তিনি। আমি তাঁকে রাজনৈতিক চশমার মধ্যে দিয়ে সব কিছু না দেখার অনুরোধ করছি। কারণ এরকম করলে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও ইতিবাচক ফলাফল এ রাজ্যে আসবে না। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি রাজনীতি ছেড়ে বেরিয়ে আসুন"।
রেশন নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি ঝামেলা, রানাঘাটে বিক্ষোভ, অশান্তি জলপাইগুড়িতেও
বামপন্থীরা সহ প্রায় সমস্ত বিরোধী দলগুলি করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় একজোট হয়ে লড়াই করছে এই কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনে করিয়ে দিয়ে রাজ্যপাল আরও বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এমন কঠিন সময়ে কীভাবে বলতে পারেন যে বিরোধীদের আচরণ মৃতদেহের অপেক্ষায় থাকা শকুনের মতো?''
"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত তাঁর এই মন্তব্যের জন্যে ক্ষমা চাওয়া এবং নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার করা", একথাও বলেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালরা যেরকম মিলেমিশে করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করছেন সেই উদাহরণ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর সঙ্গেও মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানান জগদীপ ধনখড়।
লকডাউনের তৃতীয় পর্বে কী করা যাবে, কী করা যাবে না
"আমি অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অবিচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ রাখতে পারছি অথচ এখনও পর্যন্ত আমি এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর দলের কোনও সদস্যের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি", ক্ষোভের স্বরে বলেন রাজ্যপাল। ধনখড় আরও বলেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ থাকে তবে তা তাঁকে জানালে তিনি নিজে সেগুলো কেন্দ্রের কাছ পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন।
রাজ্যপাল রাজভবনের প্রতি নজরদারির জন্যে রাজ্যের আইপিএস এবং আইএএস অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেন। জগদীপ ধনখড় বলেন, "আইপিএস এবং আইএএস আধিকারিকদের দিয়ে রাজভবনের উপর নজরদারি করানো অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে দয়া করে এমন কিছু করবেন না যার জন্যে আপনাকে এবং আপনার দলের কর্মীদের সবার বিরুদ্ধে যেতে হয়"। "করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঢিলে দেবেন না", মুখ্যমন্ত্রীকে এই অনুরোধও করেন রাজ্যপাল।